২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বরগুনায় অরক্ষিত ১৮ কি.মি বেড়িবাঁধ

- ছবি : নয়া দিগন্ত

বরগুনা উপকূলে অরক্ষিত অবস্থায় পরে আছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৮ কিলোমিটার বেড়ি বাঁধ। ফলে ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বসত-বাড়ি, ফসলি জমিসহ অসংখ্য গাছপালা। এসব বসত বাড়ি ও ফসলি জমি রক্ষায় ক্ষতিগ্রস্থ এসব বাঁধ দ্রুত মেরামতের দাবি স্থানীয়দের।

পানি উন্নয়ন বোর্ডে বলছেন, বরাদ্ধ অনুযায়ী মেরামত করা হবে এসব বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেরীবাঁধ।

সরেজমিনে দেখা যায়, বরগুনা জেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ২২টি পোল্ডারের ৩৭ পয়েন্টে ১৮ কিলোমিটার বেড়ি বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। জেলার সাড়ে ৯০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় সিডর, আইলাসহ একাধিক প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রায় সাড়ে পাঁচ’শ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া এ বাঁধ সম্পূর্ণ মেরামত হতে না হতেই ঘূর্ণিঝড় ফণীর আঘাতে নতুন করে আবারও একাধিকস্থানে বাঁধ ভেঙে গেছে।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বরগুনা জেলায় ২২টি পোল্ডারে প্রায় সাড়ে ৯০০ কিলোমিটার বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে ৩৭টি পয়েন্টে ১৮ কিলোমিটার বাঁধ মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া বাকি যেসব বাঁধ রয়েছে সেখানেও পানির উচ্চতা বেড়ে গেছে।

এগুলোর মধ্যে বরগুনার পায়রা, বিষখালী ও বলেশ্বর নদের তীব্র ভাঙনে বরগুনা সদর উপজেলার ছোট বালিয়াতলী, নলটোনা, লাকুরতলা, ডালভাঙ্গা, আঙ্গারপাড়া, জাঙ্গালিয়া, পাতাকাটা, গুধিঘাটা, গুলিশাখালী, চালিতাতলী, নলী, পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া, চরলাঠিমারা, রুহিতা, জিনতলা, পদ্মা, বামনা উপজেলার রামনা, শফিপুর, চেচাং, শিংড়াবুনিয়া, বড় তালেশ্বর, আমতলী উপজেলার পশরবুনিয়া, পশ্চিম ঘটখালী, পূর্বচিলা, বেতাগী উপজেলার বলয়বুনিয়া, দেশান্তরকাঠী, ঝোপখালী, তালতলী উপজেলার তেতুলবাড়িয়া এবং হুয়ারস্লুইজ পয়েন্টগুলো সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, যেকোনো সময় দুর্যোগ অথবা জোয়ারের পানি বেড়ে গেলে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে উপকূলীয় এ জেলার কয়েক লাখ মানুষকে।

বামনা সদরের পশ্চিম সফিপুর গ্রামের মো : রাসেল চৌধুরী জানান, বিষখালী নদীর ভাঙনে ওই এলাকার শত শত ঘর-বাড়ি ও হাজার হাজার একর ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। নদীর পাড়ের এসব মানুষকে রক্ষা করতে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানান তিনি।

বরগুনা সদর উপজেলার বাশবুনিয়া গ্রামের আবুল বাশার জানান, সিডরের পর থেকে প্রতিবছর এইসব এলাকা থেকে জোয়ারের পানি ঢুকে মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। অথচ বর্ষার মৌসুম এলে তড়িঘড়ি করে পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধ মেরামত করেন। এক দুই বছরের মধ্যেই মেরামতকৃত এসব বাঁধও বিলীন হয়ে যায়।

এ বিষয়ে বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ নয়া দিগন্তকে বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ সকল বাঁধের তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় অনুযায়ী বরাদ্দ পেলে এসব ক্ষতিগ্রস্থ বেরিবাঁধ মেরামত করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement