২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নিয়োগ বাণিজ্যের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা চান ইবি শিক্ষকরা

নিয়োগ বাণিজ্যের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা চান ইবি শিক্ষকরা - ছবি : সংগ্রহ

শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্য সংক্রান্ত অডিও রেকর্ড ফাঁস হওয়া নিয়ে ইসলামী বিশ্ববদ্যিালয়ের চলছে নানামুখী আলোচনা-সমালোচনা। বিভিন্ন মহল থেকে শিক্ষকেরা নিয়োগ বাণিজ্যের সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন। একই সাথে বাণিজ্য রোধে করে প্রকৃত মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। অন্যথায় উচ্চ শিক্ষার উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে বলেও মনে করছেন।

সম্প্রতি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে দশটি বিভাগে ৩৭জন শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। এই নিয়োগের প্রায় শতভাগ প্রার্থীই টাকার বিনিময়ে নিয়োগ পেয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় সমালোচনা ঝড় উঠেছে বিভিন্ন মহলে। দেশব্যাপী সমালোচিত এই নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে দৈনিক নয়া দিগন্তকে তাদের অবস্থান জানিয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষক-
মার্কেটিং বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. জাকারিয়া রহমান বলেন, ‘কাজ করতে গেলে সমালোচনা হয়। সুযোগ সন্ধানীরা সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করবেই। সে ক্ষেত্রে প্রশাসনকে আরো সর্তকতার সাথে এগুতে হবে। সমালোচকদের উচিৎ পাশে থেকে যে কোন অনিয়োমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসনকে সহযোগিতা করা।’ তিনি বলেন, ‘ইবি প্রশাসনকে অনুরোধ করব, অনিয়মের প্রশ্নে নো কম্প্রমাইজ। গুটিকয়েকের জন্য পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানহানী মেনে নেওয়া যায় না।’
শাপলা ফোরামের সভাপতি ও পরিসংখ্যান বিভাগের সাবেক সভাপতি প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘কর্তাব্যক্তিরা যদি মনে করেন যে, চলমান নিয়োগে কিভাবে কী করা হয়েছে তা কেউই জানে না তবে সেটা ভুল। আমি বলব- প্রকাশিত অপরাধকে গুরুত্ব সহকারে বিচার করুন। অপ্রকাশিত অপরাধ থাকলে তা এখনই থামিয়ে দিন। এইভাবে সামনের দিকে এগুতে থাকলে অবশ্যই এই ক্যাম্পাসের জন্য মঙ্গলজনক হবে না।’

‘প্রগতিশীল শিক্ষকদের মধ্যে সৎ ও দক্ষ বড় একটি অংশ প্রশাসন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে’ বলে যে প্রচার আছে সে বিষয়ে ড. কামাল বলেন, ‘ব্যক্তিত্বসম্পন্ন শিক্ষকেরা প্রশাসনের চাটুকারিতা করেন না। প্রশাসনের প্রয়োজনে যথাযথ সম্মানের সাথে তাদের ডাকা হলে ন্যায় সঙ্গত সকল ক্ষেত্রে কাজ করে থাকেন তারা।’
প্রফেসর ড. নজিবুল হক বলেন, ‘বর্তমান প্রশাসন সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তাদের কোনো কাজে নিজ দলীয় বা রাজনৈতিকভাবে ভিন্নমত ষণকারী কেউ সামান্যতম বাধা প্রদান করতে দেখা যাচ্ছে না। এমন অবস্থায় এই বৃহৎ নিয়োগ বাণিজ্য স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে কর্তাব্যক্তি অথবা কর্তাব্যক্তিদের শপাশের লোকগুলো সুযোগ সন্ধানী। তদন্ত কমিটি গঠন ও এ নিয়ে সমালোচনা দেখে মনে হচ্ছে না প্রশাসনের সদিচ্ছা আছে। কতিপয় চাটুকার, কালপ্রিটের, নিয়োগ বাণিজ্যের হোতাদের জন্য পুরো শিক্ষক সমাজের কলঙ্ক আমরা মেনে নিব না। অপরাধীদের সনাক্ত করে বিচারের আওয়া নিয়ে আসুন।’

টুরিজম এন্ড হস্পিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মাহবুবুল আরেফিন বলেন, ‘অপরাধীকে চিহ্নিত না করলে পুরো শিক্ষক সমাজের উপর কালিমা লেপন হবে। প্রশাসনে চোখ খোলার চূড়ান্ত মুহুর্ত এটি। এখনই যদি এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তবে অপরাধ প্রবণতা আরো বেশি ছড়িয়ে পড়বে।’ তিনি বলেন, ‘ইতোপূর্বের প্রশাসন থেকে শিক্ষা নেওয়ার সময় এসেছে। পূর্বের প্রশাসনের সাথে যে সকল চাটুকাররা কাজ করেছে, ফায়দা নিয়ে শেষে তারাই বিগত প্রশাসনকে বিপদে ঠেলে দিয়েছে। বর্তমানেও তারা ক্যাম্পাসে প্রতিষ্ঠিত।’


আরো সংবাদ



premium cement