০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫
`


কাশিয়ানীতে খাল ভরাট করে বালু ব্যবসা কয়েক শ’ বিঘা জমির আবাদ বন্ধ

কাশিয়ানীতে চার গ্রামের পানি নিষ্কাশনের এই খালটি বালু দিয়ে ভরাট করা হয়েছে : নয়া দিগন্ত -

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) খাল ভরাট করে বালু ব্যবসা করার অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। উপজেলার রাতইল ইউনিয়নের চরভাটপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটছে। এর ফলে অন্তত চারটি গ্রামের বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে এলাকার কয়েক শ’ বিঘা ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। জানা গেছে, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ঠিকাদার ফয়সাল কবির কদরের চর ভাটপাড়া এলাকায় একটি বালুর চাতাল করে সেখানে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছেন। সেই চাতালের বালু ও পানি নিষ্কাশন হয়ে খালে গিয়ে পড়ছে। এতে ক্রমেই খালটি বালুতে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, উপজেলার জঙ্গল মুকুন্দপুর, বুধপাশা, পারকরফা সøুইস গেট হয়ে চর ভাটপাড়ার দক্ষিণ পাশ দিয়ে মধুমতি নদীতে মিলিত হয়েছে খালটি। এ খাল দিয়েই ওই এলাকা ও ক্ষেতের পানি মধুমতি নদীতে নিষ্কাষিত হয়। কিন্তু বালু ব্যবসায়ীরা পাইপলাইনের মাধ্যমে বালু এনে ওই খালের মধ্যে ফেলছেন। পরে এখান থেকে বিভিন্ন লোকের কাছে তা বিক্রি করছেন। খালে বালু ফেলার কারণে চলতি বোরো মৌসুমে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকার কৃষকরা।
চরভাটপাড়া গ্রামের কৃষক আবুল বাশার শেখ বলেন, বর্ষা মৌসুমে এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামের পানি এ খাল দিয়ে মধুমতি নদীতে বের হয়। খালের কারণে তারা জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা পান। আবার চাষের জমিতে পানি লাগলে এই খালের থেকে সেচ দেয়া হয়। মাঠে ঠিকমতো ফসল ফলে। এই খাল বাঁচাতে না পারলে এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে।
এ বিষয়ে ঠিকাদার ফয়সাল কবির কদরের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি মধুমতি নদীর বালু মহালটি ইজারা নিয়ে স্থানীয় বালু ব্যবসায়ীদের কাছে ঠিকা দিয়েছি। তারা ওই বালু মহাল থেকে বালু উত্তোলন করছেন। তারা যদি বালু উত্তোলন করতে গিয়ে খাল ভরাট করে ফেলে, তাহলে বালু ব্যবসায়ীদেরকে বালু কাটতে নিষেধ করে দেয়া হবে।
অন্য দিকে, মধুমতি নদী থেকে প্রবাহিত বরাসুরের খালটি বিল পবনের বিলে গিয়ে শেষ হয়েছে। খালটি কাশিয়ানী ও রাতইল ইউনিয়নের ভেতর দিয়ে চলে গেছে। এ খালটিরও একই অবস্থা। পাউবোর এই খালটি প্রায়ই খনন করা হলেও এটি বন্ধ করে কেউ মাছ চাষ করে আবার কেউ বালু দিয়ে ভরাট করে। বালু ব্যবসায়ীরা খালটি দখল করে নিয়েছেন।
কাশিয়ানী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিন্টু বিশ্বাস বলেন, বিষয়টি মৌখিকভাবে জেনেছি। কেউ যদি সরকারি খাল ভরাট করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ বৈদ্য বলেন, এ বিষয়ে মৌখিক অভিযোগ পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে খালের মধ্যে যাতে বালু না যায় তার জন্য বলেছি। যেটুকু বালু পড়ে খাল ভরাট হয়েছে তা দ্রুত অপসারণ করার নির্দেশ দিয়েছি। বালু সরিয়ে না ফেললে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement