০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`


আত্রাইয়ে পলো উৎসব

আত্রাই নদীতে পলো দিয়ে মাছ ধরছেন সৌখিন শিকারীরা : নয়া দিগন্ত -

নাটোরের গুরুদাসপুরে গ্রামীণ ঐতিহ্য পলো দিয়ে মাছ ধরার উৎসব ঠিকই আছে; কিন্তু মাছ নেই। অতীতে দেখা গেছে পলো উৎসবে ধরা পড়ত বড় বড় শোল, বোয়াল, আইড়, বাঘারসহ নানা প্রজাতির মাছ। কিন্তু কালের বিবর্তনে বৈরী আবহাওয়ায় বন্যার অভাব, জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ, মাছের অভয়াশ্রম না থাকা ও চায়না জালের ব্যবহারসহ আধুনিক প্রযুক্তিতে মা মাছ নিধনের ফলে হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় সব মাছ। ফলে পলো উৎসবে চলছে মাছের খরা।
গত শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার খুবজীপুর ইউনিয়নের যোগেন্দ্রনগর ত্রিমোহনায় আত্রাই নদী থেকে কালাকান্দর মহাশ্মশান পর্যন্ত চলে এ উৎসব। এতে উপজেলার দুই শতাধিক মাছ শিকারি অংশ নেন। এ সময় নদীর দুই তীরে উৎসুক জনতার ভিড় দেখা গেলেও দেখা মেলেনি বড় কোনো মাছ।
প্রতি বছর চলনবিলে ইরি আবাদে পানির প্রবাহ ঠিক রাখতে উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের যোগেন্দ্রনগর-দুর্গাপুর পয়েন্টে আত্রাই নদীতে রাবার ড্রাম দিয়ে পানি আটকানো হয়। বাঁধের কারণে ভাটিতে পানি কমে যাওয়ায় পরদিন শুরু হয় পলোসহ সব উপকরণ দিয়ে মাছ শিকারের উৎসব।
উৎসবে অংশ নিতে আসা কাছিকাটা রানীগ্রামের বুলবুল আহম্মেদ বলেন, শীত উপো করে পলো দিয়ে মাছ ধরায় অন্য রকম এক অনুভূতি কাজ করে। শখের বশেই বড়দের সাথে মাছ ধরার উৎসবে যোগ দিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত মাছের দেখা মেলেনি।
সাংবাদিক নাজমুল হাসান নাহিদ জানান, পলোয় মাছ ধরা উৎসব গ্রামীণ ইতিহাস ঐতিহ্যের অংশ। বর্তমানে নদী, খাল ও বিলের সংখ্যা কমে যাওয়ায় মাছও কমে গেছে। এ ছাড়া নদী খননের নামে প্রভাবশালীরা নদীর মধ্যে গর্ত করে সেখানে গাছের ডালপালা দিয়ে ঘিরে রাখায় পলো উৎসবে আশানুরূপ মাছ পাওয়া যাচ্ছে না।
খুবজীপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম দোলন জানান, এ অঞ্চলের মানুষ দীর্ঘ দিন ধরেই নদী বিলে ‘পলো বাওয়া উৎসব’ পালন করে আসছে। মাছ না পেলেও নতুন প্রজন্ম এ উৎসবের আনন্দ উপভোগ করে।


আরো সংবাদ



premium cement