৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


সন্ত্রাসীদের আস্তানা জঙ্গল ছলিমপুর হয়ে উঠছে আইকনিক শহর

জঙ্গল ছলিমপুরে গড়ে উঠছে নানা নান্দনিক স্থাপনা : নয়া দিগন্ত -

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের দুর্গম এলাকা জঙ্গল ছলিমপুর হয়ে উঠছে আইকনিক শহর। পাহাড় কেটে লিঙ্ক রোড তৈরির পর এবার সেখানে সরকারি মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। প্রাকৃতিক পাহাড়ের অবকাঠামো ঠিক রেখে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এখানে গড়ে তোলা হবে হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল, আইকনিক মসজিদ, স্থানান্তর করা হবে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার। এ ছাড়াও দৃষ্টিনন্দন ইকোপার্ক, আর্মি স্টেডিয়াম, বেতার ভবন, জাতীয় তথ্য কেন্দ্র্র ও নভোথিয়েটারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নির্মিত হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সার্বিক সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে সেনাবাহিনীর। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা জঙ্গল ছলিমপুর পরিদর্শনে এসে এমনটাই জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, নগরীর বায়েজিদ, হাটহাজারী ও সীতাকুণ্ড-এই ত্রিসীমানার মধ্যে পাহাড়ি দুর্গম এলাকা জঙ্গল ছলিমপুর। তিন দশক ধরে এটি ছিল সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য। দুর্গমতার কারণে যাতায়াত সুবিধা না থাকার সুবাদে এ জায়গাটিকে সন্ত্রাসীরা নিজেদের লুকিয়ে রাখার নিরাপদ স্থান হিসেবে বিবেচনা করত। সারা দেশে জঙ্গল ছলিমপুর ছিল এক আতঙ্কের নাম। সম্প্রতি সরকার প্রায় তিন হাজার একর দৃষ্টিনন্দন পাহাড়কে নিয়ে মহাপরিকল্পনা হাতে নেয়। এর মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে পাহাড় কেটে ফৌজদারহাট-বায়েজিদ লিঙ্ক রোড তৈরি করা হয়। এ লিঙ্ক রোড তৈরির পর থেকে দৃশ্যপট পাল্টাতে শুরু করে। প্রশাসনের বিভিন্ন সংস্থা একের পর এক অভিযান চালিয়ে এখানে নেতৃত্বে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসীদের আটক করা শুরু করে। এর মধ্যে বেশ কয়েক দফা অভিযান চালিয়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে পাহাড়গুলোকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে নেয়া শুরু করে।
সরকারি এ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সম্প্রতি ওই এলাকা পরিদর্শনে আসেন জেলা প্রশাসক, স্থানীয় সরকার বিভাগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপ-পরিচালক (রাজস্ব), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও পরিবেশ অধিদফতরের কর্মকর্তারা।
এ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্র তৈরি ও বাস্তবায়নে এর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে গত ২৫ জুলাই এ এলাকা পরিদর্শনে আসেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। এ সময় তিনি বলেন,পরিবেশ সমুন্নত রেখে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের জন্য জঙ্গল ছলিমপুর একটি আদর্শ জায়গা। এখানে পাঁচটি মৌজার সরকারি মোট খাস জমির পরিমাণ হলো দুই হাজার ৮০০ একর। এখানকার প্রকৃত ভূমিহীনদের অন্যত্র পুনর্বাসন করে এখানে গড়ে তোলা হবে হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল, আইকনিক মসজিদ, স্থানান্তর করা হবে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার। এ ছাড়াও দৃষ্টিনন্দন ইকোপার্ক, আর্মি স্ট্যাডিয়াম, বেতার ভবন, জাতীয় তথ্য কেন্দ্র ও নভোথিয়েটারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।
এ ছাড়াও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সম্প্রতি জঙ্গল ছলিমপুর পরিদর্শনে এসে বলেন, এ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে কারিগরি সার্বিক সহযোগিতা ও তা বাস্তবায়নে আমি সেনাপ্রধান এস এম শফিউদ্দিন আহম্মেদের সাথে কথা বলেছি। তিনি একটি আর্মি স্টেডিয়াম নির্মাণসহ সার্বিক কাজে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
সীতাকুণ্ডের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশরাফুল আলম বলেন, আগে এলাকাটি ছিল পুরোপুরি পাহাড় ঘেরা দুর্গম। বায়েজিদ লিংক রোড হওয়ার পর এটি চট্টগ্রাম মহানগরীর খুব কাছের হয়ে গেছে। এখন সরকার চায় এখানে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে। তারপর সেখানে জনকল্যাণমূলক ও গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের মহাপরিকল্পনাও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement