১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলকদ ১৪৪৫
`


মন্ত্রী-এমপিদের সংবর্ধনার আড়ালে যা হচ্ছে

মন্ত্রী-এমপিদের সংবর্ধনার আড়ালে যা হচ্ছে - সংগৃহীত

সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদ স্থগিত হওয়া নির্বাচন, চলাকালে স্থানীয় ‘মন্ত্রী ও এমপিদের সংবর্ধনার আড়ালে ‘নৌকার প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা’ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী রেজাউল করিম শামীম। শনিবার উপজেলার সাচনা বাজারে তার নির্বাচনী কার্যালয়ে আযোজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতির দায়িত্বে থাকা এই প্রার্থী।

এ সময় নির্বাচনে প্রতিদ্বদ্বী তিন ভাইস চেয়াররম্যান প্রার্থী উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, আগামী ২ জুন জামালগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে পরিকল্পনামন্ত্রী এম.এ মান্নান (এমপি) সহ সংসদ সদস্য ও উপজেলা চেয়ারম্যানদের সংবর্ধনার আযোজন করা হয়েছে। এতে দলীয় প্রার্থীকে স্বাগত বক্তা হিসেবে রাখা হয়েছে। নির্বাচনের সময় এ ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন নির্বাচনী আচরণবিধির সম্পূর্ণ লঙ্ঘন দাবি করে অনুষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানান প্রার্থীরা।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম শামীম। স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম বলেন, ‘ভোটের সময় সংবর্ধনার আয়োজন সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত। অনুষ্ঠানে কেবল মন্ত্রী, এমপি নন, আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী স্বাগত বক্তব্য দেবেন।’ কাগজপত্রে অনুষ্ঠানের আয়োজক উপজেলা আওয়ামীলীগ হলেও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের মূল উদ্যোক্তা সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন বলে দাবি করেছেন তিনি।

সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি জেলার বর্তমান অভিভাবক সৎ-নিষ্ঠাবান-সজ্জন হিসেবে সমাদৃত পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বিষয়টি গভীরভাবে সুবিবেচনায় নিয়ে ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন তার নিজ উপজেলা ধর্মপাশায় আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী শামীম আহমদ মুরাদের পক্ষে একটি মুহূর্তের জন্যও প্রচারণায় অংশ নেননি। কারণ সেখানে তার ছোট ভাই মোজাম্মেল হোসেন রোকন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন। তার সমর্থন নিয়েই তিনি ঘোড়া প্রতীকে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হন। কিন্তু জামালগঞ্জে এসে তিনি চরম নৌকা-প্রেমিক সেজেছেন।’

সংবাদ সম্মেলনে জামালগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি দিজেন্দ্রলাল দাস, সাংগঠনিক সম্পাদক মোবারক আলী, ডা. ফারুক আহমেদ, প্রচার সম্পাদক অসিত রায় চৌধুরী, দফতর সম্পাদক সমরেন্দ্র আচার্য্য সম্ভু, আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুল খালেক, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী গোলাম জিলানী আফিন্দী রাজু, হাফিজা আক্তার দিপু, শাহাব উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অভিযোগের ব্যাপারে জামালগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এম নবী হোসেন বলেন, ‘এই প্রোগ্রাম আয়োজনের উদ্দেশ্য হচ্ছে মন্ত্রীর কাছে এলাকার সমস্যার কথা তুলে ধরা, যাতে এলাকার উন্নয়ন হয়।’ সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হবে ৭ জুন, আর আমাদের প্রোগ্রাম ২ জুন। এখানে আচরণবিধি লঙ্ঘনের কিছু দেখছি না।

পরিকল্পনামন্ত্রী একজন শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তি, তাকে সম্মান দিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। চলমান উপজেলা নির্বাচনের সাথে সংবর্ধনার কোনো সম্পর্ক নেই।’

প্রসঙ্গত, ১০ মার্চ প্রথম ধাপে জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণের কথা ছিল। কিন্তু ‘স্থানীয় সংসদ সদস্য এলাকায় অবস্থান করে নির্বাচনকে প্রভাবিত করায় উপজেলা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ না হওয়ার আশঙ্কা থাকায় ভোট গ্রহণের আগের দিন নির্বাচন স্থগিত করে দেয় নির্বাচন কমিশন। গত বুধবার স্থগিত নির্বাচনের ভোট গ্রহণের তারিখ ১৮ জুন পুনরায় নির্ধারণ করে ইসি।


আরো সংবাদ



premium cement