০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ছেলের নির্যাতন থেকে রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য চান এক অসহায় মা

ছেলের নির্যাতন থেকে রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য চান এক অসহায় মা - নয়া দিগন্ত

মাদকাসক্ত দুই ছেলের নির্যাতন ও হুমকীতে প্রাণভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ৭৫ বছরের বৃদ্ধা নাজমা বেগম। ছেলে কায়সার আহমেদ ও আবুল কালাম মাদকাসক্ত। এমনকি মাদক ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত দুজন। এলাকায় ঘুরে বেড়ায় অবৈধ অস্ত্র নিয়ে। নিজেদের নামে বাড়ি লিখে না দেওয়ায় দুই ছেলে প্রায় সময় তাকে মারধর করে, অত্যাচার করে। ছেলে কায়সার আহমেদ মেরে আহত করার পর নিরুপায় হয়ে ২০১৮ সালের ১০ জুলাই নাজমা বেগম তার বিরুদ্ধে মূখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলা করেন। এতে ছেলে কায়সার আহমেদ আরো ক্ষিপ্ত হয়ে গত বছরের ১৬ জুলাই দুই ছেলে মিলে ভীষণ মারধর করে জখম করে।

ছেলেদের অত্যাচার থেকে রক্ষা পেতে মামলা করা ছাড়াও পতিকার চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক এবং ডিএমপি কমিশনার বরাবর লিখিত আবেদন করেন তিনি। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে নিজ বাড়িতে ফিরতে চান হতভাগ্য এ নারী। কোথাও প্রতিকার না পেয়ে ছেলেদের অত্যাচার থেকে রক্ষা পেতে এখন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাহায্য চেয়েছেন।

মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট বার ভবনে আইন, আদালত ও সংবিধান বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম (এলআরএফ) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজড়িত কন্ঠে এমন অভিযোগ করেছেন পুরান ঢাকার সূত্রাপুরের দেবেন্দ্র রোডের নাজমা বেগম। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন প্রতিবেশী আলমগীর হোসাইন, নাতি মাহাদী হাসান ও আইনজীবী কামরজ্জামান।

নাজমা বেগম জানান, স্বামী কাঁচামালের ব্যবসা করতেন। মারা যান ১৯৯৩ সালে। স্বামী মারা যাওয়ার পর বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে বাড়ি করতে হয়েছে। এরপর থেকে ছয় ছেলে-মেয়েকে একাই দেখা-শুনা করতে হয়েছে নাজমা বেগমের। স্বামী বেঁেচ থাকতে দুই মেয়ের বিয়ে দিলেও বাকি দুজনের বিয়ে দিতে হয়েছে মাকেই। তবে দুই ছেলে বিয়ে করেছে নিজেদের পছন্দে। শরীরে পেশার ডায়াবেটিস, হার্ট ও কিডসি রোগসহ নানা রোগ বাসা বেধেছে। মেয়েরা সবাই শশুর বাড়িতে থাকে। কিন্তু বৃদ্ধা নাজমা বেগমের জায়গা হচ্ছে না নিজের বাড়িতেই।

সম্পত্তি দুই ছেলের নামে লিখে দিতে বেশ কয়েক বছর থেকেই চাপ দিচ্ছিল তারা। তবে তা লিখে না দেওয়ায় কাল হলো নাজমার। একবছর থেকে খেয়ে না খেয়ে থাকতে হচ্ছে বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের আশ্রয়ে। তবে তিনি আর এভাবে থাকতে চাননা। শেষ বয়সে নিজের বাড়িতে থেকে ইবাদত-বন্দেগী করে মরতে চান। আর এজন্য প্রধানমন্ত্রীরও হস্তক্ষেপ চেয়েছেন ৭৫ বছর বয়সী এই বৃদ্ধা।

রাজধানীর সূত্রাপুরের দেবেন্দ্রনাথ রোডের ২২/২ নাম্বার বাড়িটি তার নিজের নামে। পাঁচতলা এই বাড়িটি থেকে ভাড়া আসে দেড় লাখ টাকারও বেশি। নাজমা বেগম বলেন, আমার স্বামী আ.কাদের বেপারী বেঁচে থাকতে থাকতে প্রায়ই ছেলে কাউসার তার কাছে টাকা চাইতো এবং চুরি করতো। একদিন টাকা দিতে না চাইলে কাউসার তাকে পিস্তল নিয়ে ধাওয়া করে। আর সে সময়ই তিনি হার্ট অ্যাটাক করে মারা যান। তিনি আরও বলেন, আমার সন্ত্রাসী দুই ছেলে এমন কোন কাজ নেই যা তারা করতে পারে না। দুই ছেলের মতো এমন জঘন্য সন্তান যেন যাতে পৃথিবীর কোন মা তার গর্ভে ধারণ না করে।


আরো সংবাদ



premium cement