২৬ মে ২০২৪, ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৭ জিলকদ ১৪৪৫
`
কালো তালিকাভুক্তদের ওপর বই ছাপার দায়িত্ব

দরপত্র বাতিল করে প্রক্রিয়াটি পর্যালোচনা করুন

-

প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের পাঠ্যপুস্তক ছাপানো নিয়ে কয়েক বছর ধরে নানা ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। দেশীয় প্রতিষ্ঠান থেকে না ছাপিয়ে ভারত থেকে বই ছাপানোর কারণে নির্ধারিত সময়ে যেমন বই পাওয়া যায়, তেমনি নি¤œমানের কাগজে ও খারাপ ছাপা বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়ার অভিযোগ আছে। এবারো এর ব্যতিক্রম হচ্ছে না বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে।
সম্প্রতি নয়া দিগন্তের এক খবরে বলা হয়েছে, প্রাথমিকে বিনামূল্যের পাঠ্যবই মুদ্রণের কাজ পেয়েছে ‘কালো তালিকাভুক্ত’ ভারতীয় মুদ্রণপ্রতিষ্ঠান। ভারতীয় প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দিতেই জাতীয় শিক্ষা ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) প্রাথমিকে পাঠ্যবই মুদ্রণের কাজের পুনঃদরপত্র আহ্বান করেছে বলে অভিযোগ দেশীয় মুদ্রণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প মালিক সমিতির। তারা বলছে, পুনঃদরপত্র না করে প্রাথমিকের কার্যাদেশ দেয়া যেত, যদি দরপত্র পুনঃমূল্যায়ন করা হতো। এতে অর্থ ও সময় দুটোই সাশ্রয় হতো এবং নির্ধারিত সময়েই বই পাওয়া যেত। পুনঃদরপত্রে কাজ পাওয়া মুদ্রাকরদের নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড (এনওএ) দেয়া হয়েছে। এতে কৃষ্ণা প্রিন্টার্স ও স্বপ্না ট্রেডিং নামে দু’টি ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ১০টি লটে এক কোটি চার লাখ ৫৩ হাজারের বেশি বই ছাপার কাজ পেয়েছে।
প্রাথমিকের সাড়ে ১১ কোটি বই মুদ্রণ পুনঃদরপত্রের কার্যাদেশ দেয়ার পর মুদ্রণকারীদের সাথে চুক্তি করতে আরো ২৮ দিন সময় দিতে হবে। চুক্তি হলে বই সরবরাহ করতে তারা সময় পাবে ৬০ দিনের মতো। ফলে অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে ভারত থেকে বই ছাপিয়ে দেশের উপজেলাপর্যায়ে পৌঁছে দেয়া অসম্ভব। ফলে আগামী বছরের ১ জানুয়ারি প্রাথমিকের কোনো শিক্ষার্থী পাঠ্যবই পাচ্ছে না, এটা প্রায় নিশ্চিত।
পুনঃদরপত্র আহ্বান করে শুধু প্রাথমিকের বই ছাপায় সরকারের অতিরিক্ত গচ্চা যাবে ১১১ কোটি টাকা। কৃষ্ণা প্রিন্টার্স এক লটে ৭১ লাখ ৫৭ হাজার ৪১৩ এবং স্বপ্না প্রিন্টার্স অন্য লটে ৩২ লাখ ৯৬ হাজার ১৭২টি বই ছাপার কাজ পেয়েছে। এ দু’টি প্রতিষ্ঠান ২০১৬ সালে বই ছাপার কাজ শেষ করতে তিন মাস দেরি করে। ডিসেম্বরের বই ছাপাতে তারা মার্চ মাস পর্যন্ত সময় নিয়েছিল। এরপর ওই প্রতিষ্ঠান দু’টিকে এনসিটিবি কালো তালিকাভুক্ত করে। সেই প্রতিষ্ঠানকে এবার আবার কাজ দেয়া হলো।
বই ছাপার ক্ষেত্রে প্রথমে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে অগ্রাধিকার দেয়া উচিত। যদি দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো অপারগ হয়, তাহলেই কেবল বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেয়া যেতে পারে। কিন্তু গচ্চা দিয়ে বিদেশী প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া কোনোভাবেই উচিত নয়। আমরা মনে করি, এনসিটিবির এই সিদ্ধান্ত স্থগিত করে পুরো প্রক্রিয়াটি পর্যালোচনা করা উচিত।


আরো সংবাদ



premium cement