সেই ঈদ আর এই ঈদ
- ইব্রাহীম রাসেল
- ১৯ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০
এ কথা হলফ করে বলতে পারি আগেকার আর এখনকার ঈদ আনন্দে বিস্তর পার্থক্য। আশি কিংবা নব্বই দশকের কথাও যদি বলি, আমাদের শৈশব-কৈশোরের দিনগুলোর ঈদ আনন্দটা ছিল সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি-ভালোবাসা-আন্তরিকতায় মাখামাখি। বর্তমানে যা অনেকাংশেই আনুষ্ঠানিকতায় রূপ নিয়েছে। তখনকার সময় ঈদুল আজহার বা কোরবানির ঈদে কোরবানির পশুকে কেন্দ্র করে থাকত নানা আয়োজন। কোরবানির পশু কেনা থেকে শুরু করে পশুর লালনপালন, তাকে খাওয়ানো, গোসল করানো এমনকি পশুকে সজ্জিত করার কাজগুলো আমরা উৎসাহচিত্তে করতাম। বিশেষ করে গ্রামের ঈদ উৎসবগুলোতে ঈদ এলেই একটা সাজ সাজ রব পড়ে যেত। পশু কেনার জন্য বাবা-চাচার হাত ধরে পশুর হাটে যাওয়া। পশু পছন্দের ক্ষেত্রে আমাদেরকেই অগ্রাধিকার দেয়া হতো। পশু কেনা হয়ে গেলে পশুর গলার দড়ি হাতে বাড়ি অবধি নিয়ে আসা। পথে পথে মানুষের কৌতূহলি জিজ্ঞাসাÑ কত দিয়ে কেনা হলো, আনন্দচিত্তে তার উত্তর দেয়াÑ এ সবই ছিল প্রাথমিক আনন্দ। এরপর বাড়িতে এলে পশুকে রাখার জন্য জায়গা তৈরি করা। তার খাবার ব্যবস্থা করা। আপন উদ্যোগে কাঁঠালপাতা, কলাপাতা সংগ্রহ করে গরুর মুখের কাছে ধরা। বিকেল হলে আবার প্রতিবেশী বন্ধু বা সহপাঠীরা মিলে নিজেদের কোরবানির পশু নিয়ে একত্রে খোলা মাঠে গিয়ে ঘাস খাওয়ানো। একটা মৃদু প্রতিযোগিতা চলত ঘাস খাওয়ানো নিয়ে। কোরবানির দিন পশু জবাইয়ের পর মাংস বানাতে সবার সাথে নিজেও বসে পড়তাম দা-বঁটি নিয়ে। মাংস বানানো শেষে ভাগ করে নিজেদের জন্য একাংশ রাখা, গরিবদের জন্য একাংশ আর নিকটাত্মীয়দের জন্য একাংশ বাড়ি বাড়ি পৌঁছানোÑ এসব নিয়েই এক অনন্য আনন্দে কাটত আমাদের সেই সময়ের ঈদ।
বর্তমান সময়ের শিশু-কিশোরদের মধ্যে আর সে আনন্দ চোখে পড়ে না। গ্রামে যেমন অনেকাংশে কমে এসেছে, শহরে তো নেই বললেই চলে। শহরে তো এখন এমন অবস্থা যে কোরবানির পশুটা পর্যন্ত দেখা হয় না ছোটদের। কোরবানির দিনদুপুরে তারা বাসায় বসে দেখতে পায় কোরবানির মাংস চলে এসেছে। কোথায় কার সাথে কোরবানি দেয়া হলো কেবল বাবা বা অভিভাবকেরাই জানেন। আর আজকালকার শিশু-কিশোরদের মধ্যে এসব নিয়ে তেমন আগ্রহও চোখে পড়ে না। ঈদের ছুটি পেলে তারা বাসাতেই টিভি আর ভিডিও গেম নিয়ে মেতে থাকে। আমাদের ছোটবেলায় পশু কিনতে যদি আমাদের সাথে না নিতে চাইত, চিৎকার করে কান্নাকাটি শুরু করে দিতাম। আর আমাদের অভিভাবকেরাও তখন এসব বিষয়ে ছাড় দিতেন। এখনকার চিত্রটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। সময়ের বিবর্তনে আমরা ছোটদের এখন ছেড়ে দেয়ার চেয়ে যতটা পাড়ি ধরে রাখি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা