০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`


১৭ কোটি টাকার কাজের এক সপ্তাহ পরই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং

ঝিনাইদহ সওজের সংস্কার কাজের নমুনা
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ-চুয়াডাঙ্গা সড়কের কাজ শেষ হওয়া মাত্র ঈশ্বরবা নামক ্রস্থানে পিচ খোয়া উঠে গেছে : নয়া দিগন্ত -

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ-জীবননগর (ভায়া খালিশপুর) সড়কে প্রায় সাড়ে ১৭ কোটি টাকার উন্নয়নকাজ শেষ হয়েছে মাত্র এক সপ্তাহ আগে। ইতোমধ্যে সড়কটির অনেক স্থানের পিচ উঠে ভাঙাচোরা বেরিয়ে গেছে। সংস্কার করা অংশ আবার মেরামত করে দেয়া হচ্ছে। উন্নতমানের পিচ ও পাথর দিয়ে কার্পেটিং করা হয়েছে বলে সড়ক বিভাগ সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র মতে, গত ১০ সেপ্টেম্বর কাজ শেষ করে ঠিকাদার যন্ত্রপাতি ও মালামাল ফেরত নিয়ে গেছেন। চার দিন পর থেকেই সড়কটি বেহাল হতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু স্থানে পিচ-পাথর উঠে গেছে। ঠিকাদার জানিয়েছেন, দ্রুত সড়কটি আবার মেরামত করে দেবেন। কালীগঞ্জ শহরের মেইন বাসস্ট্যান্ড থেকে চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝিনাইদহ অংশে ১৫ কিলোমিটার এবং চুয়াডাঙ্গা অংশে ১০ কিলোমিটার ওয়্যারিং কোর্স (অভারলে) করার সিদ্ধান্ত নেয় সড়ক বিভাগ। সড়কে ৪০ মিলিমিটার কার্পেটিং করার কথা। পাশাপাশি সড়কে রঙের কাজ, পাশে পিলার স্থাপন ও মাটির কাজ রয়েছে। এই কাজে ১৭ কোটি ৩০ লাখ ৩২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। কাজটি পায় মেহেরপুরের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স জহিরুল লিমিটেড। তবে কাজ করেন চুয়াডাঙ্গার রনজু আহম্মেদ। তিনি দাবি করেন, জহিরুল ইসলামের লাইসেন্স তিনি ব্যবহার করছেন। গত আগস্ট মাসের শেষ দিকে ঝিনাইদহ অংশের কার্পেটিং কাজ শুরু হয়। পেভার মেশিন দিয়ে কাজ গত ১০ সেপ্টেম্বর শেষ হয়। এখনো পাশের মাটির কাজ, পিলার বসানো ও রঙের কাজ বাকি রয়েছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সড়কের অনেক স্থানে কার্পেটিং ফেটে গেছে। কাশিপুর, ঈশ্বরবা, পাতিবিলা এলাকার অনেক স্থানে পিচ-পাথর উঠে গেছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, পায়ের আঙুল দিয়ে ঘষা দিলেই পাথর উঠে যাচ্ছে। মানসম্পন্ন পিচ দেয়া হয়নি। তা ছাড়া ভালোভাবে কাজটি হয়নি বলে এই দশা। ফলে কাজ শেষ হতে না হতেই পিচ-পাথর উঠে যাচ্ছে। স্থানগুলো এখন মেরামত করলেও সেটা হবে জোড়াতালি।
এ বিষয়ে ঠিকাদার রনজু আহম্মেদ বলেন, কাজটি তিনি ভালোভাবে করেছেন। কিন্তু পেভার মেশিনের কাজ হওয়ায় কয়েকটি স্থানে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। ত্রুটি হয়ে যাওয়া স্থানগুলোতে পেভার মেশিনের তেল পড়েছিল। তেল পড়া জায়গায় পিচ ধরেনি, এ কারণে উঠে যাচ্ছে। এক-দুই দিনের মধ্যে এটি মেরামত করা হবে। সড়কটি তিন বছর ঠিকাদারের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এ সময়ের মধ্যে নষ্ট হলেই তিনি মেরামত করে দেবেন বলেও তিনি জানান।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডি) মুকুল জ্যোতি বসু বলেন, সড়কের কয়েকটি স্থানে সমস্যা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে ঠিকাদারকে জানানো হয়েছে। তিনি মেরামত করবেন বলে জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগের তত্ত্বাবধানে নির্মিত রাস্তাগুলো খুবই দুর্বল ও নি¤œমানের মালামাল দিয়ে করা হয় এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। এতে প্রতি বছর সরকারের কোটি কোটি টাকা গচ্চা যাচ্ছে বলে অনেকে মত প্রকাশ করেছেন। এ নিয়ে প্রায়ই সংবাদ শিরোনাম হয় ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগ। কিন্তু কোনো উন্নতি নেই।


আরো সংবাদ



premium cement