২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

খাশোগি হত্যায় যুবরাজের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে : জাতিসঙ্ঘ

মোহাম্মদ বিন সালমান; জামাল খাশোগি -

সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যায় সৌদি যুবরাজসহ উচ্চপদস্থ সৌদি কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার বিষয়ে ‘বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ’ আছে বলে জানিয়েছেন জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ। গতকাল বুধবার এ তথ্য জানিয়ে খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন ওই বিশেষজ্ঞ।
এক রিপোর্টে বিচারবহির্ভূত ও নির্বিচার হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত জাতিসঙ্ঘের বিশেষ দূত অ্যাগনেস কায়ামার্ড বলেন, খাশোগি হত্যায় সৌদি যুবরাজসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার বিষয়ে নির্ভরযোগ্য সাক্ষ্য রয়েছে। একইসাথে ঘটনার সাথে জড়িত সৌদি যুবরাজসহ ‘প্রত্যেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার’ ভূমিকা নিয়ে নতুন করে তদন্তেরও প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন তিনি।
তবে বুধবারের ওই রিপোর্টটিতে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়নি। সেটাতে পুনরায় তদন্ত করার মতো উপযুক্ত প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জোর দেয়া হয়েছে। একইসাথে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে অপরাধীদের খুঁজে বের করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
তদন্তে খুঁজে পাওয়া প্রমাণের বিষয়ে উদাহরণ দিতে গিয়ে কায়ামার্ড বলেন, ‘যুবরাজের ক্ষমতার বিষয়ে খাশোগি নিজেও পুরোপুরি সচেতন ছিলেন। তিনি যুবরাজের বিষয়ে ভিত ছিলেন।’ তিনি বলেন, খাশোগির ঘটনায় সৌদি আবর ও তুরস্কের করা তদন্ত আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ দেশ দু’টির তদন্ত আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করা হয়নি।
জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের কাছে খাশোগি হত্যার ঘটনায় আন্তর্জাতিকভাবে তদন্ত করার আবেদন জানিয়েছেন কায়ামার্ড। তিনি আবেদন করেছেন, আন্তর্জাতিকভাবে তদন্ত করে এ ঘটনার পেছনে জড়িত সব অপরাধীকে খুঁজে বের করতে হবে। একইসাথে অপরাধীদের আনুষ্ঠানিক বিচারের মুখোমুখি করার যথাযথ উপায় বের করতে হবে।
কায়ামার্ড এই ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইকেও খাশোগি হত্যার তদন্ত করতে অনুরোধ করেছেন। খাশোগির যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস সূত্রে সেদেশেও বিচার প্রক্রিয়া শুরু করাটা উচিত বলে মতো দিয়েছেন তিনি।
তদন্তের বিষয়ে কায়ামার্ড বলেন, অন্যান্য বিষয়ে সাথে তিনি হত্যাকাণ্ডের সময়কার সিসিটিভি ফুটেজও দেখেছেন। গতকালের ওই রিপোর্টে আরো প্রকাশ করা হয়েছে, তুরস্কের তদন্ত কার্যক্রমে বাধা দেয়ার জন্য সৌদি আরব ইচ্ছাকৃতভাবে চেষ্টা করেছিল। দেশটি হত্যাকাণ্ডের জায়গাটি পুরোপুরি ধুয়েমুছে পরিষ্কার করেছিল।
গত বছরের ২ অক্টোবরে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনসুলেটে সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যার শিকার হন। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সমালোচক হিসেবে পরিচিত ছিলেন খাশোগি। তুরস্ক বলছে, সৌদি সরকারের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের পাঠানো একদল ঘাতক জামাল খাশোগিকে হত্যা করেছে। প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে বৈশ্বিক প্রচণ্ড চাপের মুখে খাশোগিকে হত্যার অভিযোগ স্বীকার করে সৌদি। তবে তার লাশের সন্ধান এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। এ হত্যার সাথে যুবরাজের সংশ্লিøষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করা হয়। খাশোগি হত্যার ঘটনায় ১১ জন সন্দেহভাজনকে বিচারের মুখোমুখি করার কথা জানিয়ে আসছে সৌদি সরকার। তবে তাদের বিচার প্রক্রিয়া চলছে অত্যন্ত গোপনে। জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত হাতেগোনা কয়েকটি শুনানি হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement