২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দৌলতদিয়ায় যানবাহনের সিরিয়াল থাকলেও জনদুর্ভোগ কমেছে

-

দৌলতদিয়ায় নদী পারের জন্য দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলো থেকে আসা যানবাহনগুলোর কিছুটা সিরিয়াল থাকলেও জনদুর্ভোগ অনেকটা কমে এসেছে। নদীর স্রোত কম থাকা, এ রুটের সবগুলো ফেরি সচলভাবে নিয়মিত চলাচল করা ছাড়াও প্রশাসনের কড়া নজরদারিতে দুষ্কৃতকারীদের দৌরাত্ম্য কম থাকার কারণে এবার ঈদের আগে ও পরে দৌলতদিয়া ঘাট পরিস্থিতি সহনীয় পর্যায় রয়েছে।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার কর্মব্যস্ত মানুষ প্রিয়জনের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি শেষে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন কর্মস্থলে ফেরা এখনো অব্যাহত রেখেছেন। গতকাল রোববার থেকে পুরোদমে সরকারি-বেসরকারি অফিস চালু হয়ে যাওয়ায় এ দিনও দৌলতদিয়া ঘাটে কর্মমুখী মানুষের চাপ ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে এ নৌরুটে যানবাহনের কিছুটা সিরিয়াল থাকলেও পর্যাপ্ত পরিমাণ ফেরি চালু থাকায় অল্প সময়ের মধ্যে গাড়িগুলো নদী পাড় হতে পারছে। ফলে কর্মমুখী মানুষের তেমন একটা দুর্র্ভোগ পোহাতে হচ্ছে না। এতে চালক ও যাত্রীরা অনেকটা স্বস্তিতেই ছিলেন।
জানা যায়, রোববার বিকেল পর্যন্ত বেশির ভাগ মানুষ ঈদের ছুটি শেষে কর্মে যোগ দিতে রাজধানীসহ আশপাশ এলাকার উদ্দেশ্যে দৌলতদিয়া ঘাট পার হতে দেখা যায়। এতে সকাল থেকেই গাড়ির চাপ বেড়ে গিয়ে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় দুপুরের পর থেকে নদীপারের অপেক্ষায় আটকা পড়া বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকারের সারি দীর্ঘ হতে থাকে। কর্মস্থলগামী মানুষকে বয়ে আনা অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে গতকাল বিকেল ৫টা নাগাদ দৌলতদিয়ায় ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে মহাসড়কের দৌলতদিয়া মডেল হাইস্কুল পর্যন্ত যানবাহনের সারি দেখা যায়। তবে নৌরুটে পর্যাপ্ত ফেরি চালু থাকায় যানবাহনগুলোকে মহাসড়কে দীর্ঘ সময় আটকে থাকতে দেখা যায়নি। তা ছাড়া ¯্রােত কম থাকায় নদী পার হতে ফেরিগুলোকে আগের মতো অতিরিক্ত সময় ব্যয় করতে হচ্ছে না। সিরিয়ালে আটকে থাকা সাধারণ বাসযাত্রীরা কিছুটা দুর্ভোগ পোহালেও তাড়াতাড়ি ফেরিতে উঠতে পাড়ায় তাড়া অনেকটা আনন্দ প্রকাশ করেন।
তা ছাড়া নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি জানান, সামনে দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। এ কারণে ঘাটে জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারীরা দূরে থাকায় এবার ঈদে কোনো বিকল্প যানজট সৃষ্টি হয়নি। ফলে দৌলতদিয়া ঘাট ছিল যাত্রী ও চালকদের স্বস্তির কারণ।
এ দিকে রোববার মহাসড়কে যানবাহনের চাপ অপেক্ষাকৃত কম থাকা সত্ত্বেও শত শত ব্যক্তিগত গাড়ি, অটোরিকশা, মাহেন্দ্রের মতো ছোট যানবাহনগুলোকে গোয়ালন্দ বাজার পদ্মা মোড় থেকে পূর্ব উজানচর ও চর দৌলতদিয়ার বিকল্প সরু সড়ক দিয়ে অন্তত ৮ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ ঘুরিয়ে ঘাটে পৌঁছাতে বাধ্য করা হয়। গ্রামের সরু সড়ক দিয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে পৌঁছাতে এ গাড়িগুলোকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এতে ওই সব যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। যাত্রীদের কাছ থেকে ওই সব যানবাহনের চালকরা তিন-চার গুণ অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করেন।
রাজবাড়ীর ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আসাদুজ্জামন আসাদ জানান, মহাসড়কের শৃঙ্খলা রক্ষায় ট্রাফিক পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছেন। ফলে কোনো দুর্ভোগ ছাড়াই যাত্রী ও যানবাহনগুলো দ্রুততার সাথে লঞ্চ-ফেরিতে উঠতে পারছে। তবে মহাসড়কের ওপর অনাকাক্সিক্ষত তীব্র যানজট এড়াতে ছোট যানবাহনগুলোকে পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিকল্প সড়ক দিয়ে ঘুরিয়ে দেয়া হচ্ছে। তবে যানবাহনের চাপ কমে এলে ছোট যানবহনগুলোকে আগের মতো চলাচল করতে দেয়া হবে।
দৌলতদিয়া ঘাট বিআইডব্লিউটিসির ম্যানেজার আবু আব্দুল্লাহ জানান, দৌলতদিয়া ঘাটে যানবাহনের কোনো চাপ নেই। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফেরিগুলো যাত্রী ও যানবাহন নিয়ে তৎক্ষণাৎ ছেড়ে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বেশির ভাগ ফেরিই অনেকটা ফাঁকা যাচ্ছে। তা ছাড়া নদীর ¯্রােত কম থাকায় নদী পার হতে ফেরিগুলোর অতিরিক্ত সময় লাগছে না। রুটে সবগুলো ফেরি চালু থাকায় ঈদের বাড়তি চাপ সামাল দিতে তাদের তেমন একটা বেগ পেতে হচ্ছে না।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement