২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রাশিয়ার যুদ্ধবিমানে দক্ষিণ কোরিয়ার সতর্কতামূলক গুলি

রাশিয়ার যুদ্ধবিমান হফাইল ছবি -

আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগে রাশিয়ার যুদ্ধবিমানে সতর্কতামূলক গুলি ছুড়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার বিমানবাহিনীর এফ-১৫ ও এফ-১৬ যুদ্ধবিমান। তবে আকাশ সীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাশিয়া। তা ছাড়া জাপান জানিয়েছে, রাশিয়ার যুদ্ধবিমান আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে জাপানের। তাই দক্ষিণ কোরিয়ার কোনো পদক্ষেপ না নেয়া উচিত ছিল।
দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী জানায়, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টার দিকে প্রথম দফায় রাশিয়ার যুদ্ধবিমান ইস্ট সি বা পূর্ব সাগরে দোকদো দ্বীপ অঞ্চলে দক্ষিণ কোরিয়ার আকাশসীমায় প্রবেশ করে রাশিয়ার যুদ্ধবিমান এবং তিন মিনিট ধরে তা অব্যাহত থাকে। আধা ঘণ্টা পর বিমানটি ফের দক্ষিণ কোরিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘন করে। দ্বিতীয় দফায় চার মিনিট ধরে তা অব্যাহত থাকে। এ সময় দক্ষিণ কোরিয়ার যুদ্ধবিমানগুলো তাদের পিছু ধাওয়া করে। এ সময় তারা সতর্কতামূলক গুলি করে এবং রাশিয়ান সামরিক বিমানগুলোতে আগুন দেখা দেয়। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার যুদ্ধবিমান থেকে সরাসরি কোনো গুলি করা হয়েছে কি না সে বিষয়ে মন্তব্য করেননি দেশটির কর্মকর্তারা।
রাশিয়ার বোমারু বিমানগুলোর পরিচয় সম্পর্কে পরিষ্কার করে এখনো কোনো মন্তব্য করেননি দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের কর্মকর্তারা। তারা শুধু এটুকু বলেছেন, রাশিয়ার ওই যুদ্ধবিমানগুলো আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ বলেছে, রাশিয়ার একটি সামরিক বিমান দু’বার আমাদের আকাশসীমায় অনুপ্রবেশ করেছিল। সাথে সাথে আমাদের সেনারা পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে। রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর বিমান আকাশপথে আগ্রাসন চালানোর পর চীন ও রাশিয়ার দুটি সামরিক বিমান আমাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় আগ্রাসন চালিয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার বার্তা সংস্থা ইয়ানহাপের মতে, প্রথমেই কোরিয়ার এয়ার ডিফেন্স আইডেনটিফিকেশন জোনে (কেএডিআইজেড) প্রবেশ করতে দেখা যায় রাশিয়ার বোমারু বিমানকে। এরপরই মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৯মিনিটে তারা আকাশসীমা লঙ্ঘন করে। এরপরই রাশিয়ার বিমানকে বিতাড়িত করতে এফ-১৫ ও এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পাঠায় দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী। সতর্কতামূলক গুলি ছোড়ার পর রাশিয়ার বিমান দক্ষিণ কোরিয়ার আকাশসীমা থেকে চলে যায় স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে। এর ১৮ মিনিট পরে আবারো রাশিয়ার যুদ্ধবিমান দক্ষিণ কোরিয়ার আকাশসীমায় প্রবেশ করে। এ সময় আবারো এফ-১৫ ও এফ-১৬ যুদ্ধবিমান তার পিছু ধাওয়া করে। এবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৫৬ মিনিটে তা দক্ষিণ কোরিয়ার আকাশসীমা থেকে চলে যায়।
কেএডিআইজেড অঞ্চলে এর আগেও এমন আকাশসীমা লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলেও এবারই প্রথম রাশিয়ার একটি সামরিক বিমান এ ঘটনা ঘটিয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার দাবি, মঙ্গলবারই দিনের শুরুতে রাশিয়ার দুটি ও চীনের দুটি যুদ্ধবিমান আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে। মাত্র ২৫ মিনিটের মধ্যে যৌথভাবে এই যুদ্ধবিমানগুলো আকাশসীমা লঙ্ঘন করে। এ ঘটনায় দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানাতে রাশিয়া ও চীনের দূতাবাসের কর্মকর্তাদের তলব করেছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তাদের দুইটি টু-৯৫ কৌশলগত বোমারু বিমান পরিকল্পিত টহল চালিয়েছে। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘন করেনি। এ-৫০ যুদ্ধবিমান ওড়ানোর কথা উল্লেখ না করে দক্ষিণ কোরিয়ার যুদ্ধবিমান থেকে কোনো সতর্কবার্তা দেয়ার কথা অস্বীকার করেছে রাশিয়া। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, দক্ষিণ কোরিয়ার দুইটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান অপেশাদার উপায়ে রাশিয়ার বোমারু বিমানের পথ অতিক্রম করেছে এবং কোনো যোগাযোগও করেনি। তেমনি চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, দক্ষিণ কোরিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা শনাক্তকরণ এলাকা সীমারেখা অঙ্কিত আকাশ সীমা নয় এবং সেখানে সব দেশ স্বাধীনতা ভোগ করে।


আরো সংবাদ



premium cement