ঝালকাঠির রাজাপুরের বড়ইয়া ইউনিয়নের বিষখালি নদীর চরে অবস্থিত চর পালট গুচ্ছগ্রামের ২৭টি ঘর ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে তছনছ হয়ে গেছে। পানিবদ্ধ ও বৃষ্টির পানিতে বালু ও মাটি ধুয়ে প্রায় ২৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে চর পালট গুচ্ছগ্রাম বাস্তবায়ন কমিটির দাবি করেছেন। এতে যথাসময়ে এ ঘরগুলো ভুক্তভোগীদের মাঝে হস্তান্তর নিয়ে চরম শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাদের দাবি সরকার এ বিষয়ে দ্রুত নজর দেবে এবং ক্ষতি পুষিয়ে যাতে ঘরগুলো আবার নির্মাণকাজ দ্রুত সম্পন্ন করা যায়, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
জানা গেছে, বড়ইয়া ইউনিয়নের বিষখালি নদীর তীরের চর ভরাট করে চর পালট গুচ্ছগ্রামে ৭০টি ঘর, টিউরওয়েল ও ল্যাট্রিন নির্মাণের জন্য গুচ্ছগ্রাম সিবিআরপি-২ প্রকল্পের আওতায় এক কোটি পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। সে অনুয়ায়ী গত সেপ্টেম্বর মাসে চরে বালু ফেলে উঁচু করে ঘর নির্মাণ ও ল্যাট্রিনসহ যাবতীয় কাজ শুরু করা হয় এবং নভেম্বরের শেষের দিকে কাজ সম্পন্ন করে হস্তান্তর করার কথা ছিল। চর পালট গুচ্ছগ্রামের নির্মাণকাজে নিয়োজিত মিস্ত্রি ও শ্রমিক ফরহাদ হোসেন, জামাল হোসেন ও মো: রফিক জানান, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে নির্মাণ করা ঘরগুলো একের পর এক মাটিতে ভেঙে পড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে তছনছ হয়ে গেছে। এতে ঘরগুলোর টিন, পিলার ও লোহার পাত ভেঙে ও নষ্ট হয়ে গেছে। ল্যাট্রিনের মালামাল, টিউরওয়েলের মালপত্রও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেছে। পানিতে তলিয়ে ঝড়ো বাতাসে নিরুপায় হয়ে জীবন বাঁচাতে নৌকায় ওইখান থেকে চলে যায়। মাটি ও বালু পানিতে ধুয়ে নেমে গেছে। চর পালট গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প বাস্তাবায়ন কমিটির সম্পাদক আবদুল মালেক জানান, ঘর নির্মাণ ও অন্য মালামাল ঝড়ে ও পানিতে তলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৭টি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে এবং ১০টি ঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং পানিতে প্রায় ১ ফুট মাটি ও বালু ধুয়ে নেমে গেছে। চর পালট গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ইউপি সদস্য আহসান কবির জানান, চর পালট গুচ্ছগ্রামে ৭০টি ঘর, টিউরওয়েল ও ল্যাট্রিন নির্মাণের জন্য গুচ্ছগ্রাম সিবিআরপি-২ প্রকল্পের আওতায় এক কোটি পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। ৩৫টি ঘরের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে; এমতাবস্থায় ঝড়ে ১৭টি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে এবং ১০টি ঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ২৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। সরকার যদি এ ক্ষতির বিষয়ে যদি সরকার নজর না দেয়, তা হলে কোনোভাবেই এ ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা সম্ভব নয় এবং সঠিকভাবে সময়ে এ ঘর তৈরি ও সঠিকভাবে কাজ শেষ করা সম্ভব নয় এবং যথাসময়ে উপকারভোগীদের মাঝে ঘর হস্তান্তর করা সম্ভব হবে না। রাজাপুরের ইউএনও মো: সোহাগ হাওলাদার জানান, চর পালট গুচ্ছগ্রামটি বড়ইয়া ইউনিয়নের বিষখালি নদীর তীরে অবস্থিত হওয়ায় ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে নির্মাণকাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দফতরে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে প্রতিবেদন পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। সরকারের তরফ থেকে এ ক্ষতির বিষয়ে কোনো সহায়তা বা বরাদ্দ পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আগামী ২৬ নভেম্বর বড়ইয়া ইউনিয়ন পরিষদে যাচাই-বাছাই শেষে ঘরের ত্রুটি বা সমস্যা সেরেই প্রকৃত উপকারভোগীদের মাঝে হস্তান্তর করা হবে। রাজাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরউজ্জামান জানান, বিষখালি নদীর চরে খোলা স্থানে হওয়ায় ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে গুচ্ছগ্রামের নির্মাণাধীন ঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের নজর দেয়া জরুরি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে দ্রুত কাজ নির্মাণ সম্পন্ন করা প্রয়োজন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা