২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দুর্দান্ত ভারতের বিপক্ষে আজ প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ

-

দিল্লির টি-২০ ম্যাচ আলোচনায় নিয়ে এসেছে বাংলাদেশকে। ভারতকে যখন হারিয়েই দিয়েছে মুশফিকরা, তখন টেস্টেও না জানি কী হয় এ শঙ্কা বিরাজ করছে সর্বত্র। ভারত ইতোমধ্যে সতর্কতাও অবলম্বন করেছে। ক’দিন আগেও যে বাংলাদেশকে তারা হিসাবেই ধরেনি। এখন কিছুটা হলেও ভাবছে! খুঁটিনাটি বিষয়গুলোও আমলে নিচ্ছে বিরাট কোহলি। যেমন ম্যাচের আগের দিন সিরিজ সম্পর্কে বলতে গিয়ে বাঁহাতি মুস্তাফিজকে নিয়ে তাদের টেনশনের কথা জানিয়েছেন। বেশ কিছু দিন ধরেই বাঁহাতি পেসার নেই তাদের। ফলে নেটেও খেলা হয় না বাঁহাতি পেসারের বল। মুস্তাফিজ তো এমনিতেই একটু অন্যরকম। আইপিএলে দেখেছেন তারা। ভারতের বিপক্ষে একবার একাই জিতিয়েছিলেন ওয়ানডে সিরিজ। সাকিব নিষিদ্ধ, তামিমও নেই। বাংলাদেশের দুই মূল খেলোয়াড়ের অবর্তমানে যা ভাবনা ওই মুস্তাফিজকে নিয়েই। অপর দিকে বাংলাদেশ স্কোয়াডে মুস্তাফিজকে খেলানো হবে কি না সেটি নিয়েও চিন্তাভাবনা আছে। কারণ তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজে একটি উইকেটও পাননি। তাহলে?
আসলে ভারতের এসব চিন্তা অমূলক। দুর্দান্ত টেস্ট খেলছে এখন বিরাট কোহলি অ্যান্ড কোং। ২০১৫-এর জুনে বাংলাদেশে একটি টেস্ট ম্যাচ খেলে গিয়েছিল। ফতুল্লায় অনুষ্ঠিত ওই ম্যাচ হয় ড্র। ওই ম্যাচের পর থেকে এ পর্যন্ত ১৬টি সিরিজ খেলেছে ভারত। যার ২টিতে হেরেছে মাত্র। বাকি সব ম্যাচেই জয়জয়কার। এর সর্বশেষ তিন সিরিজ অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অসিদের, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে এবং নিজ মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকাকে তুলোধুনো করেছে। কারণ প্রোটিয়ারে বিপক্ষে তিন ম্যাচের দু’টিতে ইনিংস ব্যবধানে ও এক ম্যাচে ২০৩ রানে জিতেছে কোহলিরা। পক্ষান্তরে বাংলাদেশ সর্বশেষ ম্যাচে হেরেছে আফগানদের বিপক্ষে জহুর আহমেদ চৌধুরীতে। তাহলে ইন্দোরে আজ থেকে শুরু হওয়া টেস্টম্যাচে কী হতে পারেÑ এ আন্দাজ সবাই বোধহয় করে ফেলতে পারে!
আসলে ক্রিকেট ম্যাচ নিয়ে এক পেশে কোনো চিন্তাভাবনাই করা যায়না। টিম হিসেবেও টি-২০ ক্রিকেটে যারা অপ্রতিরোধ্য। তাদেরকে বাংলাদেশ হারাবে এ চিন্তা কী কেউ করেছিল? হারালোই তো। এমনকি সিরিজ জয়ের স্বপ্নও প্রায় বাস্তবায়ন হওয়ার পথে ছিল। রোহিত শর্মা একটা কথা বলেছিলেন, টি-২০ সিরিজের পর। ‘সেই বাংলাদেশ আর এ বাংলাদেশ এক না। কারণ তাদের অনেক তরুণ ক্রিকেটার এসেছে। দুর্দান্ত খেলে ওরা।’ ভারত আপাতত এ কথাতেই বিশ্বাসী। বাংলাদেশও আশাবাদী ওই একটা স্থানেই। দলে কিছু তরুণ রয়েছে। যারা ভালো খেলতে সক্ষম। দুশ্চিন্তার কারণও হয়ে যেতে পারে ভারতের।
ইন্দোরের উইকেট নিয়ে মূলত ভাবনার কথা বাংলাদেশের। অনেকটা লাল মাটিতে তৈরি হওয়া ওই উইকেট থাকছে ব্যাটসম্যানদের পক্ষেই। তবে পেসাররাও এখানে বাউন্স পাবে। যেখানে ভারতের বর্তমান পেস অ্যাটাককে অন্যতম সেরা বলা হচ্ছে। সেই ইশান্ত শর্মা, উমেশ যাদব, মোহাম্মদ সামিদের কিভাবে মোকাবেলা করবে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। সাথে রয়েছেন রবীচন্দ্রন আশ্বিন, রবীন্দ্র জাদেজার মতো স্পিনার। প্রস্তুতিতে বাংলাদেশ এগুলো নিয়েই ভেবেছে। ব্যাট হাতে বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, চেতশ্বরা পূজারা, রাহানে দুর্দান্ত। দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে চমৎকার খেলে ফর্মে তারা। ভারতের ওই ব্যাটিং লাইনকে কিভাবে দমিয়ে রাখবে আল আমিন, মুস্তাফিজ, তাইজুল, মেহেদি হাসান মিরাজরা। দুর্বলতা এখানে। বাংলাদেশ অনেকটা পেছনে থেকেই শুরু করবে এ ম্যাচ। তামিমের অবর্তমানে ইমরুল কায়েসের খেলার সম্ভাবনা। সাইফ হাসানও নামতে পারেন সাদমানের সাথে। ওয়ান ডাউনে অধিনায়ক মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহীম, মাহমুউদল্লাহ রিয়াদ, মোহাম্মাদ মিথুন, লিটন কুমার দাস, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, আবু জায়েদ রাহী, এবাদত হোসেন বা মুস্তুাফিজ খেলবেন একাদশে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ তাদের টেস্ট ইতিহাসের প্রথম ম্যাচ খেলেছিল ভারতের বিপক্ষে ২০০০ সনে ঢাকায়। এ পর্যন্ত এ ১৯ বছরে ৯টি টেস্ট খেলেছে তারা। এর মধ্যে ড্র হয়েছে দুই ম্যাচ। বাকি সব ম্যাচেই জিতেছে ভারত। অবশ্য দুই দলের মধ্যে সর্বশেষ টেস্ট ম্যাচ হয়েছিল হায়দরাবাদ রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে। যেখানে ভারত জিতেছে ম্যাচ ২০৮ রানে। এটা দুই দলের দশম ম্যাচ। অবশ্য আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম ম্যাচ এটা বাংলাদেশের। ভারত ইতোমধ্যে ওই চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু করেছে। বাংলাদেশ সময় সকাল দশটায় শুরু হবে খেলা।


আরো সংবাদ



premium cement