২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

উৎসবে অর্থনীতি জেগে ওঠে

-

ঈদুল আজহা উদযাপনে পশু উৎসর্গের মধ্যে রয়েছে বিশেষ আর্থ-সামাজিক তাৎপর্য। হজরত ইব্রাহিম আ: কর্তৃক পুত্র ইসমাইল আ:-কে আল্লাহর উদ্দেশে উৎসর্গ করার ইচ্ছা প্রকাশের মহান স্মৃতিকে স্মরণ করে ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পশু কোরবানির মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে নিজের পাশব প্রবৃত্তি, অসৎ উদ্দেশ্য ও হীনম্মন্যতাকেই কোরবানি করা হয়। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এ বিশেষ ঈদ উৎসবে নিজের চরিত্র ও কুপ্রবৃত্তিকে সংশোধন করার সুযোগ আসে। জীবজন্ত উৎসর্গ করাকে নিছক জীবের জীবন সংহার হিসেবে দেখার সুযোগ নেই। এটি আত্মশুদ্ধি ও নিজের পাশব প্রবৃত্তিকে অবদমন প্রয়াস প্রচেষ্টারই প্রতীকী প্রকাশ।
“আজ আল্লার নামে জান কোরবানে ঈদের মতো পূত বোধন
ওরে হত্যা নয় আজ ‘সত্য-গ্রহ’ শক্তির উদ্বোধন”
(কাজী নজরুল ইসলাম, কোরবানী, অগ্নিবীণা)
সামাজিক কল্যাণ সাধনে সংশোধিত মানব চরিত্রবলের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। কোরবানির গোশত গরিব আত্মীয়স্বজন পাড়া-প্রতিবেশী ও দরিদ্রদের মধ্যে বিতরণ করার যে বিধান তার মধ্যে নিহিত রয়েছে সামাজিক সমতার মহান আদর্শ।
হজরত ইব্রাহিম আ:-এর নিজের প্রাণাধিক পুত্র ইসমাইল আ: কে আল্লাহর রাহে কোরবানির সর্বোচ্চ ত্যাগ শিকার এর স্মরণে পবিত্র ঈদুল আজহার উৎসব পালিত হয় মুসলিম বিশ্বে। এ উৎসবকে ভারতীয় উপমহাদেশে ‘বকরি ঈদ’ এবং ব্যবহারিক অর্থে ‘কোরবানির ঈদ’ও বলা হয়। বকরি ঈদ বলার কারণ এ ঈদে খাসি কোরবানি করা হয় আবার ’বাকারা’ বা গরু কোরবানির ঈদ হিসেবেও ভাবা হয়। আরবি পরিভাষায় এ ঈদকে বলা হয় ‘ঈদুল আজহা’ বা আত্মত্যাগ বা উৎসর্গের উৎসব। সুতরাং ঈদুল আজহার তাৎপর্যগত বৈশিষ্ট্য বিচারে এ উৎসব পালনে গরু বা পালিত পশু খোদার সন্তুষ্টির জন্য উৎসর্গ বা কোরবানি করা। আর এ কোরবানির আগে পবিত্র হজ পালনের প্রসঙ্গটিও স্বতঃসিদ্ধভাবে এ উৎসবের সাথে এসে সংযুক্ত হয়। ঈদুল আজহার এ উৎসব হজ পালন ও পশু কোরবানিসূত্রে সমাজ ও অর্থনীতিতে বিশেষ তাৎপর্যবাহী প্রভাব ও কর্মচাঞ্চল্য সৃষ্টি করে।
হজ পালন ঈদুল আজহা উৎসবের একটি বিশেষ অংশ। পবিত্র হজ অনুষ্ঠান পালনের মাধ্যমে বিশ্বের সব দেশের মুসলমানরা সমবেত হন এক মহাসম্মিলনে। ভাষা ও বর্ণ, দেশ ও আর্থিক অবস্থানগত সব ভেদাভেদ ভুলে সবার অভিন্ন মিলনক্ষেত্র কাবা শরিফে একই পোশাকে, একই ভাষায় একই রীতি রেওয়াজের মাধ্যমে যে ঐকতান ধ্বনিত হয় তার চাইতে বড় ধরনের কোনো সাম্য-মৈত্রীর সম্মেলন বিশ্বের কোথায়ও অনুষ্ঠিত হয় না। হজ পালনের মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন রঙ ও গোত্রের মানুষের মধ্যে এক অনির্বাচনীয় সখ্য সংস্থাপিত হয়। বৃহত্তর সামাজিক কল্যাণের যা অনুপম আদর্শ বলে বিবেচিত হতে পারে।
ঈদুল আজহা উদযাপনে অর্থনীতিতে ব্যাপক মুদ্রা সরবরাহ, শিল্প উপাদন ও ব্যবসা বাণিজ্যসহ নানান অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রসার ঘটে। এ উৎসবে অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে ব্যাপক আর্থিক লেনদেনসহ বহুমুখী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয় যা গোটা অর্থনীতি তথা দেশজ উৎপাদন ব্যবস্থাপনায় শনাক্তযোগ্য প্রভাব পরিলক্ষিত হয়।
হজ পালন উপলক্ষে বৈদেশিক মুদ্রাসহ বিপুল অর্থ লেনদেন হয়ে থাকে। এ বছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় এক লাখ হজযাত্রী হজে গিয়েছেন। প্রতিজনে গড়ে পাঁচ লাখ টাকা ব্যয় নির্বাহ করলে এখাতে মোট অর্থব্যয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা, বৈদেশিক মুদ্রায় ৪১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। হাজীদের যাতায়াতসহ সেখানকার ব্যয় বৈদেশিক মুদ্রাতেই নির্বাহ হবে। এর সাথে এ হজের ব্যবস্থাপনা ব্যয়েও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বাংলাদেশী টাকা ও বিদেশী মুদ্রা ব্যয়ের সংশ্লেষ রয়েছে। ব্যাংকিং সেক্টরে এ উপলক্ষে লেনদেন ও সেবা সূত্রে ব্যয় বেড়েছে। গোটা সৌদি আরবের অর্থনীতি সেই প্রাচীনকাল থেকেই হজ মওসুমের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বা ব্যবসা বাণিজ্যকে ঘিরে বা অবলম্বন করে আবর্তিত হতো এবং বর্তমানেও তার ব্যাপ্তি বাড়ছে বৈ কমছে না।
পশু কোরবানি উপলক্ষে জাতীয় অর্থনীতিতে এক ব্যাপক আর্থিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়ে হয়ে থাকে। গত বছরের হিসাব অনুযায়ী প্রায় ৭৮ লাখ গরু ও খাসি কোরবানি হয়েছিল। বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) ধারণা এবার ৩০ লাখ গরু ও ৫৫ লাখ খাসি কোরবানি হবে। গরুপ্রতি গড় মূল্য ৩০ হাজার টাকা দাম ধরলে এ ৩০ লাখ গরু বাবদ লেনদেন হবে ৯ হাজার কোটি টাকা এবং ৫৫ লাখ খাসি ( গড়ে ১৫০০ টাকা দরে ) ৮২৫ কোটি টাকা অর্থাৎ পশু কোরবানিতে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হবে। ৮৫ লাখ কোরবানির পশুর মধ্যে প্রায় ৪৫ লাখ পশু ( গরু ২০ লাখ খাসি ভেড়া ২৫ লাখ) আমদানি হবে প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে। ভারতীয় সূত্র থেকেই জানা গেছে প্রায় চার হাজার ৭০০ কোটি টাকার রফতানি তাদের এবারের প্রত্যাশা। এর একটা বড় অংশ অবশ্য চোরাই পথে বা পদ্ধতিতে আদান প্রদান হবে, পশুর সংখ্যা ও টাকার পরিমাণ অবশ্যই অনুমাননির্ভর। যে পদ্ধতিতেই হোক না কেন, বাংলাদেশের প্রায় পাঁচ হাজার কোটির টাকার বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হবে এ খাতে। ২০ লাখ গরু আমদানির জন্য বাংলাদেশের শুল্ক রাজস্ব ( গরু প্রতি ৫০০ টাকা হিসেবে ) ১০০ কোটি টাকা অর্জিত হওয়ার কথা। কোরবানিকৃত পশুর সরবরাহ ও কেনাবেচার শুমারি ও পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করলে দেখা যায়Ñ চাঁদা, টোল, বখশিশ, চোরাকারবারি, ফড়িয়া, দালাল, হাসিল, পশুর হাট ইজারা, চাদিয়া, বাঁশ-খুঁটির ব্যবসা, পশুর খাবার, পশু কোরবানি ও কসাইয়ের খরচ এমন কি পশুর সাজগোজ বাবদও বিপুল অর্থ হাতবদল হয়ে থাকে অর্থাৎ অর্থনীতিতে ফর্মাল-ইনফর্মাল ওয়েতে আর্থিক লেনদেন বা মুদ্রা সরবরাহ বেড়ে যায়।
কোরবানির পশুর চামড়া সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ, বিক্রয় ও ব্যবহার উপলক্ষে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষের ও প্রতিষ্ঠানের কর্মযোজনা সৃষ্টি হয়। আমাদের অর্থনীতিতে বিশেষ করে রফতানি বাণিজ্যে, পাদুকা শিল্পে পোশাক, হস্তশিল্পে এক অন্যতম উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এ চামড়া সংগ্রহ-সংরক্ষণ প্রক্রিয়াকরণের সাথে এক হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ ও ব্যবসা জড়িত। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো প্রতি বছর প্রায় ৫০০ কোটি টাকা বিশেষ ঋণ দিয়ে থাকে, বেসরকারি ব্যাংকগুলো ৮০-১০০ কোটি টাকা। চামড়া নি¤œ দামে পাচার হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি মোকাবেলার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। দেশী-বিদেশী সিন্ডিকেটের কবল থেকে চামড়া ব্যবসাকে উদ্ধারের কোনো বিকল্প নেই। পত্রিকান্তরে প্রতিবেদনে প্রকাশ প্রতিবেশী দেশ থেকে বাকিতে গরু সরবারাহ করা হয় কম দামে কাঁচা চামড়া পাচারের প্রত্যাশায়। সেই চামড়া প্রক্রিয়াকরণ করে বেশি দামে বিদেশে রফতানির মুনাফা অর্জন করে তারা। দেশে নিজেদের চামড়া প্রক্রিয়াকরণ এবং উপযুক্ত মূল্যে তা রফতানির প্রণোদনা সৃষ্টি করেই এ পরিস্থিতি থেকে নিষ্কৃতিলাভ ঘটতে পারে। লবণ চামড়া সংরক্ষণের একটি অন্যতম উপাদান। সরকারকে ৪০ হাজার টন লবণ শুল্ক মুক্ত আমদানির উদ্যোগ নিতে হয়েছে যাতে সিন্ডিকেট করে লবণের কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি না হয়।
কোরবানির পশুর গোশত আমিষ জাতীয় খাদ্যের উপাদান এবং এই গোশতের বিলি বণ্টন প্রক্রিয়ায় রয়েছে আর্থ-সামাজিক তাৎপর্যÑ ধনী, দরিদ্র নির্বিশেষে বছরের একটি সময়ে সকলে আমিষ প্রধান এই খাদ্যের সন্ধান-সরবরাহ লাভ করে থাকে। গোশত রান্নার কাজে ব্যবহৃত মসলা বাবদ প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হয়ে থাকে এ সময়ে। মসলার দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গিয়ে ঈদ উদযাপনের ব্যয় ব্যবস্থাপনাকে বিব্রতকর পরিস্থিতির সামনে দাঁড় করায়। সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে শুধু মিয়ানমার থেকে প্রায় ৭০০ কোটি টাকার মসলা অবৈধভাবে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশে।
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের সব লেনদেনে দেশের ব্যাংকিং খাতে ব্যাপক কর্মচাঞ্চল্য বেড়ে তারল্যসঙ্কটে পড়ে যায় আর্থিক খাত এবং কল মানি মার্কেট থেকে চড়া সুদে ধার কর্জের নামে ব্যাংকগুলো। চামড়া ঋণ থেকে শুরু করে ঈদের বোনাস বাবদ বাজারে মুদ্রা সরবরাহ বেড়ে যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংককেও এগিয়ে আসতে হয়। জাল নোট বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। সে জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে নতুন নোট সরবরাহে নামতে হয়। মোদ্দা কথা হজ ও কোরবানি উপলক্ষে মুদ্রা সরবরাহ ব্যবস্থায় যে ব্যঞ্জনা সৃষ্টি হয় ব্যাংকিং খাতে তা তারল্য সঙ্কট সৃষ্টি করে এবং কলমানি মার্কেটে সুদের সূচকের ওঠানামা দেখে তা আঁচ করা যায়। এ সময়ে অবধারিতভাবে রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পায়। হজ ও গরু আমদানি উপলক্ষে সর্বাধিক বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন সত্ত্বেও বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবমতে রিজার্ভ ৩২ বিলিয়ন ছাড়িয়ে যাওয়ার তথ্য সবাইকে উল্লসিত করে। কোরবানির পশু আমদানি ব্যয় হয়Ñ চামড়া রফতানি সূত্রেও। ঈদ উপলক্ষে পরিবহন ব্যবস্থায় বা ব্যবসায় ব্যাপক কর্মতৎপরতা বেড়ে যায়। শহরের মানুষ আপনজনের সাথে ঈদ উদযাপনের জন্য গ্রামে ছোটে। একমাস আগে থেকে ট্রেন বাস লঞ্চের টিকিট বিক্রির তোড়জোড় দেখে বোঝা যায়Ñ এর প্রসার ও প্রকৃতি। নির্ধারিত ভাড়ার চাইতে দ্বিগুণ দামে ফর্মাল টিকিট আর ইনফর্মাল টাউট দালাল ও বিবিধ উপায়ে টিকিট বিক্রির সার্বিক ব্যবস্থা বোঝা যায়Ñ এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় পরিবহন খাতে সাকল্যে দুই হাজার কোটি টাকার বাড়তি ব্যবসা বা লেনদেন হয়ে থাকে। এটিও অর্থনীতিতে প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি করে।
অর্থনীতিতে মুদ্রা সরবরাহ মুদ্রা লেনদেন, আর্থিক কর্মকাণ্ডের প্রসারই অর্থনীতির জন্য আয়। কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং মুদ্রা সরবরাহ গতিশীলতা আনয়ন। ঘূর্ণায়মান অর্থনীতির গতিপ্রবাহে যেকোনো ব্যয় অর্থনীতির জন্য আয়। দেশজ উৎপাদনে এর থাকে অনিবার্য অবদান। যেকোনো উৎসব অর্থনেতিক কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা আনয়ন করে, মানুষ জেগে ওঠে নানান কর্মকাণ্ডে, সম্পদ বণ্টন ব্যবস্থায় একটা স্বতঃপ্রণোদিত আবহ সৃষ্টি হয়। এই আবহকে স্বতঃস্বাভাবিক গতিতে চলতে দেয়ায় দেখভাল করতে পারলে অর্থাৎ সামাষ্টিক ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা ও পারঙ্গমতা দেখাতে পারলে এই কর্মকাণ্ড এ মুদ্রা সরবরাহ, ব্যাংকের এ তারল্য তারতম্য, পরিবহন খাতের এই ব্যয়প্রবাহ একে স্বাভাবিক গতিতে ধরে রাখতে পারলে অর্থনীতির জন্য তা পুষ্টিকর প্রতিভাত হতে পারে। এখানে বিচ্যুতি-বিভ্রান্তি ও বিপত্তি সৃষ্টি হলে একটা স্বাভাবিক সিস্টেম লসের সাফল্যকে ম্লান করে দিতে পারে। হজ ব্যবস্থাপনায় নিজেদের সক্ষমতা বাড়িয়ে (পরিবহন ও আবাসনে নিজেদের অবকাঠামো গড়ে উঠলে এবং কার্যকর ভূমিকায় পাওয়া গেলে, বর্ডার ট্রেডে বাঞ্ছিত নিয়ন্ত্রণ ও পরিবীক্ষণ জোরদার করে, ঘাটে ঘাটে চাঁদা, দুর্নীতি ও দালালি, সব ধরনের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে, চামড়া পাচার রোধকল্পে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে উৎসবের অর্থনীতিকে জিডিপিতে যোগ্য অবদান রাখার অবকাশ নিশ্চিত হতে পারে।
mazid.muhammad@gmail.com

 


আরো সংবাদ



premium cement