২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ভদ্রতা ভোলেননি সরিন

-

তার সাথে প্রথম দেখা ২০১৪ বিশ্বকাপের সময় ব্রাজিলে। সাংবাদিকদের জন্য সংরক্ষিত মিক্সড জোনে তাকে দেখা যেত ইএসপিএন এর মাইক্রোফোন হাতে। দুটি বিশ্বকাপ খেলা আর্জেন্টিনার সাবেক অধিনায়ক ডিফেন্ডার কাম মিডফিল্ডার হুয়ান পাবলো সরিন তখন ইএসপিএনে কর্মরত। এখনো সে দায়িত্ব। মিক্সড জোনে টিভি সাংবাদিক ও পত্রিকার সংবাদকর্মীদের জন্য ভিন্ন ভিন্ন ব্যবস্থা। টেলিভিশনের এলাকায় প্রিন্ট মিডিয়ার প্রবেশ নিষেধ। ফলে তার সাথে কোনোভাবেই কথা বলার সুযোগ হয়নি। একদিন তাকে পাওয়া গেল মারাকানা স্টেডিয়ামের মিডিয়া সেন্টারে। কাছে যেতেই তার জিজ্ঞাসা, কী ছবি তুলবে। সম্মতিসূচক জবাব দেয়ার পর কাছে ডেকে নিয়ে ছবি তোলার পোজ দিলেন। এরপর খুব দ্রুত চলে গেলেন ব্যবস্তার কারণে। চার বছর পর আবার সরিনের সাথে দেখা রাশিয়ার মস্কো লুঝনিয়াকি স্টেডিয়ামে। এখনো তার খেলোয়াড়ি জীবনের সেই লম্বা চুল আছে। তবে সাথে যুক্ত হয়েছে মুখে লম্বা দাড়ি। এবার তার শরীরে সুন্দর পোশাক সাথে টাই দেখা যায়নি। পায়ে সেন্ডেল। পরনে হাফ প্যান্ট। গায়ে হাতা গোটানো আকাশি রঙের শার্ট। একেবারে সাধারণ পোশাকে। তবে আচার-আচরণেও অতি সাধারণ। সোজা কথায় অতি ভদ্র।
‘তোমার সাথে আমি ব্রাজিলের মারাকানা স্টেডিয়ামে ছবি তুলেছি’Ñ এ কথা বলার পর তার মধ্যে তেমন কোনো অনুভূতি চোখে পড়ল না। কিন্তু ছবি তোলার প্রস্তাব দেয়া মাত্রই রাজি হয়ে গেলেন। অবশ্য কাকে দিয়ে ছবি তুলব। ব্যস্ত সবাই। সরিনই তখন একজনকে দেখিয়ে বললেন, তাকে বলো ছবি তুলে দিতে। সেই ব্যক্তি অবশ্য ব্যস্ততার ভান করে কেটে পড়ল। এরপর আমি আর সরিন মিলে আরও কয়েকজনের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করলাম। লাভ হলো না। পরে সরিনের সাথে থাকা এক আর্জেন্টাইন আমাদের দু’জনকে ক্যামেরাবন্দী করলেন।
দুইবারের বিশ্ব ফুটবলের চ্যাম্পিয়ন, মেসি, অ্যাগুয়েরো, হিগুয়েনের মতো বহু নামী তারকা ফুটবলার জন্ম দেয়া একটি দেশের ফুটবল দলপতি এতটা ভদ্রতা না দেখালেও তো পারতেন। আসলে এটা ভদ্রতা। যা মানুষ শিখে আসে পরিবার থেকে। কিছু রপ্ত করে পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখে। আর্জেন্টিনার সাংবাদিকদের মুখেও সরিনের ভদ্র আচরণে প্রশংসা। ২০০২ এবং ২০০৬ বিশ্বকাপ খেলা সরিন অবশ্য এবারও কথা বলতে পারলেন না ব্যস্ততার জন্য। টিভি প্রোগ্রাম করতে স্টেডিয়ামে প্রবেশে তার প্রচণ্ড তাড়া। ও প্রান্ত থেকে ফোন আসছিল। তাই দ্রুতই চলে গেলেন। তবে যাওয়ার আগে বললেন, আমি এবারের আর্জেন্টিনা দল নিয়ে আশাবাদী। প্রথম ম্যাচে আইসল্যান্ডের সাথে ড্র করার পরও দৃঢ়বিশ্বাস মেসিরা ফাইনালে খেলবে।
১৯৯৫ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের হয়ে খেলা ৭৬ ম্যাচ খেলা সরিন গোল করেছেন ১২টি। খেলেছেন বার্সেলোনা, জুভেন্টার্স, প্যারিস সেন্ট জার্মেই, ভিলা রিয়াল, রিভার প্লেটের মতো কাবে। ২০০৬ বিশ্বকাপের আগে জার্মানির বিপক্ষে প্রীতিম্যাচে তার গোলে ১-০তে জিতেছিল আর্জেন্টিনা।


আরো সংবাদ



premium cement