২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
  শেষবেলায় প্রকল্প পাসের হিড়িক

প্রকল্প বাস্তবায়ন দরকার জনস্বার্থে

-

উন্নয়নের নীতি হবে দেশের মানুষের সার্বিক কল্যাণ সাধন করা। রাজনৈতিক দলগুলো মুখে এই ধরনের নীতির কথা বলেও থাকে। বাস্তবে তারা এমন নীতি মেনে চলে না। উন্নয়ন কার্যক্রমের বেশির ভাগই ক্ষমতাকেন্দ্রিক পরিচালিত হয়। উদাহরণস্বরূপ এবারের জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের চিত্র যদি আমরা লক্ষ করি তাহলে তা বোঝা যাবে। নয়া দিগন্ত শিরোনাম করেছে ‘শেষবেলায় প্রকল্প পাস ও সংশোধনের হিড়িক’। অর্থাৎ সরকার সুস্থ মাথায় চিন্তা করতে প্রস্তুত নয়। সামনে জাতীয় নির্বাচন রয়েছে, সেই নির্বাচনে সুবিধা এনে দিতে পারে এমন প্রকল্প সরকারের চাই। তাই কোনো প্রকল্প প্রকৃতপক্ষে দেশ ও জনসাধারণের শতভাগ উপকারে আসবে এমন চিন্তা করা হচ্ছে না। যেনতেনভাবে প্রকল্প পাস ও সংশোধন করা হচ্ছে।
নয়া দিগন্ত এক বিস্তারিত প্রতিবেদনে লিখেছে, বর্তমান সরকারেরর শেষবেলায় ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কয়েক মাস আগে এখন প্রকল্প অনুমোদন এবং সংশোধনের হিড়িক পড়েছে। শুধু চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) ৯টি সভায় মোট ১০৯টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। আর পরিকল্পনা কমিশনের পিইসি থেকে চূড়ান্ত হয়েছে এমন প্রকল্প প্রস্তাবনার সংখ্যা শতাধিক। এসব প্রকল্প সমীক্ষা বা সম্ভাব্যবতা যাচাই ছাড়াই হচ্ছে। অবশ্য পরিকল্পনামন্ত্রী এ ব্যাপারে যুক্তি দিতে চেয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচনের আগের দু-তিন মাস রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগে আসতে চায় না। তারা ওই সময়টা পর্যবেক্ষণ করেন। তাই এই সময় উন্নয়ন কার্যক্রম গতিশীল রাখতেই সরকারকে তার বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হয়।’ বাস্তবতায় দেখা যায়, এসব প্রকল্পের বেশির ভাগ ভোটার তুষ্ট করতে নির্বাচনী প্রকল্প। বাংলাদেশের সরকারগুলোর মধ্যে এমন প্রবণতা সব সময় দেখা যায়। দিনে দিনে জনতুষ্টবাদী এমন প্রকল্প অনুমোদন বেড়েছে। এতে করে দুর্বল, অপ্রয়োজনীয় ও কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প অনুমোদন পেয়ে যায়। বাস্তবায়নে দেখা দেয় হ-য-ব-র-ল অবস্থা। এসব ক্ষেত্রে প্রচুর অপচয় হয়। অনিয়ম ও দুর্নীতি সাধারণ একটা ব্যাপারে পরিণত হয়। কাজের গুণগত মানের অবস্থা একই রকমের হয়। সরকারের মধ্যে এখন একটা উত্তেজনা কাজ করছে। ১০ নভেম্বরের মধ্যে তফসিল ঘোষণার সম্ভাবনা আছে। তফসিল ঘোষণার পর আর কোনো নতুন প্রকল্প অনুমোদন দেয়া যাবে না নির্ধারিত সময়ের মধ্যে। এ জন্য নতুন প্রকল্প অনুমোদন এবং অন্য কিছু প্রকল্প সংশোধনের হিড়িক পড়েছে একনেকে। তড়িঘড়ি করে এসব প্রকল্প ছাড় করিয়ে নিতে গিয়ে মূল্যায়নের যে নিয়মকানুন রয়েছে সেগুলো মানা হচ্ছে না। ফলে এক দিকে সরকারের অর্থের ব্যাপক অপচয় হওয়ার সম্ভাবনা, অন্য দিকে প্রয়োজনীয় প্রকল্প অনুমোদন বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে।
সরকারি প্রকল্প জনগণের উপকারে না আসার কতগুলো কারণ আগে থেকেই আছে। এগুলো হচ্ছে জমি অধিগ্রহণে জটিলতা, অর্থ ছাড়ে বিলম্ব, পূর্ণকালীন প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ না করা, দক্ষ ও কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন জনবলের অভাব, ক্রয় নীতিমালা সঠিকভাবে অনুসরণ না করা, দরপত্র আহ্বান, মূল্যায়ন ও কার্যাদেশে অধিক সময়ক্ষেপণসহ এ ধরনের আরো অনেক নেতিবাচক দিক। এর ওপর নির্বাচনকালীন এ ধরনের প্রকল্প ছাড়ের হিড়িক প্রকল্প বাস্তবায়নে দুর্বলতা ও সরকারি অর্থের অপচয়কে বাড়িয়ে দেয়। আমরা মনে করি, একটি রাজনৈতিক সরকারের অভিলাষ পূরণ করতে জনগণের এমন ক্ষতি হতে দেয়া যায় না। সরকারের উচিত সবার আগে প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা যাচাই করা। উপযুক্ত প্রকল্প হলে সেটা যথাযথ বাস্তবায়নের পূর্ণ নিশ্চয়তা নিশ্চিত করা।


আরো সংবাদ



premium cement
কলকাতার রাস্তায় চাকরি হারানো শিক্ষকরা শিল্পী-সাংবাদিক দ্বন্দ্ব নিয়ে এলো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত যশোর কারাগারে হাজতিদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ব্যাপক আতঙ্ক চিকিৎসার জন্য ঢাকা ছাড়লেন বিএনপি নেতা আমীর খসরু কুষ্টিয়াতে মসজিদ কমিটি নিয়ে সংঘর্ষে আহত ৫ চেয়ারম্যান তপন ও অজিত মেম্বারকে ধরিয়ে দিতে পারলে পুরস্কার ঘোষণা নারায়ণগঞ্জে ২৪ ঘণ্টায় ১৪ ডাকাত সদস্য গ্রেফতার রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি ছাড়াল যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশী শ্রমিকদের ভিসা সহজ করার আহ্বান প্রবাসী প্রতিমন্ত্রীর চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী না হয়ে অংশীদার হওয়া উচিত : শি জিনপিং ওকাব সভাপতি নজরুল ইসলাম, সম্পাদক জুলহাস আলম

সকল