২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আফগানিস্তানে দুই মার্কিন সেনা নিহত

আফগানিস্তানে দুই মার্কিন সেনা নিহত - ফাইল ছবি

আফগানিস্তানে অভিযান চালানোর সময় পাল্টা হামলায় দুই মার্কিন সেনা নিহত হয়েছেন। শুক্রবারের ওই অভিযানে মার্কিন সেনা নিহত হওয়ার খবরটি নিশ্চিত করেছে সামরিক জোট ন্যাটো। তবে ন্যাটো বিস্তারিত কিছু জানায়নি।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ নিয়ে চলতি বছরে আফগানিস্তান চারজন মার্কিন সৈন্য নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ১৭ বছর ধরে দেশটিতে সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধ করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে যুদ্ধবিরতির চেষ্টা হিসেবে সম্প্রতি তালেবান বিদ্রোহীদের সঙ্গে বেশ কিছু বৈঠক করেছে মার্কিন প্রতিনিধি দল।

যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর পক্ষ থেকে সেনা নিহতের বিষয়ে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়ম মতে দেশটির কোনো সেনা নিহত হলে আগে তার পরিবারকে জানানো হয়। তারপর তাদের পরিচয় জনসম্মুখে তুলে ধরা হয়। তাছাড়া যে অভিযানে ওই দুই সেনা নিহত হয়েছে সে বিষয়েও কিছু জানায়নি তারা।

সামরিক জোটের ওই বিবৃতিতে নিহত সেনারা কোথায় এবং কাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর সময় নিহত হন সে বিষয়েও কিছু জানানো হয়নি। ন্যাটোর মুখপাত্র ডেবরা রিচার্ডসন বলেন,‘ঘটনার তদন্ত চলছে, এই মুহূর্তে আমরা বিস্তারিত কিছু জানাতে পারছি না।’

বর্তমানে আফগানিস্তান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৪ হাজার সেনা রয়েছে। আফগানিস্তানে ২০০১ সালে শুরু হওয়া মার্কিন অভিযান এখনো চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধ। তবে সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দেশটি থেকে কিছু মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ন্যাটো ও বহুজাতিক বাহিনীর অভিযানে ২০০১ সালে ক্ষমতাচ্যুত হয় তালেবান শাসক গোষ্ঠী। এরপর থেকে তাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আফগান বাহিনীকে সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে রেজোলুট মিশন।

আফগান যুদ্ধের ইতি টানতে সম্প্রতি তালেবানের সঙ্গে সংলাপে বসে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ১৭ বছরের এই যুদ্ধ অবসানে অগ্রগতির কথা জানালেও কোনো সমঝোতায় পৌঁছতে পারেনি দুপক্ষ।

অবশ্য দুপক্ষের মধ্যে সংলাপ চললেও সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে। দেশটিতে এখনো অনেক মার্কিন সেনা রয়েছে দাবি করে আফগানিস্তান থেকে এসব সেনা প্রত্যাহার তালেবানের অন্যতম দাবি।

আরো পড়ুন : সিরিয়ার পর আফগানিস্তান থেকেও বিপুল সেনা সরাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
রয়টার্স ও আলজাজিরা, (২২ ডিসেম্বর ২০১৮)

সিরিয়ার পর আফগানিস্তান থেকেও কয়েক হাজার সৈন্যকে ফিরিয়ে আনার কথা বিবেচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমগুলো এ খবর জানিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমগুলোর খবরে বলা তালেবানের সাথে যুদ্ধরত প্রায় সাত হাজার সেনাকে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনার কথা জানানো হয়েছে। এ সংখ্যা আফগানিস্তানে যুদ্ধরত মোট মার্কিন সেনার অর্ধেক। 

সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহারের খবর প্রকাশের এক দিন পর বৃহস্পতিবার এ সিদ্ধান্তের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এর আগে বুধবার যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া থেকে সব মার্কিন সেনা তুলে নেয়ার প্রস্তুতির কথা জানা যায়। তবে কবে নাগাদ সেনা তুলে নেয়া শুরু হবে, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা হয়নি।

এ বিষয়ে বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় বলেছেন, সিরিয়ায় আইএসকে পরাজিত করা হয়েছে, তাই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে মঙ্গলবার এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। একই সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়া থেকেও সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন। তার এসব সিদ্ধান্তের জেরেই প্রতিরামন্ত্রী জিম ম্যাটিস পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে।

কতজন সেনা প্রত্যাহার করা হবে তা নিয়ে সিএনএন জানিয়েছে, প্রায় সাত হাজার সেনা সরিয়ে নেয়া হবে। আর রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ১৪ হাজার সেনার মধ্যে পাঁচ হাজারের বেশি সেনাকে প্রত্যাহার করা হবে। এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ ও বিদেশে সামরিক হস্তেেপ ট্রাম্পের ধৈর্য কমে আসছে বলে মনে করা হচ্ছে।

বুধবার ট্রাম্প এ ব্যাপারে তার শীর্ষ উপদেষ্টাদের মতামত অগ্রাহ্য করে সিরিয়া থেকে সব সেনা প্রত্যাহার করে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্রের শরিক দেশগুলো হতভম্ব হয়ে পড়েছে। ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কংগ্রেসে রিপাবলিকানরা ুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। নীতিগত সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টের সাথে ব্যাপক মতপার্থক্যের কারণে প্রতিরামন্ত্রী জিম ম্যাটিস হঠাৎ পদত্যাগ করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

সূত্র মতে, মৌখিক নির্দেশেই আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের কথা জানানো হয়েছে। কবে নাগাদ শুরু হবে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে, কয়েক সপ্তাহ বা মাসের মধ্যে তা ঘটতে পারে। তবে অর্ধেক সেনা কমিয়ে দেয়ার পর আফগানিস্তানে আফগান সেনা প্রশিণ, যুদ্ধের ময়দানে পরামর্শ, তালেবানসহ অন্যান্য গ্রুপের বিরুদ্ধে কার্যক্রম কিভাবে চালানো হবে, তা স্পষ্ট করা হয়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্তের ফলে তালেবান আফগানিস্তানজুড়ে তাদের তৎপরতা বিস্তৃত করার সুযোগ পেতে পারে। মার্কিন প্রতিরা সদর দফতর পেন্টাগন এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে জানা গেছে, এ ধরনের সিদ্ধান্তের ফলে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নতুন নতুন পরিকল্পনার ছক কষবে বলে সতর্ক করেছে পেন্টাগন। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র গ্যারেট মারকুইস বলেছেন, ভবিষ্যতের কৌশলগত উন্নয়ন নিয়ে হোয়াইট হাউজ কোনো মন্তব্য করবে না।


আরো সংবাদ



premium cement