২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জে. হাফতারকে ট্রাম্পের সমর্থন প্রতিবাদে ত্রিপোলিতে বিক্ষোভ

রাজধানী ত্রিপোলিতে খলিফা হাফতারকে প্রত্যাখ্যান করে হাজার হাজার মানুষের বিক্ষোভ মিছিল :এএফপি -

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলি অভিমুখী বাহিনীর কমান্ডার জে. খলিফা হাফতারের প্রতি সমর্থন ঘোষণা করেছেন। তিনি গত সোমবার সরাসরি হাফতারের সাথে টেলিফোনে কথা বলে তার প্রতি সমর্থন ঘোষণা করেন বলে হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে। ট্রাম্পের সর্মথনের প্রতিবাদে শুক্রবার রাজধানী ত্রিপোলিতে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেন।
টেলিফোনালাপে ট্রাম্প তার ভাষায়, ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে’ হাফতারের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, লিবিয়ার তেল সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য হাফতার যে চেষ্টা করছেন তা তার ভালো লেগেছে। এ সময় ট্রাম্প ও হাফতার লিবিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়েও আলোচনা করেন বলে হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে।
জাতিসঙ্ঘসহ আন্তর্জাতিক সমাজের স্বীকৃত একটি সরকার লিবিয়ার রাজধানী নিয়ন্ত্রণ করছে। কিন্তু সেই সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে গত প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে ত্রিপোলি দখলের চেষ্টা করছে ভারী অস্ত্রে সজ্জিত হাফতার বাহিনী। গত তিন সপ্তাহের এ সংঘর্ষে এ পর্যন্ত দুই শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন।
হাফতারের সাথে ট্রাম্পের ফোনালাপ থেকে পর্যবেক্ষকরা ধারণা করছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার ইউরোপীয় মিত্রদের বিপক্ষে গিয়ে লিবিয়ার জাতিসঙ্ঘ সমর্থিত সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এ ছাড়া তিনি লিবিয়াকে হাফতারের হাতে ছেড়ে দিয়ে দেশটির তেল সম্পদের ওপর একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে চান। এ আলাপের মাধ্যমে লিবিয়ার ব্যাপারে মার্কিন নীতিতে বড় পরিবর্তন এনেছেন ট্রাম্প।
লিবিয়ার চলমান সংঘর্ষ বন্ধ করার লক্ষ্যে সম্প্রতি জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদে ব্রিটেনের পক্ষ থেকে আনা একটি প্রস্তাবের খসড়া নাকচ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। ওই খসড়ায় জে: হাফতারকে লিবিয়ার চলমান সংঘর্ষের জন্য দায়ী করার কারণে রাশিয়া এর বিরোধিতা করে। তবে যুক্তরাষ্ট্র তার বিরোধিতার কোনো কারণ জানায়নি। হাফতারের প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিসর প্রকাশ্যে সমর্থন ঘোষণা করেছে এবং হাফতার ত্রিপোলি অভিমুখে অভিযান শুরু করার কয়েক দিন আগে সৌদি আরব সফর করেন। ত্রিপোলিতে ক্ষমতাসীন সরকার ফ্রান্সকে জে: হাফতারের প্রতি সমর্থন জানানোর দায়ে অভিযুক্ত করলেও প্যারিস এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
লিবিয়ায় সাবেক উপনিবেশ স্থাপনকারী ইতালি সরকার ত্রিপোলিতে ক্ষমতাসীন সরকারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট বলেছেন, জে: হাফতারের ত্রিপোলিমুখী অভিযানের কোনো ব্যাখ্যা থাকতে পারে না। খলিফা হাফতার লিবিয়ার একজন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা যিনি দেশটির সাবেক একনায়ক কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফির ক্ষমতা সুসংহত করার কাজে সহযোগিতা করেছিলেন। কিন্তু গাদ্দাফির সাথে মতবিরোধের জের ধরে ১৯৬৯ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছা নির্বাসনে চলে যান।
২০১১ সালে সশস্ত্র গণঅভ্যুত্থানে গাদ্দাফি ক্ষমতাচ্যুত ও নিহত হওয়ার পর হাফতার দেশে ফিরে একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কমান্ডারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে ত্রিপোলি সরকার তাকে দেশের সেনাপ্রধানও নিযুক্ত করে। কিন্তু বিভিন্ন বিষয়ে মতপার্থক্যের জের ধরে তিনি আবার ত্রিপোলি সরকারের বিপক্ষে চলে যান।


আরো সংবাদ



premium cement