২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ঐ তি হ্য দোন

-

আজ তোমরা জানবে দোন সম্পর্কে । এটি সম্পূর্ণরূপে হস্তচালিত একটি যন্ত্র। দোন এলাকাভেদে ডোঙ্গা, ডুঙা, কুন্দা, কুন, কোন, জুঁত ইত্যাদি নামে পরিচিত। লিখেছেন মৃত্যুঞ্জয় রায়
দোন আমাদের বাংলাদেশের বিলুপ্তপ্রায় এক কৃষি ঐতিহ্য। এটি একটি প্রাচীন সেচযন্ত্রবিশেষ। আধুনিককালে শ্যালো, ডিপ, এলএলপি ইত্যাদি যন্ত্রচালিত সেচযন্ত্র আসাতে গ্রামীণ কৃষিসমাজ থেকে দোন প্রায় উঠেই গেছে। তবু এখনো ভূপৃষ্ঠস্থ পানি যেসব জায়গায় সহজলভ্য সেরূপ কিছু এলাকায় শুকনো মওসুমে দোনের ব্যবহার মাঝে মধ্যে চোখে পড়ে।
দোন এলাকাভেদে ডোঙ্গা, ডুঙা, কুন্দা, কুন, কোন, জুঁত ইত্যাদি নামে পরিচিত। ডোঙ্গা এ দেশের একধরনের নৌকা। ডোঙ্গার মতোই নৌকাকৃতি একটি পাত্র দোনের মূল অংশ। দোনের এক দিক বন্ধ থাকে। বন্ধ প্রান্ত থাকে সুচালো খাঁজবিশিষ্ট, অন্য প্রান্ত থাকে সমান ও খোলা। দোনের গোড়ার দিকে ইংরেজি ‘এ’ আকারে দু’টি বাঁশের খুঁটি পুঁতে তার ওপরে একটি লম্বা বাঁশ রশি দিয়ে এমনভাবে টাঙানো হয়, যাতে দোন ওঠানো ও নামানো যায়। একটি বাঁশের সাহায্যে দোনের ওঠানো ও নামানোর কাজ করা হয়। এর সুচালো বা অগ্র প্রান্তে একটি রশি লম্বা বাঁশের মাথায় বেঁধে সেই বাঁশের সাহায্যে এ কাজ চালানো হয়। লম্বা বাঁশের গোড়ায় পাথর বা মাটির বস্তা বেঁধে ভারী করা হয়, যাতে দোন ওপরের দিকে উঠে থাকে। অগ্র প্রান্তটি পানির মধ্যে নামালে সেই পানিতে দোন ভর্তি হয়ে যায়। তখন রশি বাঁধা বাঁশটি টেনে পানিভর্তি দোনকে উঠানো হয় ও কাত করে সেচনালায় তার পানি গড়িয়ে দেয়া হয়। এটি সম্পূর্ণরূপে হস্তচালিত একটি যন্ত্র। মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রভৃতি এলাকায় এখনো দোন দেখা যায়।

 


আরো সংবাদ



premium cement