২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মগরা কেটে ফেলেছে বাবাকে : ছোট্ট আনাসের বড় দায়িত্ব

মগরা কেটে ফেলেছে বাবাবকে : ছোট্ট আনাসের বড় দায়িত্ব - ছবি : সংগৃহীত

‘এখানে আসার আগে মগরা আমার বাবাকে কেটে ফেলেছে, এখন মা ও ভাই-বোনদের নিয়ে বালুখালী ক্যাম্পে থাক’ এভাবেই নিজের অবস্থা বর্ণনা করছিলেন এগারো বছরের শিশু আনাস।

মিয়ানমার সেনা ও উগ্রপন্থী রাখাইনদের নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা আনাস এখন ছয় সদস্য বিশিষ্ট পরিবারের প্রধান। যে বয়সে তার বাবা-মায়ের তত্বাবধানে থাকার কথা সে বয়সেই মাসহ অপর তিন ভাই-বোনদের দায়িত্ব তাকে নিতে হয়েছে।

রোববার দুপুরে উখিয়া সদর কাজিপাড়া এলাকায় রোহিঙ্গা শিশু আনাসের সাথে আলাপ হয় এই প্রতিবেদকের।

আলাপকালে আনাস জানায়, মা ও ভাই-বোনদেরকে আমারই দেখা-শুনা করতে হয়। পরিবারের অপর সদস্যরা হচ্ছে ছোট দুই ভাই মোহাম্মদ কবির (৯) ওমর ফারুক (৮) আর দুই বোন ইয়াসিন (৭) ও নুরে জান্নাত (৫)।
‘পরিবারের সব খরচ আমাকে জোগাড় করতে হয়। আমরা যে পরিমাণ খাদ্য সামগ্রী পাই তা দিয়ে আমাদের সংসার চলেনা। তাই আমি ক্যাম্প থেকে বিভিন্ন জিনিস পত্র নিয়ে গ্রামে গ্রামে গিয়ে বিক্রি করি।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে আনাস বলেন, মিয়ানমারের বুচিডং এ আমাদের বাড়ি ছিল। সেদেশের সেনা-পুলিশের গুলিতে বাবা আবু বকর ছিদ্দিক মারা যান। বাবাকে মগরা কেটে ফেলে। বাবা মারা যাওয়ার পর মা (আয়েশা বেগম) সবাইকে নিয়ে আট মাস আগে বাংলাদেশে চলে আসেন।

মিয়ানমার মংডুর-বুচিডং থেকে সীমান্ত অতিক্রম করে আসা আনাস তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বালুখালী ক্যাম্পের ডি ১৩ ব্লকে থাকেন। বাবার মৃত্যুতে ছয় সদস্যের পরিবারের হাল ধরতে হয়েছে আনাসকেই। জীবিকা নির্বাহের জন্য রোহিঙ্গাদের দেয়া পণ্য সামগ্রী বিক্রি করতে বিভিন্ন জায়গায় ছুটে বেড়াচ্ছে আনাস।

ক্যাম্পে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রায় ষাট শতাংশই নারী ও শিশু। এসব শিশুদের কারো হয়তো বাবা নেই, কারো মা নেই কারো আবার বাবা-মা দুইজনই নেই। অনেক শিশু আছে যাদের বাবা-মা থাকলেও সীমান্তের ওপারে কিংবা এপারে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এসব শিশুদের বিশেষ কর্মসূচির আওতায় এনে তাদের অধিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা।

আরো পড়ুন: কক্সবাজারে উল্টে পড়া বাঁশবাহী ট্রাকের চাপায় নিহত ৪

উখিয়া (কক্সবাজার) সংবাদদাতা

কক্সবাজারের উখিয়ায় বাঁশ বোঝাই ট্রাক উল্টে সিএনজি ও টমটমকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই নারী ও শিশুসহ চারজন নিহত হয়ছেন। এতে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।

তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের মধ্যে একজনের পরিচয় জানা গেছে। তিনি কক্সবাজারে ‘মুক্তি’এনজিওতে কর্মরত রুজিনা আক্তার (রুজি)। অন্যদের পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।

আজ সোমবার সকাল ৯টায় বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী সড়কের প্রবেশ মুখে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও দমকল বাহিনী এবং স্থানীয়দের সহযোগিতায় ট্রাকের নিচে চাপা পড়া ২০ জনকে উদ্ধার করে। পরে তাদেরকে স্থানীয় রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে নেয়া হলে ডাক্তাররা শিশু নারীসহ চারজনকে মৃত ঘোষণা করেন। লাশগুলো হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নিকারুজ্জামান চৌধুরী ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার কাজে অংশ নিয়েছেন। তিনি চারজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement