২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

যুক্তরাষ্ট্র সেনা প্রত্যাহার করলে আফগান যুদ্ধে প্রতিবেশীরা জড়িয়ে পড়তে পারে মার্কিন রিপোর্টে হুঁশিয়ারি

-

যুক্তরাষ্ট্র যদি আফগানিস্তান থেকে তার সেনাবাহিনী সরিয়ে নেয়, তাহলে তালেবান শান্তি আলোচনায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে এবং প্রতিবেশী দেশগুলো আফগান যুদ্ধে আরো বেশি করে জড়িয়ে পড়বে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত এক রিপোর্টে হুঁশিয়ারি জানানো হয়েছে। তবে রিপাবলিকান দলের সিনেটর র্যান্ড পল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে সাম্প্রতিক এক বৈঠকের পর জানিয়েছেন, ট্রাম্প আফগানিস্তানে তার দেশের ১৭ বছরের লড়াইয়ের অবসান ঘটাতে প্রস্তুত। ট্রাম্প বলেছেন, মার্কিন সেনারা এখন অনেক জায়গায় এবং অনেক দীর্ঘ সময় ধরে যুদ্ধ করছে। এ অবস্থা আর চলতে পারে না।
প্রতিরক্ষাবিষয়ক মার্কিন থিঙ্কট্যাঙ্ক র্যান্ড করপোরেশনের জন্য এ রিপোর্টটি লিখেছেন আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের দু’জন বিশেষ দূত এবং দু’জন সাবেক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা। গত মাসে ট্রাম্প আফগানিস্তানে থাকা ১৪ হাজার সৈন্যের অর্ধেককে প্রত্যাহার করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এ প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে তার পরিণতি সম্পর্কে হুঁশিয়ার করে এ রিপোর্ট তৈরি করা হয়। এতে বলা হয়, আফগানিস্তানে পশতু, তাজিক, উজবেক ও হাজারার মতো যেসব নৃগোষ্ঠী রয়েছে, তাদেরকে বিভিন্ন সময় পাকিস্তান, রাশিয়া, ইরান, ভারত ও উজবেকিস্তান সহায়তা করে থাকে। যদি যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে তার সেনা সরিয়ে নেয়, তাহলে কাবুল সরকার যেমন দুর্বল হয়ে পড়বে তেমনি ভঙ্গুর হয়ে পড়বে দেশটির অর্থনীতিও। এ ক্ষেত্রে আফগান কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থনৈতিক ভিত্তি ভেঙে গেলে সেখানকার বিভিন্ন গোষ্ঠীর সাথে প্রতিবেশী দেশগুলোর সম্পর্ক জোরদার হবে।
রিপোর্টে দাবি করা হয়, পাকিস্তানে দীর্ঘ সময় ধরে তালেবান বিভিন্ন সুবিধা পেয়ে আসছে। মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা হলে পাকিস্তান আরো খোলাখুলিভাবে তাদের সমর্থন করবে। পাকিস্তান অবশ্য সব সময়ই এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। একই সাথে তারা জানায়, তারা আফগানিস্তানে হামলা করার জন্য কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে তাদের ভূমি ব্যবহারের অনুমতি দেয় না। রিপোর্টে লেখকেরা আরো উল্লেখ করেন, রাশিয়া ও ইরান সাধারণভাবে কাবুল সরকারকে সমর্থন দিয়ে আসছিল। কিন্তু এখন তারা তালেবানকেও সীমিত আকারে সমর্থন করছে।
রিপোর্টে আরো বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তালেবানের আলোচনার প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সময়সীমা নির্ধারণ করা। তবে তাড়াতাড়ি সেনা প্রত্যাহারে তালেবান যুক্তরাষ্ট্রের সাথে শান্তি আলোচনায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে। অন্য দিকে তালেবানের সাথে আলোচনায় মার্কিন প্রত্যাশা হলোÑ তালেবান অন্য সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো থেকে পৃথক হয়ে যাবে এবং তারা আফগান রাজনীতি ও নিরাপত্তার অংশ হিসেবে ভূমিকা পালন করবে। এ ক্ষেত্রে যদি তালেবান নেতৃবৃন্দ মার্কিন সেনাদের নিঃশর্ত প্রত্যাহার পায় বা চায় তাহলে এর বিনিময়ে তারা যুক্তরাষ্ট্র বা মার্কিন সমর্থিত আফগান সরকারের সাথে চুক্তি করার ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দিতে পারে।
দ্রুত মার্কিন সেনা প্রত্যাহারে আরো যেসব পরিস্থিতির উদ্ভব হতে পারে, সেগুলোরও কিছু উল্লেখ করা হয়েছে এ রিপোর্টে। এতে বলা হয়েছে, মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পরপরই ন্যাটোকে আফগানিস্তান ত্যাগ করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য যেসব বিদেশী দেশের নাগরিকেরা সেখানে রয়েছেন, তার পরিমাণ কমিয়ে আনতে হবে। বিদেশ থেকে যেসব আর্থিক ও নিরাপত্তা সাহায্য পাওয়া যেত সেগুলোও হ্রাস পাবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement