জাতীয় অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, রাষ্ট্রের কোনো মানুষ নিরাপদে নেই। এমন অনিরাপদ পরিস্থিতি আমরা ’৭১ সালেই দেখেছিলাম। এর বড় উদারহণ হচ্ছে এই যে ধর্ষণ, এটি কেবল ধর্ষণ নয়, গণধর্ষণ। এসব অন্যায় রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। আমরা দেখেছি, নুসরাত জাহানের ঘটনায় পুলিশ জড়িত হয়ে পড়ল, এই ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা জড়িত ছিলেন এবং সবাই মিলে প্রমাণ করতে চাইল যে নুসরাত আত্মহত্যা করতে চেয়েছে। ইতোমধ্যে একজন নার্সকে বাসের মধ্যে ধর্ষণ করে হত্যা করা হলো। বলা হচ্ছে উন্নতি হচ্ছে, কিন্তু দেশে উন্নতির অন্তরালে মানুষ আর্তনাদ করছে।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সিরাজুল ইসলাম লেকচার হলে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। ‘শ্রমিক আন্দোলনের একাল সেকাল’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থার বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে ঢাবির এ ইমেরিটাস অধ্যাপক বলেন, ‘আজকে দেশে যে রাজনৈতিক অবস্থা বিরাজ করছে, তার চেয়ে খারাপ অবস্থা অতীত ইতিহাসে ছিল কি-না আমার জানা নেই। আমরা দুর্ভিক্ষ দেখেছি, যে দুর্ভিক্ষে অনেক মানুষ মারা গেছে। কিন্তু আজকের বাংলাদেশে দৃশ্যমান কোনো দুর্ভিক্ষ না থাকলেও নীরব দুর্ভিক্ষ আছে।
দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুর্নীতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনেকে মুক্তিযুদ্ধের ভুয়া সনদ দিয়ে পদোন্নতি নিতে গিয়ে ধরা খেয়েছে। অথচ যারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করবে তারাই যদি দুর্নীতি করে, তাহলে রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা অবস্থা কী তা সহজে অনুধাবন করা যাচ্ছে।
শ্রমিক সংগঠনের বিষয়ে তিনি বলেন, শ্রমিক সংগঠনকে মনে করা হয় এটি কমিউনিস্টদের সংগঠন। অথচ এসব সংগঠনের সবসময় নেতৃত্বে ছিলেন শ্রমিকরাই। আজকে সেই শ্রমিক সংগঠনের নেতা যারা দু’জনই শ্রমিক ছিলেন এবং তাদের সম্মাননা দেয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে শ্রমিক নেতা শহিদুল্লাহ চৌধুরী এবং শাহ আতিউল ইসলামকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। তাদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। আলোচনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন প্রবীণ শ্রমিক নেতা শহিদুল্লাহ চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলনের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল। এতে উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জুনায়েদ সাকি, ছাত্রফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।
বাংলাদেশ ট্রেড শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি শাহ আতিউল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতার পর এ দেশে মালিক শ্রেণী লুটপাট করে দুবৃর্ত্ত পুঁজি গড়ে তোলে। যার জন্য শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে আন্দোলন করতে হয়। শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে। তা না হলে শ্রমিকরা শুধু শোষিত হতে থাকবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা