০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`


চুয়াডাঙ্গায় ৩ ফসলের আবাদে ভাগ্য বদল

-

২০০৩ সালে পরিবারের ওপর অভিমান করে বাড়ি ছাড়েন দোয়াল্লিন মোল্লা। এরপর থেকে নিজের দেড় বিঘা জমিতে চাষাবাদ শুরু করেন। আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া লাগিয়ে একই জমিতে তিন ফসলের আবাদ করে বদলে যায় তার ভাগ্য। জমিতে আগাছা দমন ও আর্দ্রতা ধরে রাখতে ব্যবহার করেন মালচিং পেপার। কলার মোচাতে ব্যবহার করেন ব্যাগিং প্রযুক্তি। তার ক্ষেতে রয়েছে পোকা দমনে ফেরোমন ফাঁদ। প্রশিক্ষিত আধুনিক কৃষক হিসেবে ইতোমধ্যেই তিনি এলাকায় ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছেন।
জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ হাটখোলা বাজারের আনোয়ার হোসেন মোল্লার ছেলে দোয়াল্লিন মোল্লা। কৃষি পরিবারের সন্তান হওয়ার কারণে ছোটবেলা থেকেই বাবার সাথে কৃষিকাজে যুক্ত ছিলেন তিনি। ২০০৩ সালে পরিবার থেকে তিনি পৃথক হয়ে যান। পৈতৃক সূত্রে পাওয়া দেড় বিঘা জমি তার ভাগে পড়ে। সেই জমিতে চাষ করা দিয়েই পথচলা শুরু। অদম্য মনোবল ও পরিশ্রমের কারণে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। বর্তমানে তিনি ৮ বিঘা জমির মালিক এবং সব জমিতেই বিভিন্ন ফসলের আবাদ করেন। চলতি মৌসুমে লাউ, মিষ্টিকুমড়া, আলু, রসুন, একাঙ্গী, মরিচ, করোলা, মাষকলাই, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ফিলিপাইনের গেন্ডারীর আবাদ করেছেন। শুধু সবজির আবাদ করেই থেমে থাকেননি, তার জমিতে আছে আম, কাঁঠাল, লিচু ও মেহগনির গাছ।
এ বিষয়ে দোয়াল্লিন মোল্লা বলেন, জমিতে একই ফসল আবাদ না করে বিভিন্ন রকমের ফসল আবাদ করছি। একটা জমিতে যেমন আছে লাউ, আবার অন্য জমিতে মাষকলাই, আলু ও বেগুন। আর ২৫ শতক জমিতে আবাদ করেছি এক সাথে তিন ফসল। ইউটিউবে কৃষি বায়োস্কোপের ভিডিও দেখেই এই আমি এক জমিতে বিভিন্ন আবাদের ব্যাপারে অনুপ্রাণিত হই। ভিডিওতে দুই বছর আগে পেয়ারা বাগানে দুই সারির মাঝখানে একাঙ্গীর আবাদ করা দেখেছিলাম। এই বছর চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পরামর্শে নিজে ঝুঁকি নিয়ে কলা, মরিচ ও একাঙ্গী আবাদ শুরু করি। প্রথমে মনে হচ্ছিল তিনটি ফসল একসাথে হবে না, এখন দেখছি সবগুলোই ভালো হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান বলেন, একই জমিতে একসাথে তিন ফসল করেছেন দোয়াল্লিন মোল্লা নামের একজন কৃষক। তার বিষমুক্ত এই চাষাবাদ ইতোমধ্যে সাড়া জাগিয়েছে। আমি তার ফসলি জমি পরিদর্শন করেছি। তার সবজি ক্ষেত থেকে প্রধান সড়কে আসার জন্য একটি পাকা রাস্তার প্রয়োজন সেটিও তিনি জানিয়েছেন। আমি তালিকায় তার নাম দিয়েছি। বরাদ্দ এলে পাকা রাস্তা করে দেয়া হবে। ইতোমধ্যে তাকে সরকারিভাবে সহযোগিতাও করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আলী হাসান বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলায় বছরে প্রায় ১৬৬৩ হেক্টর জমিতে কলার আবাদ হয়ে থাকে। আমাদের এখানে যাদের প্রযুক্তিগত জ্ঞান আছে তারা কলার জমিতেই কয়েকটি আবাদ করছেন। তবে একটি প্যাটাম (এক ধরনের মাল্টি লেয়ার মিক্সড ক্রপিং টেকনিক, যেখানে একাধিক ফসল একই জমিতে একই সময়ে চাষ করা হয়) খুব জনপ্রিয় হচ্ছে। কলা বাগানের মধ্যে মরিচ ও একাঙ্গী চাষ হচ্ছে। এটি খুবই লাভজনক। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। কৃষকরা যেন এই পদ্ধতি অনুসরণ করে, তাদেরকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে একদিকে যেমন কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হবে তেমনি বর্ষাকালে মরিচের সঙ্কট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
জাতিসঙ্ঘ প্রধানকে দ্বিতীয়বারের মতো গাজায় প্রবেশে বাধা দিলো ইসরাইল টানা তাপপ্রবাহের পর চুয়াডাঙ্গায় স্বস্তির বৃষ্টি নোয়াখালীতে অশ্লীল ছবি ফেসবুকে ছড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইলবিরোধী সমাবেশ থেকে গ্রেফতার প্রায় ২৫০০ কালবৈশাখী ঝড়ে লণ্ডভণ্ড দাগনভুঞা উপজেলা চার মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শাহ্জাদা মিয়ার জামিন হামাসের সাথে চুক্তির ব্যাপারে মিসরীয় প্রস্তাব মেনে নিন : ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী টাঙ্গাইল শাড়ি নিয়ে ভারতে আইনি লড়াইয়ের ল’ফার্ম নিয়োগ নোয়াখালীতে ভুল চিকিৎসায় মা ও নবজাতকের মৃত্যু, তদন্ত কমিটি গঠন আদমদীঘিতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ আদমদিঘিতে আ’লীগ নেতার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

সকল