০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫
`


বিষমুক্ত শুঁটকি রফতানিতে চমক তালতলীর জেলেদের

রোদে মাছ শুকিয়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে বিষমুক্ত শুঁটকি : নয়া দিগন্ত -

বরগুনার তালতলী উপজেলার পাঁচটি চড়ে বিষমুক্ত শুঁটকি উৎপাদন করে লাভবান হচ্ছেন ব্যবসায়ী ও জেলেরা। এ অঞ্চলের আশারচর, সোনাকাটা, মরানিদ্রা, ছোট আমখোলা, বড় আমখোলা ও নিশানবাড়িয়া খেয়াাঘাটের চরে প্রতি বছর তিন-চার হাজার মণ শুঁটকি উৎপাদন হয়ে থাকে। এই শুঁটকি দেশের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বাইরেও রফতানি হচ্ছে। এ অঞ্চলের মানুষ বিষমুক্ত শুঁটকি রফতানি করে রীতিমতো চমক সৃষ্টি করেছেন।
জানা যায়, তালতলীর শুঁটকি সম্পূর্ণ বিষমুক্ত ও স্বাস্থ্যসম্মত। এখানকার শুঁটকি খেতে সুস্বাদু ও মজাদার হওয়ায় দেশে ও দেশের বাইরে বিশেষ করে প্রতিবেশী ভারতে এই শুঁটকির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বরগুনা জেলার উল্লেখিত উপকূলীয় অঞ্চলটিতে এখন শুঁটকি উৎপাদনের ভরা মৌসুম চলছে। শুঁটকি পল্লীতে নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ছয় মাস ধরে চলে শুঁটকি উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাত করণের কাজ। হাজার হাজার শ্রমিক এ কাজে নিয়োজিত থাকেন। তাদের সাথে জীবন-জীবিকায় জড়িয়ে রয়েছে আরো লাখ লাখ মানুষের। নভেম্বরের এই সময়টাতে শুঁটকি পল্লীতে সারক্ষণ সরব থাকে ক্রেতা, বিক্রেতা ও শ্রমিকরা। প্রতিটি শুঁটকি পল্লি থেকে সপ্তাহে দেড়মনেরও বেশি শুঁটকি বিক্রি হয় বলে জানা গেছে।
বঙ্গোপসাগর থেকে কাঁচামাছ ধরে শুঁটকি পল্লীতে নিয়ে আসার পর নারী এবং পুরুষ শ্রমিকরা সেগুলো পরিষ্কার করেন। এরপর মাছগুলো পরিষ্কার লবণ-পানিতে ধুয়ে মাচায় এবং মাটিতে বিছানো পাটিতে বিছিয়ে রেখে শুকানো হয়। ছয়-সাত দিনের রোদে মাছগুলো শুকিয়ে শক্ত হয়ে যায়। প্রস্তত থাকে ক্রেতা, পাইকার ও ব্যবসায়ীরা। এই চরের শুঁটকি ঢাকা, চট্টগ্রাম, সৈয়দপুর, খুলনা ও জামালপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চালান হয়। শুঁটকি প্রস্তুত করার সময় কোনো প্রকার কীটনাশক বা অতিরিক্ত লবণ দেয়া হয় না বলে এই এলাকার শুঁটকির চাহিদা ক্রেতাদের নিকট খুব বেশি।
জানা গেছে, বর্তমানে প্রতি কেজি ছুরিমাছের শুঁটকি ৭০০-৮০০ টাকা, রূপচাঁদার শুঁটকি এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা, মাইট্যা মাছের শুঁটকি ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা, লইট্যার শুঁটকি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, চিংড়ির শুঁটকি ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা এবং অন্যান্য ছোট মাছের শুঁটকি ৩০০ থেকে ৫৫০ টাকায় বিক্রি হয়।
আশারচর শুঁটকিপল্লীতে সরেজমিন দেখা যায়, শত শত শ্রমিক এখানে কাজ করছেন। সাগর থেকে একের পর এক ট্রলার এসে কিনারে ভিড়ছে। ট্রলার নোঙর করামাত্র শ্রমিকরা ট্রলারের খোল থেকে মাছ তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। মাটিতে মাছ ফেলামাত্র কেউবা মাছ ধুয়ে পরিষ্কার করছেন, কেউবা বড়মাছ ফালি করছেন। কেউবা আবার পরিষ্কার করা মাছ মাচা কিংবা পাটিতে বিছিয়ে শুকানোর কাজ করছেন। দম ফালানোর সময়ও যেন নেই তাদের।
তালতলীর শুঁটকি পল্লীর জেলে আব্দুর রহমান জানান, ২৫ প্রজাতির মাছের শুঁটকি তৈরি হয় এখানে। এসব শুঁটকির মধ্যে রয়েছে রূপচাঁদা, ছুরি, কোরাল, সুরমা, লইট্টা, বেরাগী, ফাইসা, তপসী, বাইন ও ছোট পোয়ামাছের শুঁটকি। এ ছাড়া চিংড়ি, ভোল, মেদসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের শুঁটকিও উৎপন্ন হয় এখানে। খবির উদ্দিন নামে আরেক জেলে জানান, তালতলীর আশার চর, সোনাকাটা, মরানিদ্রা, ছোট আম খোলা, বড় আম খোলা ও নিশানবাড়িয়ার চরে সম্পূর্ণ বিষমুক্ত শুঁটকি উৎপাদন করা হয়।
শুঁটকি ব্যবসায়ী রুপচাঁন হাওলাদার জানান, তালতলীর বিষমুক্ত শুঁটকির চাহিদা খুব বেশি। এখানকার শুঁটকি ঢাকা, চট্টগ্রাম, সৈয়দপুর, খুলনা ও জামালপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চালান করি। তিনি আরো জানান, এখানকার শুঁটকি স্থানীয়দের মাধ্যমে ভারতেও যাচ্ছে। সেখানে এই শুঁটকির প্রচুর চাহিদা।
বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, বরগুনার পাঁচটি চরে উৎপাদিত শুঁটকি স্বাস্থ্যসম্মত এবং বিষমুক্ত। তাই দেশ এবং দেশের বাইরে বিশেষ করে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, কাতার, বাহরাইন ও দুবাইতে এ অঞ্চলের শুঁটকির চাহিদা অনেক বেশি। তবে শুঁটকি রফতানিতে আরো সহজীকরণ ও সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে। এতে দেশ ও এ অঞ্চলের জেলেরা লাভবান হবেন।


আরো সংবাদ



premium cement
বাংলাদেশ-সৌদি আরবের যৌথ উদ্যোগে ইউরিয়া সার কারখানার সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পন্ন আগামী ২ বছর উন্নয়নশীল এশীয় অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ৪.৯ শতাংশ থাকার আশা এডিবি প্রেসিডেন্টের চুয়াডাঙ্গায় আগুনে পুড়ে পানবরজ ছাই মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ, রিমান্ডে নেয়া হবে : ডিবি বৃহস্পতিবার সারা দেশের স্কুল-কলেজ বন্ধ ভূরুঙ্গামারীতে চিকিৎসকের কপাল ফাটিয়ে দিলেন ইউপি সদস্য ‘পঞ্চপল্লীর ঘটনা পাশবিক, এমন যেন আর না ঘটে’ টি২০ বিশ্বকাপের পিচ পৌঁছেছে নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামে হাসপাতালে ভর্তি খালেদা জিয়া কমলাপুর স্টেশনে ট্রেন থেকে লাশ উদ্ধার মোরেলগঞ্জে বৃদ্ধের ফাঁস লাগানো লাশ উদ্ধার

সকল