২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`


‘পাসপোর্ট পেতে হলে হিন্দু হয়ে যান’

-

বিয়ের ১২ বছর পর স্বামীর ধর্ম নিয়ে কোনো প্রশ্ন শুনতে হবে, এটা কল্পনাও করতে পারেননি ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের বাসিন্দা তন্বী শেঠ।
শেঠ টুইটারে অভিযোগ করেছেন, লèৌয়ের পাসপোর্ট সেবাকেন্দ্রে কর্মরত এক অফিসার সবার সামনে তাকে প্রশ্ন করেছেন, বিয়ের পরও কেন নিজের পদবি পরিবর্তন করেননি তিনি।
স্বামীকেও ডেকে বলা হয়, পাসপোর্ট নবায়ন করতে হলে তাকে হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হতে হবে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে ট্যাগ করে পাঁচ ভাগে পোস্ট করা টুইটে শেঠ লিখেছেন, তিনি আনাস সিদ্দিকিকে ১২ বছর আগে বিয়ে করেছেন, তাদের বছর ছয়েকের এক সন্তানও আছে। কিন্তু ভারতের বেশির ভাগ নারীই যেমন বিয়ের পর পদবি বদল করে স্বামীর পদবি রাখেন, সেটা তিনি করেননি।
‘একজন মুসলিমকে বিয়ে করেও কেন পদবি বদল করিনি, সেই প্রশ্ন তুলে আমার পাসপোর্টের নবায়ন আটকে দেন বিকাশ মিশ্র নামে ওই অফিসার। সবার সামনে আমাকে অপমান তো করাই হয়, এমনকি আমার স্বামীকে ডেকে পাঠিয়ে বলা হয়, হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করলে তবেই পাসপোর্ট নবায়ন করা হবে’, লিখেছেন শেঠ।
সুষমা স্বরাজকে উদ্দেশ করে তন্বী শেঠ লিখেছেন, ‘বিচারের প্রতি এবং আপনার প্রতি আমার গভীর আস্থা নিয়ে একই সাথে মনে প্রচণ্ড রাগ আর অনিশ্চয়তার মধ্যে এই টুইট করতে হচ্ছে আমাকে। বিকাশ মিশ্র নামে ওই পাসপোর্ট অফিসার প্রশ্ন তুলেছেন কেন আমি একজন মুসলমানকে বিয়ে করেছি, আর কেনই বা আমি বিয়ের পরে পদবি বদল করিনি। বিয়ের পর থেকে কোনা দিন এত অপমানিত হইনি।’
লèৌয়ের রিজিওনাল পাসপোর্ট অফিসার পীযুষ ভার্মা গত বুধবারই সংবাদমাধ্যমের কাছে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছিলেন। গতকাল সকালে ওই দম্পতিকে নিজের দফতরে ডেকে তাদের হাতে পাসপোর্ট তুলে দিয়েছেন তিনি।
ভার্মা জানিয়েছেন, ‘পাসপোর্ট নবায়নের জন্য যে সব নথি তারা জমা দিয়ে ছিলেন, তাতে কোনো অসঙ্গতি নেই। তাই নতুন পাসপোর্ট দিয়ে দেয়া হয়েছে। আর যে অফিসার ওই দুর্ব্যবহার করেছিলেন, তাকে বদলি করে দেয়া হয়েছে, সাথে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেয়া হয়েছে।’
বিয়ের পর নারীরা পদবি বদল করবেন কি না, সেটা তাদের ব্যক্তিগত ইচ্ছা। ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী পদবি বদল করতেই হবে, এমন কোনো নিয়ম নেই ভারতে। অনেক হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারীও আজকাল বিয়ের আগের পদবিই রেখে দেন, অনেকে আবার পুরনো পদবির সাথে স্বামীর পদবিÑ একসাথে দু’টিই ব্যবহার করেন। আইনানুযায়ী কোনো সরকারি কাজকর্মে বা নথিতে এই নিয়ে বাধ্যবাধকতা নেই।
তবে অনেক েেত্রই সরকারি কর্মকর্তারা বিয়ের রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট দেখতে চান অথবা বলেন অ্যাফিডেভিট করিয়ে নিয়ে আসতে।


আরো সংবাদ



premium cement