ছাত্রলীগ নেতার হাতে সাংবাদিক রক্তাক্ত

রোববার দুপুরে বরগুনার বামনা উপজেলা শহরের সদর রোডে মানবজমিনের জেলা প্রতিনিধি মিজানুর রহমান টিপুর উপর অতর্কিত হামলা চালায় জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হেমায়েত উদ্দীন মোল্লা। এ হামলায় গুরুতর আহত সাংবাদিক মিজানুর রহমান টিপুকে তাৎক্ষণিক বামনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক অবস্থার অবনতি দেখে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠায়। এ ঘটনায় বামনা থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

উল্লেখ্য, “খুনের আসামীকে নিয়ে সাংসদের ইফতার” শিরোনামে ২০১৭ সালে ১২ জুন দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার প্রথম পাতায় সংবাদ প্রকাশের জেরে বরগুনা ডিসি অফিসের স্পীডবোট চালক জব্বার খান হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত ৮ নম্বর আসামী বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি হেমায়েত হোসেন মোল্লার (৩০) হাতে গুরুতর আহত হয়েছে দৈনিক আমাদের সময় বামনা উপজেলা প্রতিনিধি ও দৈনিক মানব জমিন বরগুনা জেলা প্রতিনিধি মো. মিজানুর রহমান টিপু।

গুরুতর আহত সাংবাদিক মিজানুর রহমান টিপু জানায়, ২০১৪ সালের ৮ অক্টোবর সন্ধ্যায় বরগুনা ডিসি অফিসের স্পীডবোট চালক মো. জব্বার খানকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনার সংবাদ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ায় প্রচার হয়। পরে ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করে। তদন্তে আরো ১২ আসামীর নাম আসে। পুলিশ ওই ১২ আসামীর নাম চার্জশিটে অন্তর্ভূক্ত করে। এদের মধ্যে জেলা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি হেমায়েত হোসেন মোল্লা ৮ নম্বর আসামী ছিলো। চার্জশিটে নাম ওঠার পরে সকল আসামী গা ঢাকা দেয়। ১০ জুন ২০১৭ সালে হেমায়েত হোসেন মোল্লা স্থানীয় সংসদ সদস্যের সাথে বামনা আসমাতুন্নেসা বালিকা বিদ্যালয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের ইফতার পার্টিতে ঢাকা থেকে বামনা ও পাথরঘাটায় আসে। ঘটনায় পরের দিন দৈনিক আমাদের সময়ে প্রথম পাতায় “খুনের আসামীকে নিয়ে সাংসদের ইফতার” শিরোনামে সংবাদ ছাপা হয়। ওই সংবাদ প্রকাশের জেরে তাকেসহ অনেক সাংবাদিককে দেখিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় হেমায়েত।

সাংবাদিক টিপু আরো জানায়, রোববার দুপুর ১টার দিকে তাকে ফোন করে হেমায়েত মোল্লার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান আসতে বলে। তিনি সেখানে গেলে আচমকা তার উপর হামলা চালিয়ে কিল-ঘুষি মারে। একপর্যায়ে তাকে বাজারের সড়কে ফেলে রড দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটায়। পার্শ্ববর্তী অপর এক ব্যবসায়ী মো. শাহিন আকন তাকে বাধা দিলে তিনিও আহত হন।

এ ঘটনায় বামনা প্রেসক্লাবের সভাপতি ওবায়দুল কবির আকন্দ দুলাল জানায়, এভাবে চলতে থাকলে সাংবাদিকরা কখনো সত্য সংবাদ প্রকাশ করতে পারবে না। এ ঘটনায় আইন শৃংখলা বাহিনী দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বামনা সাংবাদিকরা কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করবে।

হত্যা মামলার আসামী হেমায়েত হোসেন মোল্লার মোবাইল ফোনে কল করা হলে তা বন্ধ পাওয়া গেছে।
বামনা থানার অফিসার ইন চার্জ জিএম শাহ-নেওয়াজ বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।