১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলকদ ১৪৪৫
`


প্রধানমন্ত্রী পদে ফিরিয়ে আনা হবে না বিক্রমাসিংহেকে

মাহিন্দা রাজাপাকসে, মাইথ্রিপালা সিরিসেনা ও রনিল বিক্রমাসিংহে - সংগৃহীত

শ্রীলঙ্কার বরখাস্ত প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেকে স্বপদে পুনর্বহালে গতকাল রোববার অসম্মতি জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা। তিনি বলেছেন, সদ্য বরখাস্তকৃত বিক্রমাসিংহে যদি সংসদে তার পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতেও পারেন, তাহলেও তাকে প্রধানমন্ত্রী পদে আনা হবে না।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, শ্রীলঙ্কার সংবিধান অনুযায়ী সিরিসেনা এমন কাউকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিতে পারবেন যার সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ সদস্যের সমর্থন আছে। এটা স্পষ্ট নয় যে ঠিক কোন ক্ষমতা বলে তিনি বিক্রমাসিংহেকে বরখাস্ত করে রেখেছেন।

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা গত ২৬ অক্টোবর রনিল বিক্রমাসিংহেকে বরখাস্ত করেন এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন। কিন্তু তার এ সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। এরপর দেশটির সংসদে দুই দুইবার বিক্রমাসিংহের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণিত হলেও ‘যথাযথ প্রক্রিয়া’ না মানার আপত্তি উল্লেখ করে সিরিসেনা সেই ফলাফল মানতে অস্বীকার করেন।

প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা গতকাল রোববার বলেছেন,‘আমি জীবনেও বিক্রমাসিংহেকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ দেবো না। আমি তাদের বলেছি, যদি তারা সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতেও পারে তাহলেও যেন তারা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিক্রমাসিংহের নাম প্রস্তাব না করে। কারণ আমি তাকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ দেবো না।’

সিরিসেনার দাবি, দুর্নীতি বৃদ্ধি পাওয়া ও নীতি প্রণয়নগত বিষয়ের বিরোধের জেরে তিনি বিক্রমাসিংহেকে বরখাস্ত করে চীনপন্থী মহেন্দ্র রাজাপাকসেকে নিয়োগ দিয়েছেন। রনিল বিক্রমাসিংহের আমলে হওয়া দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত করতে তিনি একটি কমিশন গঠন করবেন বলেও জানান।

সিরিসেনার এমন বক্তব্যের জবাবে বিক্রমাসিংহের সমর্থক রাজিথা সেনেরাতনে প্রশ্ন তুলে বলেন,‘বিক্রমাসিংহে যেসময় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখনও তো সিরিসেনা প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তখন কেন তিনি এসব দুর্নীতির প্রসঙ্গ তোলেননি?’

অন্যদিকে বিক্রমাসিংহের আমলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকা সাগালা রাতনায়াকা বলেছেন,‘সিরিসেনা এমন উদ্ভট অভিযোগ উত্থাপন করতে থাকলে আমিই জানিয়ে দেবো কে, কখন, কোথায় ও কীভাবে হস্তক্ষেপ করেছিলেন।’

সিরিসেনা বলছেন, তিনি বিক্রমাসিংহের দল থেকে যে কাউকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ দিতে রাজি। তবে বিক্রমাসিংহে ও সাবকে সেনাপ্রধান সারাথ ফনসেকাকে তিনি গ্রহণ করবেন না। বিক্রমাসিংহের সরকারে ফনসেকা মন্ত্রী ছিলেন। অবশ্য বিক্রমাসিংহের দলের পক্ষ থেকে সিরিসেনার এই দাবির প্রতি কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি।

কিন্তু এমন অচলবস্থা কাটবে কি করে? সিরিসেনা এর আগে বলেছিলেন যে, তিনি নতুন নির্বাচন দেবেন। কিন্তু নভেম্বর মাসের শুরুতে সুপ্রিম কোর্ট সেই আদেশের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ দেয়।

আগামী ডিসেম্বরে চূড়ান্ত রায় দেয়া হবে। তখনও যদি সিরিসেনার নির্বাচন ঘোষণার আদেশ বাতিল হয়ে যায় তাহলে শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক সঙ্কটের সমাধান অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।


আরো সংবাদ



premium cement