০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫
`


চক্রান্তকারীদের থামানোর দায়িত্ব সরকারের

শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে

-

সম্প্রতি বাসের চাপায় রাজধানীর দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর জের হিসেবে চার দিন ধরে রাজধানীর রাজপথ অবরোধ করে রেখেছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা ৯ দফা দাবিতে এই আন্দোলন তথা রাজপথ অবরোধ করে রেখেছে। পঞ্চম দিনেও রাজধানীতে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে পারেনি। এই আন্দোলন ঠেকাতে সরকার গতকাল দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে। আগের দিন রাত ৮টায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের এ ঘোষণা দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এ আদেশের আওতায় আসবে। এ দিকে সড়ক অবরোধ তুলে নেয়ার জন্য আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, শিক্ষার্থীদের সব দাবি আমরা মেনে নিয়েছি।
শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন চলাকালে রাজধানী ঢাকায় দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে যানবাহন তেমন ছিল না। যে দু-চারটা যানবাহন চলেছে, ছাত্ররা সেগুলো দাঁড় করিয়ে গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট এবং ড্রাইভারদের লাইসেন্স চেক করে দেখেছে। এ সময় দেখা গেছে, লাইসেন্স না থাকায় পুলিশের গাড়িও আটকে রাখে ছাত্ররা। ছাত্ররা রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স, প্রাইভেট কার, শিশু, ছাত্রছাত্রীদের বহন করা গাড়ি সিএনজি এবং রিকশা ছেড়ে দিয়েছে। আবার ধানমন্ডি ২৭ নম্বরে পথচারীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ছাত্ররা ঝাড়– হাতে রাস্তা নিজেরা পরিষ্কার করেছে। নগরীর বিভিন্ন স্থানে ছাত্ররা ইউনিফর্ম পরা অবস্থায় যানবাহনের লাইসেন্স ও অন্যান্য কাগজ চেক করেছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে বিতর্কিত করতে ফার্মগেটের অদূরে জনৈক ছাত্রলীগ নেতা গাড়ি ভাঙচুর করেছেন।
তা ছাড়া, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের চতুর্থ দিনে যাত্রবাড়ীতে এক শিক্ষার্থীর গায়ের ওপর দিয়ে পিকআপ তুলে দিয়েছে চালক। গুরুতর আহত অবস্থায় রাতে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহত ছাত্রটি নারায়ণগঞ্জ তোলারাম কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। তার কোমর ও পায়ের হাড় ভেঙে গেছে, রাতে কিডনিতে জটিলতা দেখা দিয়েছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ফয়সাল নামের এই ছাত্রের অবস্থা ভালো নয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড এলাকায় আন্দোলনের চতুর্থ দিনে পরিবহন শ্রমিকেরা সড়ক অবরোধ করেন। এরা অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের মারধরও করেন। এসব ঘটনা প্রমাণ করে, পরিবহন শ্রমিকদের ঔদ্ধত্য কতটা সীমা ছাড়িয়েছে। তাদের এই ঔদ্ধত্যের আরেক কারণ দেশের গোটা পরিবহন খাত মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতাদের কব্জায়। রাজধানীর বাস মালিক ও চালকদের নিয়ন্ত্রণ এখন সরকারি দল আওয়ামী লীগের হাতে। দলটির মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, নেতা-নেত্রী ও তাদের আত্মীয়রাই এ খাতের মূল নিয়ন্ত্রক। প্রভাবশালী রাজনীতিকেরা পরিবহনের মালিক কিংবা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃত্বে সরকারদলীয় লোকজন থাকায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ফিটনেসবিহীন রঙচটা, অনুমোদনহীন পরিবহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় না। তাই পরিবহন শ্রমিকেরা এত বড় আন্দোলনের মাঝেও নতুন করে শিক্ষার্থীদের ওপর দিয়ে ঠাণ্ডামাথায় পিকআপ চালিয়ে দেয়া ও নিরীহ ছাত্রদের মারধর করার সাহস দেখাতে পারে।
শিক্ষার্থীদের আজকের আন্দোলন এই নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে। এরা ন্যায়বিচার চায়। তাদের ভাই ও বোন হত্যাকারীর উপযুক্ত শাস্তি চায়। তাদের এই আন্দোলনকে কলঙ্কিত করতে যারা মাঠে নেমেছে, তাদের থামানোর দায়িত্ব সরকার পক্ষেরই। নইলে ইতোমধ্যে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়া ছাত্রদের এই আন্দোলন আরো বেগবান হয়ে উঠতে পারে, যা কারো জন্যই সুফল বয়ে আনবে না। অতএব সময় থাকতে সাবধান হওয়াই উত্তম।


আরো সংবাদ



premium cement
গাজীপুরে নিখোঁজ পোশাকশ্রমিকের লাশ উদ্ধার চলচ্চিত্রে সমস্যা ও উত্তরণে গোলটেবিল বৈঠক হ্যাটট্রিক হারে সিরিজ হাতছাড়া বাংলাদেশের নয়া দিগন্তে সংবাদ প্রকাশে বন্ধ হলো সেই বিলের মাটি কাটা বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষায় বৃত্তি বাড়াতে আগ্রহী রাশিয়া উখিয়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশী ১০ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে জামায়াতের উদ্বেগ এমপি-মন্ত্রী-সচিবের আত্মীয় এগুলো দেখার প্রয়োজন নেই : ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের ইসি সচিব বগুড়ায় শজিমেক ছাত্রলীগের ২ গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ১৩ স্বর্ণের দাম ভরিতে আরো কমলো ১৮৭৮ টাকা গাজায় হামাস যোদ্ধা ও ইসরাইলি বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষ

সকল