২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শ্রীলংকায় সিরিজ হামলা চালায় ৭ আত্মঘাতী

শ্রীলঙ্কায় চলছে কারফিউ - ছবি : সংগৃহীত

সাতজন আত্মঘাতী বোমারু শ্রীলঙ্কায় সিরিজ বোমা হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির ফরেনসিক বিভাগ। গতকাল রোববার শ্রীলংকায় ইস্টার সানডের দিন সিরিজ বোমা হামলার পেছনে ওই পরিমাণ আত্মঘাতী বোমাবাজ সক্রিয় ছিল বলে বিভিন্ন অনুসন্ধান ও গবেষণার পর জানান দেশটির ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা।

ঘটনাস্থল থেকে হামলাকারীদের ছিন্ন ভিন্ন লাশের বিভিন্ন অংশ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেন শ্রীলংকার অপরাধ অনুসন্ধানকারী ও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। তাদেরই একজন আরিয়ানন্দ ওয়েলিয়াঙ্গ বলেছেন, হামলাকারীদের দেহের বিভিন্ন অংশ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মনে হয়েছে, তারা সবাই আত্মঘাতী ছিলেন।

তবে সবগুলো জায়গাতে একজন করে হামলা করলেও কলম্বোর শাংরি-লা হোটেলে দুজন হামলা করেছিল বলে ধারণা করছেন তিনি।

গতকাল রোববার শ্রীলংকার রাজধানী কলম্বোসহ দেশটির বিভিন্ন এলাকায় গির্জা ও হোটেলে সব মিলিয়ে আটটি বিস্ফোরণ ঘটে।

শ্রীলংকার পশ্চিম প্রদেশের নেগম্বো, পূর্বপ্রদেশের বাট্টিকালো এবং রাজধানী কলম্বোর গির্জাগুলোতে বোমা হামলা চালানো হয়। এ ছাড়া কলম্বোর তিনটি পাঁচ তারকা হোটেল সাংরি-লা, কিংসবুরি, সিনামন গ্র্যান্ডসহ আরেকটি আবাসিক হোটেলে হামলা হয়।

এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, সব মিলিয়ে ২৯০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো পাঁচ শতাধিক মানুষ। হতাহতদের মাঝে বিদেশি নাগরিক ২৬ জন।

শ্রীলঙ্কা সরকার এ পর্যন্ত হামলাকারী সম্পর্কে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য না জানালেও হামলায় জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত ২৪ জনকে আটক করেছে।

 

আরো পড়ুন : শ্রীলঙ্কায় এবার মসজিদে হামলা
নয়া দিগন্ত অনলাইন, ২২ এপ্রিল ২০১৯, ১৩:১৪

শ্রীলঙ্কার গির্জা এবং অভিজাত হোটেলসহ মোট আটটি স্থানে সিরিজ বোমা হামলার রেশ না কাটতেই এবার হামলার শিকার হয়েছে দেশটির মসজিদসহ মুসলমানদের বিভিন্ন স্থাপনা। শ্রীলঙ্কার পূর্বাঞ্চলে সোমবার চালানো এসব হামলায় এখন পর্যন্ত কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। তবে এ পর্যন্ত ৫ জন আহত হয়েছে।

এসব হামলার সত্যতা নিশ্চিত করে শ্রীলঙ্কা পুলিশের মুখপাত্র রুয়ান গুনাসেকারা বলেছেন, এ দিন স্থানীয় সময় ভোরে আমপারার পুত্তালুম এলাকার একটি মসজিদ এবং চারটি দোকানসহ বেশ কয়েকটি গাড়িতে সিংহলি বৌদ্ধরা হামলাটি চালায়। এ ঘটনার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওই এলাকায় তাৎক্ষণিক অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।’

তিনি আরো জানান, মসজিদ ও দোকানে হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে এখনো কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। তবে আমরা আশা করছি, খুব শিগগিরই এর সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করা হবে।’

দেশটির মুসলমানদের জোট মুসলিম কাউন্সিল অব শ্রীলঙ্কা (এমসিএসএল) মসজিদে হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তারা মসজিদসহ এই সব হামলায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়। এর আগে জোটটি ইস্টার সানডে উদযাপনের সময় গির্জাসহ বিভিন্ন স্থানে চালানো হামলায় শোক প্রকাশ করেছিল।

রোববার ইস্টার সানডের দিন স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটের দিকে কলম্বোর কোচিচিকাদের সেন্ট অ্যান্থনি চার্চে প্রথম বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। দ্বিতীয় হামলাটি ঘটে কুতুয়াপিটায়ের সেন্ট সিবাস্তিয়ান চার্চে। আর তৃতীয় বিস্ফোরণটি ঘটে নেগোম্বো শহরের বাত্তিকালোয়া চার্চে। এছাড়া কলম্বোর তিনটি পাঁচতারকা হোটেলেও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। পরে আরো দুটি স্থানে হামলা হয়। সেখানেও প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৩৬ বিদেশি নাগরিকসহ প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৯০ জন। এতে আহত হয়েছেন আরো কমপক্ষে পাঁচ শতাধিক। শ্রীলঙ্কা সরকার এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে এ সিরিজ বিস্ফোরণের জন্য কাউকে দায়ী করেনি। তবে এ পর্যন্ত 24 জনকে আটক করেছে সেখানকার পুলিশ।

এ দিকে এ ঘটনায় উত্তেজনা ও গুজব ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে জনপ্রিয় সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। দুই দিনের জন্য সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপসহ গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বার্তা পাঠানোর অ্যাপস দেশটিতে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে যাতে করে ভুল তথ্য ও গুজব ছড়ানো রোধ করা যায়।

প্রায় দুই কোটি দশ লক্ষাধিক জনসংখ্যার দেশ শ্রীলঙ্কায় মুসলিম রয়েছে প্রায় ৯ শতাংশ। তাছাড়া দেশটিতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী লোকের সংখ্যা প্রায় ৭০ শতাংশ।


আরো সংবাদ



premium cement