০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`


দেড় হাজার হেক্টর জমিতে ধান উৎপাদন থেকে বঞ্চিত কৃষকরা

কেশবপুরে জলাবদ্ধতা
-

যশোরের কেশবপুর উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। তবে মৎস্য ঘেরের সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় এক হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ না হওয়ায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০ হাজার ৭২৫ টন ধান কম উৎপাদন হবে বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে। ফলন না হওয়া ধানের বাজার মূল্য ২ কোটি ৭৮ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।
সারা দেশের মধ্যে ধান-চালসহ বিভিন্ন খাদ্যশস্য উৎপাদনের উদ্বৃত্ত উপজেলা হিসেবে কেশবপুর উপজেলার পরিচিতি দীর্ঘদিনের। ধানক্ষেতের মাঠগুলো এখন সোনালী রঙের আভায় এক অপরূপ সাজে সেজেছে। সেচ, আগাছা পরিষ্কারসহ সকল কাজ সম্পন্ন করে এখন ধান ঘরে তোলার স্বপ্নে বিভোর এ উপজেলার হাজারো কৃষক।
কৃষি অফিস জানায়, চলতি বোরো মৌসুমে এ উপজেলায় ১৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। ধানের উৎপাদন ধরা হয়েছিল এক লাখ এক হাজার ৩০৭ টন। কিন্তু ঘেরের জলাবদ্ধতায় অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এক হাজার ৪৩০ হেক্টর কম জমিতে ধানের চাষ হয়। এর মধ্যে হাইব্রিড-৪ হাজার ১৭০ হেক্টর ও উফশী আট হাজার ৯০০ হেক্টর জমি। ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ায় এবার ১০ হাজার ৭২৫ টন ধান কম উৎপাদন হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। যার বাজারমূল্য দুই কোটি ৭৮ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। ঘেরের পানি নিষ্কাশন সম্ভব না হওয়ায় উপজেলার বাগডাঙ্গা, পাঁজিয়া, কালিচরণপুর, বিলখুকশিয়া, কাটাখালি, মনোহরনগর, নারায়ণপুর, হদ, তেঘরি, পর্চক্রা ও বাউশলা বিল এলাকার হাজারো কৃষক এ বছর বোরো ধানের আবাদ করতে পারেনি। ব্যাসডাঙ্গা গ্রামের কৃষক রেজাউল ইসলাম ও মাগুরাডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল মজিদ জানান, তাদের গরালিয়া বিলের জমি ঘের মালিক সেলিমুজ্জামান আসাদের কাছে লিজ দেয়া হয়েছে। ঘের মালিক মাছ চাষের জন্য প্রতি শুষ্ক মৌসুমে ভূগর্ভস্থ পানি তুলে ঘের ভরাট করে। আবার ইরি বোরো মৌসুমে শ্যালো মেশিন দিয়ে ঘেরের পানি নিষ্কাশন করলে কৃষকরা ধান আবাদ করে। তেঘরী গ্রামের মাওলানা মছিউর রহমান জানান তাদের এলাকার বিলে ধান চাষ করতে না পারার জন্য ঘের মালিকরাই দায়ী।
উপজেলা কৃষি অফিসার মাহমুদা আক্তার বলেন, পাউবো নদী খাল খনন করলেও শ্রীনদীর নাব্যতা না থাকায় তা আবারো পলীতে ভরাট হয়ে গেছে। যে কারণে ঘেরের পানি নিষ্কাশন সম্ভব না হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এক হাজার ৪৩০ হেক্টর কম জমিতে ধানের আবাদ হয়। কৃষকের চাহিদামতো সার, বীজের কোনো ঘাটতি ছিল না, আবহাওয়াও ছিল অনুকূলে। ইতোমধ্যে উপজেলার অনেক এলাকায় ধান কাটা শুরু হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এবার ধানের বাম্পার ফলন হবে বলে কৃষকরা আশা করছেন।


আরো সংবাদ



premium cement