২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জার্মানিতে করোনাভাইরাসের টিকা আবিষ্কারে মুসলিম দম্পতি

জার্মানিতে করোনাভাইরাসের টিকা আবিষ্কারে মুসলিম দম্পতি - সৃংগৃহীত

জার্মান প্রতিষ্ঠান বায়োএনটেক ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান ফাইজারের যৌথ উদ্যোগে তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে ৯০ শতাংশ কার্যকারিতা দেখিয়েছে। বায়োএনটেকের প্রতিষ্ঠাতা তুরস্ক বংশোদ্ভূত এক দম্পতি।

২০০৮ সালে শুরু
জার্মান শহর মাইনৎসে ১২ বছর আগে বায়োএনটেকের পথচলা শুরু হয়। এই কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ উগুর শাহিন ও তার স্ত্রী ইমিউনোলজিস্ট ওজলেম টুরেসি।

তুরস্ক বংশোদ্ভূত
তারা দু’জনই তুরস্ক বংশোদ্ভূত জার্মান নাগরিক। এ দম্পতির তৈরি বায়োএনটেকে এখন কাজ করে ১৫ শ’ কর্মী। ৫৫ বছর বয়সি শাহিনের জন্ম তুরস্কে। বাবা-মা’র সাথে একসময় জার্মানিতে চলে আসেন তিনি। মেডিসিন ও গণিত নিয়ে পড়ালেখা করেন কোলোন বিশ্ববিদ্যালয়ে।

ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই
শাহিন কোলোন ও হামবুর্গে দীর্ঘ দিন চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেছেন। এরপর জারল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। ১৯৯২ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত একজন চিকিৎসক ও গবেষক হিসেবে সেখানে কাজ করেন। মলিকিউলার মেডিসিন ও ইমিউনোলজি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ব্যাপারে তিনি সবসময় আগ্রহী ছিলেন আর এ কারণেই ২০০৮ সালে বায়োএনটেক প্রতিষ্ঠা করেন। ক্যান্সারের ওষুধ আবিষ্কারের জন্য এখানে মনোনিবেশ করেন তিনি।

ওজলেম টুরেসি
৫৩ বছর বয়সি টুরেসির জন্ম জার্মানিতে। কিন্তু তার বাবা-মা তুর্কি। হামবুর্গে পড়ালেখা করে, সেখানেই চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেছিলেন তিনি। ইমিউনোলজিস্ট টুরেসি ক্যান্সার রোগীদের থেরাপি দিয়ে থাকেন।

ভ্যাকসিন তৈরির সিদ্ধান্ত
২০০০ সালের জানুয়ারিতে শাহিন করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রথম জানতে পারেন। তখনই তার আশঙ্কা হয় এটি মহামারী রূপ নেবে। এবং ওই সময়ই ভ্যাকসিন প্রস্তুতের সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

করোনা প্রতিরোধে ভূমিকা
বায়োএনটেকের প্রধান নির্বাহী উগুর শাহিন জানিয়েছেন, এই টিকার প্রতিরোধ ক্ষমতা অন্তত এক বছর স্থায়ী হবে।

যৌথ বিবৃতিতে ফাইজারের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, ‘‘টিকার তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষার প্রাথমিক ফলে আমরা প্রমাণ পেয়েছি এটি কোভিড-১৯ প্রতিরোধ করতে পারে।’’

ভ্যাকসিন ট্রায়াল
যাদের আগে কখনো করোনা সংক্রমণ হয়নি, এমন মানুষের ওপর চালানো পরীক্ষায় দেখা যায় টিকা দেয়ার পর শরীরে করোনাভাইরাস প্রবেশ করলেও তাদের কোভিড-১৯ হয়নি। জুলাইয়ের শেষ থেকে শুরু হওয়া তৃতীয় পর্যায়ের এ ট্রায়ালে ৪৩ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ অংশ নিয়েছেন। মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা এফডি-এর অনুমতির জন্য আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠান দুটি।

১৬ হাজার কোটি টাকার চুক্তি
ফাইজার ও বায়োএনটেক যুক্তরাষ্ট্রে টিকা সরবরাহে এরই মধ্যে ১৬ হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থের চুক্তি সই করেছে। চুক্তি সই হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, ক্যানাডা, জাপানের সাথেও। ২০২০ সালেই প্রতিষ্ঠান দুটি পাঁচ কোটি ডোজ টিকা উৎপাদন করবে। ২০২১ সালে আরো ১৩০ কোটি ভ্যাকসিন উৎপাদনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ফিজার।

বিশ্বজুড়ে করোনা সংক্রমণ
জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাবে বিশ্বজুড়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে পাঁচ কোটি, প্রাণ হারিয়েছেন সাড়ে ১২ লাখেরও বেশি মানুষ। ইউরোপসহ বিশ্বের নানা প্রান্তে কয়েক মাস সংক্রমণে ধীরগতি থাকার পর আবার দ্রুত হারে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।
সূত্র : ডিডব্লিউ


আরো সংবাদ



premium cement