২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ভয়াবহ বিপর্যয়ের আশঙ্কায় আতঙ্কে চীন!

ভয়াবহ বিপর্যয়ের আশঙ্কায় আতঙ্কে চীন! - সংগৃহীত

জাপানের কাছে বর্তমানে যে পরিমাণ প্লুটোনিয়াম রয়েছে তাতে ৬ হাজার পারমাণবিক বোমা তৈরি করা সম্ভব। জাপানের এই বিপুল পরিমাণ প্লুটোনিয়াম নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে চীন। এসব প্লুটোনিয়াম যদি সন্ত্রাসীদের হাতে যায় কিংবা ‍প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সন্মুখীন হয় তাহলে ভয়াবহ বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে।

এরই মধ্যে গত সপ্তাহে জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কয়েক দশকের পুরনো একটি চুক্তি নবায়ন হয়েছে। ওই চুক্তির বলে জাপান নতুন করে প্লটোনিয়াম মজুদ করবে।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় জাপান পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে পারে বলে শঙ্কিত চীন। এর ফলে চীন ও উত্তর কোরিয়ার মতো দেশগুলো এশিয়ায় আবার অস্ত্র প্রতিযোগিতায় নামবে।

জাপান বিশ্বের একমাত্র অপারমানবিক দেশ যারা দীর্ঘ সময় ধরেই নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টের জ্বালানী হিসেবে প্লুটোনিয়াম ব্যবহার করে আসছে।  জাপান গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কয়েক দশকের পুরনো একটি চুক্তি নবায়ন করে যেখানে জাপান নতুন করে প্লটোনিয়াম মজুদ করবে। কিন্তু এই চুক্তিটি অপরপক্ষের ৬ মাসের নোটিশে পর্যবসিত হতে পারে।

নতুন করে প্লুটোনিয়াম মজুদ করার ফলে জাপানে জ্বালানীর নতুন উৎস তৈরি করতে পারবে। কিন্তু যে হারে মজুদ করা হচ্ছে এর ফলে জাপানের মিত্ররাও বিষয়টি অন্যভাবে দেখতে শুরু করেছে।

প্লুটোনিয়াম পারমানবিক অস্ত্র তৈরীতে ব্যবহৃত হয়। যদিও প্লুটোনিয়াম দ্বারা জাপান কোন ধরণের সামরিক কাজে ব্যবহার করবে না বলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। জাপান যে পরিমাণ প্লুটোনিয়াম তাদের প্লান্টের জ্বলানী হিসেবে ব্যবহার করে থাকে বর্তমানে তার চেয়ে অধিক পরিমান মজুদ রয়েছে। এছাড়া ২০১১ সালের ফুকুশিমা দুর্ঘটনার পরবর্তীকালীন সময় থেকে তাদের অনেকগুলো নিউক্লিয়ার প্লান্ট বন্ধ রয়েছে।

বিশ্লেষকগণ মনে করেন, জাপান যে পরিমান প্লুটোনিয়াম মজুদ করছে তা যদি ফুকুশিমার মতো আবার কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ভূমিকম্প বা সুনামির তাহলে এর পরিণতি খুব ভয়াবহ হবে। এছাড়া এগুলো সন্ত্রাসীদেরও আগ্রহের বিষয়। এর ফলে চীন ও উত্তর কোরিয়ার মতো দেশগুলো এশিয়ায় আবার অস্ত্র প্রতিযোগিতায় নামবে।

এই মাসে জাপান  সরকার প্রথমবারের মতো প্লুটোনিয়াম মজুদের নতুন প্রক্রিয়ার ব্যাপারে বলেছে। দেশটির এটমিক  এনার্জি কমিশন প্লাটগুলো সুরক্ষিত আছে বলে জানায়। জাপান বর্তমানে ১০ টন  প্লুটোনিয়াম নিজেদের কাছ রেখেছে। আর বাকী ৩৭ টন ব্রিটেন ফ্রান্সের কাছে আছে।এটমিক এনার্জি কমিশনের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান তাটসুরিও সুজুকি বলেন, জাপান এর বেশি প্লুটোনিয়াম মজুদ করবে না বলে জানিয়েছে। এটা জাপানের জন্য নিউক্লিয়ার পুনর্ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

তবে ফুকুশিমা পারমানবিক কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার পর সারাদেশের সব পারমানবিক চুল্লি বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল যা আশঙ্কার অন্যতম কারণ। টোকিওর প্লুটোনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রকল্প এখানকার দেশগুলোর মধ্যে বিপজ্জনক অবস্থায় চলে যেতে পারে।   

এর পরেও জাপান সরকার কয়েক দশক আগের চুক্তি মোতাবেক ফান্স ও নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাল্টি বিলিয়ন ডলারের প্রক্ল্প বাস্তবায়ন করছে। এখনকার মোটামুটি সকল প্রকল্পগুলো ফ্রান্সের সাথে মিলিতভাবে সম্পন্ন করছে। জাপান নিজেদের কারিগরি সমস্যার কারণে নতুন প্রকল্পগুলোর সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারছেনা ।

এখন জাপানের দেখাদেখি চীনও তাদের মিত্র ফান্স ও রাশিয়াকে সাথে নিয়ে নবায়নযোগ্য প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছে। আবার দক্ষিণ কোরিয়াও এসব প্রযুক্তি ব্যবহার করতে চাইছে। জাপান বিশ্বের একমাত্র দেশ যারা পারমানবিক বোমা হামলার শিকার হয়েও তারা নিজেরা সামরিক কাজে প্লুটোনিয়াম ব্যবহার করেনি।  


আরো সংবাদ



premium cement