ভালুকার বন থেকে প্রতিদিন শত ট্রাক কাঠ পাচার
বনবিভাগের চেকপোস্টের কাজ নিয়ে প্রশ্ন- আসাদুজ্জামানভালুকা (ময়মনসিংহ)
- ০৫ ডিসেম্বর ২০২২, ০০:০০
ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার দু’টি রেঞ্জের সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে রাতের আঁধারে গাছ কেটে ট্রাকে ভরে প্রতিদিন পাচার করা হচ্ছে মিল-ফ্যাক্টরি ও বৈধ-অবৈধ ইটভাটায়। আর মহাসড়কে এত চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করলেও সঙ্ঘবদ্ধ কাঠ পাচারকারীদের ধরতে পারছে না বন বিভাগের লোকজন।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে ও কাঠ বোঝাই গাড়ির লোকজনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বিভিন্ন গজারীবন, টাঈাইলের মধুপুর, ঘাটাইল ও সখিপুর বনাঞ্চল, ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ি এলাকার ১১ গড় নামের বিশাল গজারি বাগান ও কাদিগড় জাতীয় উদ্যানসহ বেশ কিছু ঐতিহ্যবাহী বনের মূল্যবান গাছ কেটে কেটে সবার করছে সঙ্ঘবদ্ধ পাচারকারীরা। এসব গাছ স্থানীয় শতাধিক অবৈধ করাতকলে টুকরা করে ট্রাকবোঝাইয়ের পর প্রকাশ্যে ও রাতের আঁধারে ভালুকার ওপর দিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে বিভিন্ন মিল ফ্যাক্টরি ও ইটভাটায় সরবরাহ করা হচ্ছে। স্থানীয় বনবিভাগকে ম্যানেজ করে এই অপকর্ম চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে। জানা যায়, ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ি রেঞ্জ অফিসের সামনে, আখালিয়া, মল্লিকবাড়ি, উথুরা ও ভরাডোবা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে বনবিভাগের অসাধু ব্যক্তিরা কাঠবোঝাই ট্রাক ও লরিগুলো থামিয়ে তল্লাশির নামে বিভিন্ন অঙ্কের চাঁদা আদায় করছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, ত্রিশালের দুই-একটি কারখানা ও দুই উপজেলার অর্ধশতাধিক বৈধ অবৈধ ইটভাটায় প্রতিদিন শতাধিক ট্রাক ও লরি বোঝাই লাকড়ি সরবরাহ করা হচ্ছে। আর এসব ট্রাক ও লরি থেকে বনবিভাগের লোকজন ভরাডোবাসহ বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদা আদায় করে থাকে। আর অনবরত বৃক্ষ নিধনের ফলে পশুপাখির আবাসস্থল নষ্ট হয়ে ক্রমেই এসব অঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংসের পথে চলে যাচ্ছে।
সম্প্রতি সরেজমিন ভরাডোবা বাসস্ট্যান্ডের উত্তর পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি কাঠ বোঝাই ট্রাকের সামান্য দূরে ভালুকা রেঞ্জের বনকর্মীদের উপস্থিতি দেখা যায়। কাঠ বোঝাই ট্রাকের চালক জানান, তিনি গাজীপুরের কাপাসিয়া থেকে ৪০০ মণ কাঠ নিয়ে ত্রিশালে যাচ্ছিলেন। ওই স্থানে বনের লোকজন সঙ্কেত দিয়ে তাকে থামিয়েছেন এবং তার কাছে চার হাজার টাকা দাবি করেছেন। বিষয়টি বোঝার জন্য একটু আড়ালে সরে গিয়ে দেখা যায়, ভালুকা রেঞ্জে কর্মরত মোস্তাফিজ, কুদরতই খোদা ও গিয়াসউদ্দিন ট্রাক চালকের সাথে দফারফা করার পর ট্রাকটিকে ছেড়ে দেয়। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই সম পরিমাণ কাঠভর্তি আরো একটি ট্রাক থামানো হয়। চালকের সাথে কথা বলে জানা যায়, পাশের টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলার দেবরাজ এলাকা থেকে কাঠ নিয়ে ত্রিশাল যাওয়ার পথে বনরক্ষীরা ট্রাকটি থামিয়েছেন। পরে তাদের দাবিকৃত অনৈতিক সুবিধা দিয়ে ট্রাকটি বের করতে হয়েছে।
এ ব্যাপারে ভালুকা রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোহাম্মদ রইচ উদ্দিন জানান, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ভালুকা উপজেলার যেকোনো স্থানে গাছ বা লাকড়ি বোঝাই ট্রাক আটকানোর ক্ষমতা রাখে স্থানীয় বনবিভাগ। এক প্রশ্নে তিনি বলেন, অনেক খরচ, তাই দুই-একটি গাড়ি থেকে কালেকশন করা হয়ে থাকে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা