২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


বিদ্যুতবিহীন সিলেটবাসীর চরম দুর্ভোগ, আংশিক এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ

বিদ্যুতবিহীন সিলেটবাসীর চরম দুর্ভোগ, আংশিক এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ - প্রতীকী

সিলেটের কুমারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পাওয়ার গ্রিড ১৩২/৩৩ কেভি বিদ্যুৎ সরবরাহ উপকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বুধবার রাত সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত গত ৩১ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুতবিহীন অবস্থায় রয়েছেন সিলেট মহানগর ও এর আশপাশের এলাকার এক তৃতীয়াংশ লোক। বিদ্যুৎ না থাকার কারণে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন তারা। বিশেষ করে পানি সংকটের কারণে দুর্ভোগের শেষ নেই। তবে, সন্ধ্যে সাড়ে ছয়টা নাগাদ নগরীর এক চতুর্থাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কুমারগাঁওয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটলে দমকল বাহিনীর ৭টি ইউনিট একঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে, বুধবার রাত সাতটা পর্যন্ত সিলেটে বিদ্যুত সরবরাহ স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেনি।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ) খন্দকার মোকাম্মেল হোসেন জানান, মঙ্গলবার রাত থেকে প্রায় ৪০০ কর্মী কাজ করছেন। বুধবার মেরামত করা কিছু পিলার পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। তবে, বাকি এলাকায় কখন বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে তা বলা যাচ্ছে না।

কুমারগাঁওই সিলেটের বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রধান কেন্দ্র
সিলেটের কুমারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির নিয়ন্ত্রণাধীন গ্রিড লাইনই সিলেটের বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রধান ও একমাত্র কেন্দ্র। এই গ্রিড লাইনের অগ্নিকাণ্ডে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে সময় লাগছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) এক কর্মকর্তা।

আগুন লাগার ৩১ ঘণ্টা পরও সর্বত্র বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা সম্ভব হয়নি। বুধবার বিকেলে কুমারগাঁও গ্রিড লাইনে কর্মরত এক কর্মকর্তা বলেন, যে উপকেন্দ্রে আগুন লেগেছে ওটাই সিলেট শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রধান কেন্দ্রও। ক্ষতির পরিমাণ বেশি হওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহে দেরি হচ্ছে। তিনি জানান, মঙ্গলবার রাতে ঢাকা থেকে সরঞ্জাম ও লোক এসেছে। এখানে চার শতাধিক লোক কাজ করছেন সরবরাহ ঠিক করতে।

মঙ্গলবার রাতে সুনামগঞ্জের কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়। তবে সিলেট মহানগরসহ কয়েকটি উপজেলা এবং সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় বুধবার সন্ধ্যারাত পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি।

পানির তীব্র কষ্টে নগরবাসী
কুমারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি (পিজিসিবি)-এর নিয়ন্ত্রণাধীন গ্রিড লাইনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় পানির তীব্র সংকটে আছেন নগরবাসী। বাসাবাড়িতে দেখা দিয়েছে পানি সংকট। পর্যাপ্ত পানি না থাকায় বিপাকে পড়েছেন নগরবাসী। অনেকে পানি সংগ্রহ করতে রাস্তায় নেমে পড়েছেন।

বুধবার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, নগরীর ভেতরের সব পুকুর ও সুরমা নদী থেকে পানি সংগ্রহ করছেন স্থানীয়রা। শিশুসহ পরিবারের লোকজন সুরমা নদীর তীরে ভিড় করে পানি সংগ্রহ করছেন। যেখানেই সামান্য পানি মিলছে সেখান থেকে মানুষজন বোতল, বালতি, ড্রামসহ বিভিন্ন উপায়ে ভ্যানগাড়ি দিয়ে পানি সংগ্রহ করে বাসা-বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন।

তদন্ত কমিটিকে তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ
কুমারগাঁও বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত কমিটিকে ৩ দিনের মধ্যে নির্বাহী পরিচালক (ওএন্ডএম) পিজিসিবি বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেয় পাওয়ার গ্রিড অব কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (পিজিসিবি)।

পিজিসিবি’র নির্বাহী পরিচালক মো. মাসুম আলম বকসী জানান, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (ট্রান্সমিশন ২)-এর প্রধান প্রকৌশলী সাইফুল হককে আহ্বায়ক করে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বি এম মিজানুর রহমান, মোহাম্মদ ফয়জুল কবির ও পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (শ্রীমঙ্গল) নির্বাহী প্রকৌশলী আব্বাস উদ্দিন।


আরো সংবাদ



premium cement