০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ব্রিটিশ আমলের দ্রুততম ট্রেন কোনটি?

- ছবি : সংগৃহীত

বেশিরভাগ ভারতীয়দের নিত্য সফরসঙ্গী ট্রেন। যে ট্রেন ব্রিটিশ আমল থেকে ভারতে চলে আসছে। কিন্তু ব্রিটিশ আমলে ভারতের কোন ট্রেন সব থেকে দ্রুত চলত? সেটা জানেন কি? শুধু তাই নয়, সেই ট্রেন এখনো চলে।

সব থেকে দ্রুতগতির ট্রেন কোনটি?
সেই প্রশ্নটা বরাবরই যেনো মানুষের মধ্যে বাড়তি অ্যাড্রিনালিন ক্ষরণ করিয়ে এসেছে। এখন ভারতের দ্রুততম ট্রেন বললেই ‘বন্দে ভারত এক্সপ্রেস’ -এর নাম ভেসে ওঠে। যে ট্রেন ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটার বেগে চলতে পারে (বাণিজ্যিক পরিষেবার ক্ষেত্রে ঘণ্টায় ১৬০ কিমি বেগে চলে)। তাছাড়া ভারতের দ্রুততম ট্রেনের তালিকায় আছে রাজধানী এক্সপ্রেস, শতাব্দী এক্সপ্রেস, দূরন্ত এক্সপ্রেসের মতো ট্রেন। কিন্তু স্বাধীনতার আগে ভারতের দ্রুততম ট্রেন কোনটি ছিল?

ভারতীয় রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, ব্রিটিশ আমলে ভারতের দ্রুততম ট্রেন ছিল পাঞ্জাব মেইল। যে ট্রেন এবার ১১১তম জন্মদিন পালন করছে। তবে প্রাথমিকভাবে সেই ট্রেনের নাম ‘পাঞ্জাব মেইল’ ছিল না। বরং সেই ট্রেনের নাম ছিল ‘পাঞ্জাব লিমিটেড’। পরবর্তী সময়ে সেই ট্রেনের নাম হয় ‘পাঞ্জাব মেইল’।

ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে, ১৯১২ সালের ১ জুন মুম্বাইয়ে বালার্ড পায়ার মোল স্টেশন (এখন সেই স্টেশনের কোনো অস্তিত্বই নেই) থেকে রওনা দিয়েছিল তৎকালীন ‘পাঞ্জাব লিমিটেড’। গন্তব্য ছিল অধুনা পাকিস্তানের পেশোয়ার। উদ্বোধনী দৌড়ে P&O স্টিম ইঞ্জিনে ছুটেছিল পাঞ্জাব লিমিটেড। তাতে ছিলেন ব্রিটিশ আমলের অফিসার এবং তাদের স্ত্রীরা।

বর্তমানে যে রেলওয়ে আছে, সেটার পূর্বসূরি ছিল ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান পেনিনসুলা রেলওয়ে (জিআইপিআর)’। যা ১৮৯৪ সালের ১ অগস্ট ‘প্রাণ’ পেয়েছিল। সেই ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান পেনিনসুলা রেলওয়ে’ পরিষেবার হাব ছিল বালার্ড পায়ার মোল স্টেশন। সেই স্টেশন থেকেই পাঞ্জাব লিমিটেড যাত্রা শুরু করেছিল।

জিআইপি রুট ধরে মোট ২ হাজার ৪৯৬ কিলোমিটারের দীর্ঘ যাত্রাপথে মাত্র পাঁচটি স্টেশনে দাঁড়াত পাঞ্জাব লিমিটেড- ইটারসি, আগ্রা, দিল্লি, অমৃতসর এবং লাহোর। ওই দূরত্ব অতিক্রম করতে ৪৭ ঘণ্টা লাগত। প্রাথমিকভাবে পাঞ্জাব লিমিটেডে মোট ছ’টি কোচ থাকত। তিনটি কোচে যাত্রীরা যেতেন। তিনটি কোচে চিঠি পাঠানো হত। তিনটি কোচে মাত্র ৯৬ জন যাত্রী যেতে পারতেন।

১৯১৪ সাল থেকে মুম্বাইয়ের বোম্বে ভিটি (বর্তমান ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাল) থেকে যাত্রা শুরু করত। যে ট্রেন পাঞ্জাব মেইল নামেই পরিচিত হয়ে যায়। নির্দিষ্ট দিনের পরিবর্তে প্রতিদিন সেই ট্রেন চালানো হতে থাকে। এরই মধ্যে ১৯৩০ সাল নাগাদ পাঞ্জাব মেলে তৃতীয় শ্রেণির কোচ যুক্ত হয়। ১৯৪৫ সালে এসি কোচ যুক্ত হয়।

বর্তমানে মুম্বাই থেকে ফিরোজপুর ক্যান্টনমেন্ট পর্যন্ত চলে পাঞ্জাব মেইল। এক হাজার ৯৩০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে ৩২ ঘণ্টা ৩৬ মিনিট লাগে। দাঁড়ায় ৫২টি স্টেশনে। আপাতত সেই ট্রেনে এসি ফার্স্ট কাম এসি টু’টিয়ার কোচ, দু’টি এসি-২ কোচ, ছ’টি এসি থ্রি-টিয়ার কোচ, ছ’টি স্লিপার কোচ, একটি প্যান্ট্রিকার এবং পাঁচটি জেনারেল কোচ আছে। সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস


আরো সংবাদ



premium cement