২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সিঙ্গাপুরে করোনায় আক্রান্ত বাংলাদেশীর অবস্থা সঙ্কটাপন্ন উপসর্গ না থাকলে পরীক্ষার প্রয়োজন নেই : আইইডিসিআর

-

সিঙ্গাপুরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত একজন বাংলাদেশীর অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। এখন কোনো ওষুধ তার ওপর কাজ করছে না। গত ১৩ দিন ধরে ওই রোগী সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রিভিয়ান বালাকৃষ্ণ গতকাল বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেনকে টেলিফোন করে এ কথা জানিয়েছেন। বালাকৃষ্ণ বলেছেন, প্রবাসী যে চার বাংলাদেশী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ, তার মধ্যে একজনের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। তার বয়স ৩৯ বছর। তিনি বহু দিন ধরে কিডনি ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। এর মধ্যেই তার করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে। বালাকৃষ্ণ জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বাংলাদেশীদের সর্বোচ্চ সেবা দেয়া হচ্ছে। তাদের চিকিৎসার সব খরচ সিঙ্গাপুর সরকার বহন করবে। সঙ্কটাপন্ন বাংলাদেশীর মৃত্যু হলে তার পরিবার লাশ ফেরত চাইবে বলে বালাকৃষ্ণকে জানান ড. মোমেন। এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন বালাকৃষ্ণ।
রোগীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষায় সিঙ্গাপুর কর্তৃপক্ষ সঙ্কটাপন্ন বাংলাদেশীর নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি।
উপসর্গ না থাকলে করোনা পরীক্ষার প্রয়োজন নেই : আইইডিসিআর
রোগ তত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফোরা বলেছেন, উপসর্গ না থাকলে করোনা (কোভিড-১৯) পরীক্ষা করার প্রয়োজন নেই। খুবই সংক্রমণ করার ক্ষমতাসস্পন্ন করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে গণমাধ্যমের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। এ সময় তিনি আরও বলেন, চীন অথবা সিঙ্গাপুর অথবা আক্রান্ত দেশে ভ্রমণ না করলে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করার কোনো প্রয়োজন নেই। ব্যক্তিগত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন। ঘন ঘন সাবান-পানি দিয়ে দুই হাত ভালোভাবে অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে ধুয়ে নিন। কাশির শিষ্টাচার মেনে চলুন। হাঁচি-কাশির সময় বাহুর মধ্যে হাঁচি দেয়া অথবা নাকে মুখে টিস্যু অথবা কাপড় চেপে ধরা।
গতকাল বুধবার আইইডিসিআর-এ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, দেশ-বিদেশের বরাত দিয়ে নানা ধরনের গুজবের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে সামাজিক গণমাধ্যমে (ফেসবুক, টুইটার এবং অন্যান্য) এর উদ্বেগজনক প্রসার ঘটছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রচারিত এসব গুজবের প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের অংশ হিসেবে গুজবের উৎস খোঁজার ব্যবস্থা করা হচ্ছে এবং গুজব নিরসনে এর জবাব প্রস্তুত করে তা প্রচারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তিনি সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, কোনো কিছু জানতে চাইলে আইইডিসিআর’র হটলাইনে যোগাযোগ করুন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি অধ্যাপক ফোরা বলেন, আইইডিসিআর’র ভাইরোলজি ল্যাবরেটরিতে সন্দেহজনক কোভিড-১৯ আক্রান্তদের নমুনা পরীক্ষা করে এ যাবৎ কারো নমুনায় কোভিড-১৯ পাওয়া যায়নি। চীনের উহান ফেরত ৩১২ জন যাত্রীর সবাই সুস্থ আছেন বলে তিনি জানান। সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে প্রেরিত সর্বশেষ খবরে আমরা জানতে পেরেছি যে, বাংলাদেশের পাঁচজন নাগরিক কোভিড-১৯ সংক্রমিত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের মধ্যে একজন আইসিইউ-এ আছেন। কোয়ারেন্টিনে আছেন অপর পাঁচ জন। সিঙ্গাপুরে সর্বমোট ৮১ জন কোভিড-১৯ রোগী চিকিৎসাধীন। বাংলাদেশে সিঙ্গাপুরের দূতাবাস থেকেও আমাদেরকে সিঙ্গাপুর পরিস্থিতি সম্পর্কে নিয়মিত অবহিত করা হচ্ছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement