২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

‘সিএএ’ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত শাহীনবাগের আন্দোলনকারীরা সরতে নারাজ

-

ভারতে বিতর্কিত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে দিল্লির শাহীনবাগের আন্দোলনকারীরা অন্যত্র যাবেন না বলে জানিয়েছেন। গত মঙ্গলবার বেসরকারি হিন্দি টেলিভিশন চ্যানেল ‘আজতক’কে দেয়া সাাৎকারে বিােভরত নারীরা অবস্থানস্থল থেকে সরে যেতে অস্বীকার করেছেন।
শাহীনবাগের প্রতিবাদী এক নারী জানান, ‘যতণ না ‘সিএএ’-এর মতো ‘কালো আইন’ প্রত্যাহার না করা হবে ততণ আমরা এখান থেকে কোথাও যাবো না। যাবতীয় সমস্যা সত্ত্বেও আমরা প্রতিবাদ বিােভে আসছি।’ গত সোমবার ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সড়ক অবরোধ না করে অন্যত্র প্রতিবাদ কর্মসূচির পে রায় দিয়ে আন্দোলনকারীদের সাথে সংলাপে বসতে মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ করেছে।
এ প্রসঙ্গে হাপুরের বাসিন্দা ও শিার্থী আফসা বলেন, সুপ্রিম কোর্ট বলছে যে সড়ক বন্ধ করা আমাদের অধিকার নয় কিন্তু এখানে দু’মাস ধরে দোকানপাটও বন্ধ রয়েছে এবং লাখ লাখ টাকার তি হচ্ছে। আফসা বলেন, ‘সিএএ-কে অন্য সাধারণ আইনের সাথে তুলনা করা যায় না। এটি অস্তিত্বের প্রশ্ন। সরকারের উচিত আমাদের সাথে কথা বলা। কিন্তু ওঁদের মধ্যে এত অহংকার আছে যে কেউ দেখা করতে প্রস্তুত নয়।’ ‘যতণ ওই আইন প্রত্যাহার না করা হবে, ততণ আমারা এখান থেকে সরবো না’ বলেও আফসা সাফ জানান।
দিল্লির আবু ফজলের বাসিন্দা শাহানা জানান, আমরা আমাদের বাড়িতে প্রতিদিনের কাজ শেষ করে বিােভ কর্মসূচিতে আসি। আমরা প্রতিনিয়ত এখানে আসছি। একজন প্রবীণ নারী বলেন, ‘আমরা এখানে সারাদিন বসে থাকি। আমরা সবাইকে বাড়িতে রেখে এখানে ধরনা-অবস্থানে বসে থাকি, এটা সমস্যা নয় কী?’ আন্দোলনকারী এক নারী বলেন, ‘আমরা অন্য কোথাও যাচ্ছি না। আমরা এ দেশের নাগরিক। এখানে বসে থাকলেও সরকার আমাদের কথা শুনছে না। অন্য কোথাও গেলে কে আমাদের কথা শুনবে?’
তিনি বলেন, ‘ট্র্যাফিকের সমস্যাটি ছোট কিন্তু নাগরিকত্বের বিষয়টি তার চেয়ে বড়। আমরা আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যতের জন্য এখানে বসে আছি। ওই আইনটি কেবল মুসলিমদের জন্য তৈরি করা হয়েছে। যদি আমরা নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে না পারি তাহলে আমাদেরকে ‘অনুপ্রবেশকারী’ বলা হবে। সরকার যদি বলে আমরা ওই আইন কার্যকর করব না, তবেই আমরা এখান থেকে উঠে যাবো।’
সড়ক খালি করার ইস্যুতে লক্ষ্মীনগরের এক প্রতিবাদী নারী বলেন, বিষয়টি স্থান নিয়ে নয়। সরকারি ওই আইন (সিএএ) বিপজ্জনক! সড়ক বন্ধ থাকা বড় ইস্যু নয়। আমাদেরও অনেক সমস্যা হচ্ছে, তবে বড় সমস্যা রোধ করতে ছোট ছোট সমস্যায় পড়তে হয়।’ সরকারের উচিত প্রতিবাদকারীদের যতœ নেয়া। এটি দেশকে বিভক্ত করার একটি আইন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে দিল্লির শাহীনবাগে বিগত দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে অবস্থান-বিােভ চলছে। এ কারণে সেখানকার সড়ক বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছলে, আদালত গত সোমবার বিােভকারীদের সাথে আলোচনার জন্য একটি প্যানেল গঠন করে দিয়েছে যাতে সিনিয়র আইনজীবী সঞ্জয় হেগড়ে ও সাধনা রামচন্দ্রন রয়েছেন। তাদেরকে সাহায্য করবেন কেন্দ্রীয় সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার ওয়াজাহাত হাবিবুল্লাহ।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement