ইজারা ছাড়া হাটের টোল তুলছেন আ’লীগ নেতা, সরকারের গচ্ছা ৩৫ লাখ টাকা
- বগুড়া অফিস
- ১১ মে ২০১৯, ১৯:৩৩
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় হাট ইজারা না নিয়েই টোল তুলছেন এক আওয়ামী লীগ নেতা। ওই হাট উপজেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রনে থাকলেও নির্বাহী কর্মকর্তা এবং উপজেলা চেয়ারম্যান বলছেন, বিষয়টি আমরা জানিনা।
তবে, এলাকাবাসীরা বলছে, নির্বাহী কর্মকর্তা এবং উপজেলা চেয়ারম্যানকে ম্যানেজ করেই ওই আওয়ামী লীগ নেতা বারবার হাটের টোল আদায় করছে।
জানা গেছে, ধুনট উপজেলার গোসাইবাড়ী ইউনিয়ন সদরে দুই একর সরকারি জায়গার উপর প্রতি বুধবার সাপ্তাহিক হাট ও প্রতিদিন বাজার বসে। ধুনট উপজেলা পরিষদ থেকে প্রতি বছর পহেলা বৈশাখে হাটটি ইজারা দেওয়া হয়। গোসাইবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লিয়াকত আলী লিটন ৩১ লাখ টাকায় বাংলা ১৪২৪ সালে (২০১৭ইং) হাটটি ইজারা নেন।
প্রতি বছর হাটটি ইজারা দেয়া হলেও গত দুই বছর ধরে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ও ক্ষমতার দাপটে ইজারা ছাড়াই রশিদ দিয়ে অবৈধভাবে খাজনা আদায় করছেন ওই আওয়ামী লীগ নেতা। এতে প্রতি বছর সরকার ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে।
হাটের জায়গা অবৈধভাবে দোকান নির্মাণ করায় হাটের পরিসর ছোট হয়ে এসেছে। ফলে স্থানীয় হাইস্কুল মাঠে হাট লাগানো হয়। একারণে বুধবার হাটের দিন গোসাইবাড়ী এ এ উচ্চ বিদ্যালয় ও কেও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ওইদিন শুধু সকালে বিদ্যালয় খোলা রাখে।
পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক গোসাইবাড়ী বাজারের কয়েক ব্যবসায়ী জানান, হাটটি ইজারা নেওয়ার পর আওয়ামী লীগ নেতা লিটন সরকারি হাটের জায়গায় একশটি দোকানঘর নির্মাণ করেছেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ঘরগুলো অবৈধভাবে ইজারাও দিয়েছেন। এছাড়া সরকারি জায়গায় হাট বসানোর নিয়ম থাকলেও তিনি গোসাইবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে হাট বসিয়েছেন।
গোসাইবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন জানায়, বিদ্যালয়ের মাঠে হাট বসানোর কারণে অনেক ময়লা আবর্জনা মাঠের মধ্যে পড়ে থাকে। এ কারণে তারা মাঠে খেলতে পারেনা।
গোসাইবাড়ী এএ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাজ্জাদুর রহমান বাবলু জানান, বিদ্যালয়ের মাঠে হাট বসানোর কারণে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা করতে অনেক সমস্যা হচ্ছে। এ বিষয়ে একাধিকবার প্রশাসন ও হাট কমিটিকে অবগত করেও কোন প্রতিকার মেলেনি।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতা লিয়াকত আলী লিটন বলেন, হাটটি ইজারা নেওয়ার পর লোকশান হওয়ায় পরবর্তী বছরে স্থানীয় প্রশাসন ও স্থানীয়ভাবে ম্যানেজ করেই হাটের খাজনা আদায় করা হচ্ছে। এছাড়া হাটের জায়গা কম থাকায় বিদ্যালয়ের মাঠে হাট বসছে। তবে এতে শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে না ।
ধুনট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই খোকন বলেন, আমি নির্বাচিত হওয়ার পর একবার মাসিক সভা হয়েছে। কিন্তু হাট বিষয়ে কোন আলোচনা হয়নি। তাই এ হাটের ব্যাপারে কিছু জানা নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা সাংবাদিকদের বলেন, গোসাইবাড়ী হাটটি ইজারা দেওয়ার জন্য একাধিবার দরপত্র আহবান করা হয়েছিল। কিন্তু কেউ দরপত্র ক্রয় না করায় হাটটি ধুনট উপজেলা খাস আদায় কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে যে খাজনা আদায় হবে তা রাজস্ব খাতে জমা হবে। তবে সাবেক ইজারাদার লিয়াকত আলী লিটন খাজনা করছে কিনা তা জানা নেই।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা