ভারতের একমাত্র মুসলিমপ্রধান রাজ্য, কাশ্মির নিয়ে কয়েক দিন ধরে যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা এবং জল্পনা-কল্পনা চলছিল, সেটাই সত্য হলো। ক্ষমতাসীন চরম হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির সরকার কাশ্মিরকে দেয়া বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা কেড়ে নিয়েছে। রাষ্ট্রপতির নির্দেশ জারি করে বাতিল করে দিলো ভারতীয় সংবিধানের দীর্ঘ দিনের ৩৭০ ধারা, যা জম্মু ও কাশ্মিরকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা দিয়েছিল। শুধু তাই নয়, একই সাথে রাজ্যটিকে দুই টুকরো করে দেয়া হলো। রাজ্য থেকে লাদাখ অঞ্চল আলাদা করে তৈরি করা হলো নতুন এক ‘কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল’, যার কোনো বিধানসভা থাকবে না। জম্মু-কাশ্মিরের পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদাও কেড়ে নেয়া হলো। কেড়ে নেয়া হলো নিজস্ব পতাকা। এখন থেকে তার পরিচিতি হবে ‘কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল’ হিসেবে। তবে কাশ্মিরের বিধানসভা থাকবে। দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পরিচালনা করবেন দুইজন লেফটেন্যান্ট গভর্নর।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গত সোমবার প্রথমে রাজ্যসভা ও পরে লোকসভায় এই ঘোষণা দেন। বিরোধীদের প্রবল প্রতিরোধের মধ্যে এসংক্রান্ত রাষ্ট্রপতির নির্দেশনামা তিনি পড়ে শোনান। তিনি বলেন, ‘৩৭০ ধারা কাশ্মিরকে দেশের অন্য অংশের সাথে একাত্ম করতে পারেনি।’
এই ঘোষণা দেয়ার পাশাপাশি গোটা কাশ্মিরকে ঢেকে দেয়া হয়েছে নিরাপত্তার নিñিদ্র চাদরে। সেখানে আগে থেকেই মোতায়েন, নিরাপত্তা বাহিনীর অতিরিক্ত বিপুলসংখ্যক সেনা পাঠানো হয়েছে। আমাদের জানা মতে, কাশ্মিরে আগে থেকে মোতায়েন ভারতের সৈন্য সংখ্যা সাত লাখের মতো। অর্থাৎ প্রতি ১০ জন নাগরিকের বিপরীতে একজন করে সৈন্য সেখানে মোতায়েন ছিল। এরপর গত কয়েক দিনে সেখানে আরো লক্ষাধিক সেনা পাঠানো হয়েছে বলে কোনো কোনো সূত্র অনুমান করছে। কাশ্মিরে সান্ধ্য আইন জারি করা হয়েছে। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। প্রায় শতবর্ষী রাজনীতিক সৈয়দ আলী শাহ গিলানিসহ অনেক নেতা ইতোমধ্যে গৃহবন্দী সেখানে।
সর্বশেষ আটক করা হয়েছে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি এবং ওমর আবদুল্লাহকে, সেই সাথে সাজ্জাদ লোনের মতো প্রভাবশালী নেতাদের। দ্বিতীয় জনপ্রিয় নেতা ইয়াসিন মালিক আগে থেকেই বন্দী আছেন দিল্লির তিহার কারাগারে। গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রভাবশালী কোনো রাজনীতিবিদই কাশ্মিরে আর মুক্ত অবস্থায় নেই। বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে ইন্টারনেটসহ সব ধরনের যোগাযোগব্যবস্থা, সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। রাজ্যজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে বলে আন্তর্জাতিক ও ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর থেকে জানা যায়। বন্ধ হয়ে গেছে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
ভারতেরই অন্যান্য রাজ্যে বেসামরিক নাগরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যের আনুপাতিক হার হলো ৮০০ : ১। অর্থাৎ প্রতি ৮০০ জনের বিপরীতে আছে একজন সৈন্য। সেখানে কাশ্মিরে প্রতি আট-দশজনের জন্য একজন করে সৈন্য থাকার অর্থ হলো, পুরো রাজ্যের প্রতিটি মানুষের ওপর সেনা নজরদারি থাকবে। বলা যায়, মোদির সরকার কাশ্মিরকে একটি বিশাল সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত করেছে। কাশ্মিরের দেড় কোটি মুসলমান জনগোষ্ঠীর জন্য পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ, শুধু সেটা বোঝানোর জন্য এ তথ্যটি উল্লেখ করা হলো।
অমিত শাহের ঘোষণার সময় পার্লামেন্টে বিরোধীদলীয় সদস্যরা প্রতিবাদে সোচ্চার ছিলেন। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সুপ্রিম কোর্টের শরণাপন্ন হওয়ার কথা ভাবছে বলে জানা গেছে। বিভিন্ন মহল থেকে মোদি সরকারের এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। মুসলিম বিশ্বে কেবল পাকিস্তান কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা হরণের নিন্দা করে এটিকে অবৈধ পদক্ষেপ বলে বর্ণনা করেছে। কাশ্মিরের সর্বজনশ্রদ্ধেয় রাজনীতিবিদ, হুররিয়াত কনফারেন্সের নেতা শাহ গিলানি এক টুইট বার্তায় বিশ্ববাসীর কাছে কাশ্মিরবাসীকে রক্ষার জন্য বিশেষ করে মুসলিম বিশ্বের প্রতি আকুল আর্তি জানিয়ে লিখেছেন : ‘এই বার্তাকে এসওএস হিসেবে গণ্য করুন।’ তার অ্যাকাউন্ট টুইটার কর্তৃপক্ষ স্থগিত করে দেয়ায় পুরো বার্তাটি পাওয়া যায়নি। তিনি গত রোববার হুররিয়াতের শূরার বৈঠকে আগামী দিনে কঠিন ও দীর্ঘমেয়াদি সংগ্রামের প্রস্তুতি নেয়ার জন্য কাশ্মিরের জনগণ, বিশেষ করে তরুণদের প্রতি আহ্বান জানান।
বিরোধীরা দেশকে টুকরো টুকরো করার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করে দিনটিকে ভারতের ইতিহাসের একটি কালো দিন হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরম বলেন, সরকার যা করেছে, তা দেশ ও গণতন্ত্রের জন্য চরম বিপজ্জনক। এই সিদ্ধান্ত দেশকে টুকরো টুকরো করে দেয়ার প্রথম পদক্ষেপ। দেশের পক্ষে এটা প্রকৃত কালো দিন। বিজেপির শরিক, সংযুক্ত জনতা দল এই সিদ্ধান্তে শরিক হয়নি। দলের নেতা কে সি ত্যাগী বলেছেন, ‘তারা এই সিদ্ধান্তের বিরোধী। এটা এনডিএরও অ্যাজেন্ডা নয়।’
ন্যাশনাল কনফারেন্স বা এনসিপি নেতা ওমর আবদুল্লাহ বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘ভারত সরকারের সিদ্ধান্ত একপেশে এবং জম্মু-কাশ্মিরবাসীর প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা। এর সুদূরপ্রসারী বিপজ্জনক ফল হবে। ৩৭০ এবং ৩৫এ ধারা বাতিল হওয়ায় রাজ্যের মৌলিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ বেআইনি। এনসিপি এর বিরোধিতা করবে। সবাই প্রস্তুত থাকুন।’
কংগ্রেস সংসদসদস্য গোলাম নবি আজাদ বলেছেন, ‘সীমান্তের একটা রাজ্য যা ভৌগোলিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক এবং ঐতিহাসিকভাবে ভিন্ন; সেটাকেই বেঁধে রেখেছিল ৩৭০ ধারা। ক্ষমতায় মত্ত হয়ে এবং শুধু ভোট পেতে বিজেপি সরকার সেগুলো ছেঁটে ফেলল। তিনি বলেন, জম্মু-কাশ্মির ভারতীয় সংবিধানের মস্তক ছিল। বিজেপি সরকার আজ শিরñেদ করল। তাই কাশ্মির থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত সব ধর্মনিরপেক্ষ দলকে আহ্বান করছি, এই লড়াইয়ে সবাই একজোট হোন। তৃণমূল, বাম দলগুলো, এএপি, ডিএমকে, এসপি, কেরল কংগ্রেসসহ ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলো ইতোমধ্যেই জম্মু-কাশ্মির প্রসঙ্গে তাদের সাথে একজোট হয়েছেন বলে জানান আজাদ।
জম্মু ও কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা হরণ এবং রাজ্যটি ভেঙে দুই টুকরা করার এই সিদ্ধান্তের কী পরিণতি হবে তা এ মুহূর্তে স্পষ্ট নয়। কারণ, গোটা উপত্যকা এ মুহূর্তে থমথমে। বড় একটা গ্যারিসনের মতো, কাশ্মিরের পরিবেশে এ মুহূর্তে স্বাধীন মতামত বা ভিন্নমত প্রকাশের কার্যত কোনো নিয়মতান্ত্রিক উপায় নেই। গত এক বছর হলো রাজ্যটিতে প্রথমে গভর্নরের শাসন এবং পরে প্রেসিডেন্টের শাসন চলছে। ২২ বছর পর সেখানে আবার নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির চরম দুর্দিন নেমে এলো। বিজেপি ছাড়া অন্যান্য দলের রাজনৈতিক তৎপরতা বন্ধ।
এই ঘোষণার সাথে সাথে সংবিধানের ৩৫ (ক) ধারাও বাতিল হয়ে গেল কি না, তা নিয়ে সাংবিধানিক বিতর্ক দেখা দিয়েছে। যদিও কংগ্রেস নেতা গোলাম নবি আজাদ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে দেয়ার সাথে সাথে ৩৫(ক) ধারাও বিলোপ করে দেয়া হলো। এর মধ্য দিয়ে সরকার জম্মু-কাশ্মিরের জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করল। এর পরিণাম ভালো হতে পারে না।’
সংবিধানের ৩৭০ ধারায় জম্মু-কাশ্মিরকে বিশেষ মর্যাদা দেয়া হয়েছিল। পররাষ্ট্র, যোগাযোগ ও প্রতিরক্ষা ছাড়া বাকি সব ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা ওই রাজ্যকে দেয়া হয়েছিল। তাদের ছিল আলাদা পতাকা। প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ছিল সংবিধান। কালে কালে সব হারিয়ে অবশিষ্ট ছিল সাংবিধানিক ধারা ও কিছু বিশেষ ক্ষমতা। এবার সেটুকুও কেড়ে নেয়া হলো।
এই সিদ্ধান্তের পরিণাম কী হবে, এখনই তা বলা যাচ্ছে না। কারণ, গোটা উপত্যকা এই মুহূর্তে থমথমে। তবে নিরাপত্তা অভিযানের নামে কাশ্মিরি মুসলমানদের ওপর নতুন করে একটি বড় ধরনের গণহত্যা শুরু হলে অবাক হওয়ার কারণ নেই। বরং পরিস্থিতি সেদিকেই যাচ্ছে বলে আশঙ্কা হয়। ‘গুজরাট গণহত্যার নায়ক’ যখন দেশের প্রধানমন্ত্রী তখন মুসলমানদের নির্বিচারে কচুকাটা করে গোটা দেশে রামরাজ্য প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়নে তিনি পিছিয়ে থাকবেন, এমন মনে করার কারণ নেই।
কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা হরণ এবং রাজ্যটিকে দুই টুকরা করার মাধ্যমে ভারত আসলে কী করতে চায়, সেটি কিন্তু অস্পষ্ট নয়। এই পদক্ষেপের ফলে কাশ্মির সাধারণ একটা ভারতীয় অঙ্গরাজ্যে পরিণত হবে। অর্থাৎ কাশ্মিরের ‘আজাদি’র বিষয়টি বহু দূর পিছিয়ে যাবে বলে তারা ধরে নিয়েছেন। তবে বিশেষভাবে সংবিধানের ৩৫(ক) অনুচ্ছেদ বাতিলের তাৎপর্য হবে সুদূরপ্রসারী। এই অনুচ্ছেদের কারণে অনাবাসী কোনো ভারতীয় নাগরিক কাশ্মিরে জমি বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান কিনতে পারতেন না। এখন এই বিধান উঠে যাওয়ার পর কাশ্মির আর আগের মতো মুসলমানপ্রধান থাকবে না। জম্মুতেও অমুসলমানদের হিস্যা বাড়ানো হবে। মূলত কাশ্মিরের ডেমোগ্রাফি বা জনমিতি পাল্টে দিয়ে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার এক নতুন পরীক্ষা হাতে নিয়েছে দেশটির সরকার, অনেকটা ফিলিস্তিনের মতো। ইহুদি বসতি স্থাপনের মাধ্যমে যেভাবে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে খোদ ফিলিস্তিনিদেরই সংখ্যালঘুতে পরিণত করার চেষ্টা চলছে, ঠিক একই কৌশল কাশ্মিরে নিয়েছে ভারত। এটি মূলত চরমপন্থী হিন্দুবাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ বা আরএসএসের পুরনো তত্ত্ব।
ভারতে এ মুহূর্তে যে আটটি রাজ্যে হিন্দুরা সংখ্যালঘু, তার একটি জম্মু ও কাশ্মির। রাজ্যের জম্মুতে হিন্দু রয়েছে ৬৩ ভাগ, লাদাখে ১২ এবং কাশ্মিরে ২ ভাগ। গড়ে পুরো রাজ্যে ৩৬ ভাগ। বিজেপি এ অবস্থারই পরিবর্তন ঘটাতে চায় ৩৫(ক) অনুচ্ছেদ বাতিল করে। অর্থাৎ কাশ্মির উপত্যকায় জনমিতি পাল্টে দিয়ে। রাজ্যের সর্বশেষ মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি গ্রেফতার হওয়ার আগে নয়াদিল্লির ‘পরিকল্পনা’কে আগুনে বারুদের গুঁড়া ছিটানোর মতো ভুল হিসেবে হুঁশিয়ার করেছিলেন। তার মতে, এতে পরিস্থিতির ওপর কারোই নিয়ন্ত্রণ থাকবে না।
ভারতের একটি সংবাদপত্রে লেখা হয়েছে, ‘অন্য রাজনৈতিক দল থেকে বিজেপি নিজেদের আলাদা দাবি করে এসেছে বরাবর। তিনটি বিষয়ে তারা কখনো তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি থেকে সরেনি। সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল, সারা দেশে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির প্রচলন এবং অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের জায়গায় রামমন্দির প্রতিষ্ঠা।
দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে জম্মু ও কাশ্মিরের বিশেষ অধিকার বাতিল করে দিয়ে তিন লক্ষ্যের একটি বিজেপি পূরণ করল। গতকাল মঙ্গলবার থেকে অযোধ্যা মামলার শুনানি শুরু হচ্ছে সুপ্রিম কোর্টে। বিজেপির বিশ্বাস, খুব দ্রুত সেই শুনানি শেষ হবে এবং অযোধ্যায় মন্দির প্রতিষ্ঠার সব বাধা দূর হবে। বাকি থাকল ‘অভিন্ন দেওয়ানি বিধি’। তা করার আগে তিন তালাক বিল সরকার পাস করেছে।’
ওপরের উদ্ধৃতিটুকু নেয়া হয়েছে বামপন্থীদের একটি প্রগতিশীল পত্রিকা থেকে। এখানে খুব প্রচ্ছন্নভাবে বিজেপির ওপর তাদের গভীর আস্থার ব্যাপারটি কি টের পাওয়া যাচ্ছে না? আমাদের কাছে সে রকমই মনে হয়েছে। আমরা বলতে চাই, বামপন্থীরা যতই এ বিষয়টি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে মাঠ গরম করুন না কেন, ভারতের মানুষ সত্যিকার অর্থেই বিজেপিকে জাতীয় বীরের মর্যাদা দিয়েছে। তারা হিন্দুত্বের আদর্শে একজোট হয়েছে এবং গোটা ভারতে রামরাজ্যই চায় কায়েম করতে। সে জন্যই মুসলমানদের ধরে ধরে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে বাধ্য করা হচ্ছে এবং না বললে খুন করে ফেলা হচ্ছে। গরুর গোশত খাওয়ার ‘অপরাধে’ মেরে ফেলা হচ্ছে। চাকরি-বাকরি তো ৭০ বছর ধরেই তাদের দেয়া হয় না। এখন বেঁচে থাকার অধিকারটুকুও অস্বীকার করা হচ্ছে।
কাশ্মিরের মানুষদের ভাগ্যে অন্যান্য জায়গার চেয়েও কঠিন নিগ্রহ ও জুলুম নেমে আসবে এটা নিশ্চিত। প্রাথমিকভাবে সেখানে সঙ্ঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেও বুলেটের মাধ্যমে তাদের দমিয়ে দেয়া হবে। ভারতের মানবতাবাদী বলে কথিত বামপন্থী যারা নিজেদের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ বলে দাবি করেন, তারা বাস্তবে কিছু করবেন বলে মনে হয় না। কারণ, মুসলিমবিরোধী সেন্টিমেন্টের প্রাবল্য তাদের ক্ষীণকণ্ঠ ছাপিয়ে যাবে। আমরা যতই অপছন্দ করি না কেন, বাস্তবতা হলো, ভারতে এ মুহূর্তে রামরাজ্য প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে জনমত অটুট। অখণ্ড ভারত প্রতিষ্ঠার ভারতীয় স্বপ্ন অচিরেই গোটা দক্ষিণ এশিয়াকে টালমাটাল করে তুললে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
মনে রাখতে হবে, এর পরই আসছে আসামের এনআরসি নিয়ে বড় রকমের আরেকটি বিপর্যয়। সেটিও আসছে মূলত মুসলমানদের ওপরই। ৩০ থেকে ৪০ লাখ মুসলমানকে আসাম থেকে বাংলাদেশে ঠেলে দেয়ার অথবা বন্দিশিবিরে আটকে রাখার ব্যবস্থা হতে যাচ্ছে সেখানে। আমাদের ওপর চাপ আসার আশঙ্কা খুবই প্রবল। তাই বাংলাদেশের নিরাপত্তা নিয়ে আমাদের দুশ্চিন্তা করার যথেষ্ট কারণ আছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা