২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নগরকান্দা-সালথায় নির্বাচনোত্তর সহিংসতায় এলাকাছাড়া আ’লীগের একাংশ

আওয়ামী লীগ
নগরকান্দা-সালথায় নির্বাচনোত্তর সহিংসতায় এলাকাছাড়া হয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগের একাংশ - নয়া দিগন্ত

ফরিদপুরের নগরকান্দা ও সালথা উপজেলায় নির্বাচনোত্তর ব্যাপক সহিংসতার ঘটনায় হত্যা, বাড়িঘর ভাংচুর ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলার নিরীহ ব্যক্তিদের ফাঁসানো হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিরাপত্তাহীনতায় অনেকেই বাড়িঘরে থাকতে পারছেন না।

স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বর্তমান সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর কনিষ্ট পুত্র ও রাজনৈতিক প্রতিনিধি শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরীর বিরুদ্ধে এসব সহিংসতা মদদ দেয়ার অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ।

তাদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় এই দুই উপজেলার অনেক নেতাকর্মী প্রাণভয়ে এলাকায় থাকতে পারছেন না।

গত ১৮ মার্চ ফরিদপুরের ৮টি উপজেলার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরমধ্যে নগরকান্দা উপজেলায় মনিরুজ্জামান সরদার ও সালথা উপজেলায় দেলোয়ার হোসেনকে মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। এর বাইরে নৌকার মনোনয়ন না পেয়ে নগরকান্দায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হন শাহ জামাল বাবুল কাজী এবং সালথায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হন ওদুদ মাতুব্বর। তাদেরকে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়ে দলের বিপরীতে অবস্থান নিয়ে কাজ করেন সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর পুত্র শাহাদাব আকবর লাবু চৌধুরী।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের অভিযোগ, তিনি নির্বাচনের আগে স্বতন্ত্র প্রার্থী পক্ষে ব্যাপক প্রভাব সৃষ্টি করেন। তার সিদ্ধানের বাইরে গেলে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ারও হুমকি দেন। এতে অনেকে তার সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থীর দলে ভিড়তে বাধ্য হন। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র এই দুই প্রার্থীর হয়ে দলের নেতাকর্মীরা আভ্যন্তরীণ সহিংসতায় জড়িয়ে পড়েন।

সালথার রামকান্তপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রব মাতুব্বর, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহ-সভাপতি লুৎফর রহমান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য আলিমসহ কয়েকজন জানান, তারা হামলা ও মামলার ভয়ে বাড়িঘরে থাকতে পারছেন না। সংসদ উপনেতার পুত্র লাবু চৌধুরীর নেতৃত্বে দলীয় নেতাকর্মীদের চিহ্নিত করে হামলা ও মামলা করা হচ্ছে। তার ক্যাডারেরা এলাকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।

জানা গেছে, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে লস্করদিয়া ইউনিয়নের আইনপুরে, আটাইল গ্রামে ও তালমা ইউনিয়নের মানিকদি গ্রামের পৃথক পৃথক ঘটনায় প্রায় ৩০ জন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। গত ২৫ মার্চ তালমার কোনা গ্রামে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত করার পর সোবহান মাতুব্বর নামের ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে মারা যান। এ ঘটনার পর নগরকান্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন মিয়া ও জেলা পরিষদের সদস্য কামাল হোসেন মিয়াকে আসামি করার পর তারা এখন আত্মগোপনে রয়েছেন।

নগরকান্দা উপজেলা পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান সরদার অভিযোগ করেন, নির্বাচনের পর এলাকায় একের পর এক সহিংসতার ঘটনায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বাড়িতে থাকতে পারছেন না। নৌকার পক্ষে যারাই কাজ করেছে তাদের উপর হামলা-মামলা করা হচ্ছে। তিনি আওয়ামী লীগ নেতা জামাল হোসেন ও কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়েরের নিন্দা জানান।

অপরদিকে, শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরী তার বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, দলের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা কতিপয় দুস্কৃতকারী দলের ক্ষতি করার জন্য এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে। যারা এই সন্ত্রাস ও হামলার সাথে জড়িত তাদের তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আমরা চাই না নগরকান্দা ও সালথায় কেউ সাধারণ মানুষের জন্য অশান্তির কারণ হয়ে উঠুক।


আরো সংবাদ



premium cement