২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কাশ্মিরের রাজ্য মর্যাদা ফিরিয়ে দেয়া হবে আগামীকালই!

কাশ্মিরি নেতৃবৃন্দ - ছবি : সংগৃহীত

ভারত-নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মিরকে কি আবার পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে? অন্তত তেমনই জল্পনা চলছে ভারতের রাজনৈতিক মহলে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার জম্মু-কাশ্মিরের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলির সাথে বৈঠক করবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের ডাকা এই বৈঠকে ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি), পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি), সিপিএম ছাড়াও অংশ নেবে কংগ্রেস। সেখানেই কাশ্মির নিয়ে কেন্দ্র ঢোঁক গিলতে পারে বলে আলোচনা তুঙ্গে।

উপত্যকার বিজেপিবিরোধী দলগুলোকে নিয়ে ‘পিপলস অ্যালায়েন্স ফর গুপকর ডিক্লারেশন’ নামের জোট তৈরি হয়েছিল ২০১৯ সালে। ওই বছরই আগস্ট মাসে জম্মু ও কাশ্মিরকে দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করে সংবিধানের ৩৭০ নম্বর ধারার বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নিয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারপর থেকেই লাদাখ এবং জম্মু-কাশ্মির, দু‌ই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চ঩লেই চলছে রাষ্ট্রপতি শাসন। উপত্যকায় রাজনৈতিক কার্যকলাপ একপ্রকার স্তব্ধ। সম্প্রতি জেলা উন্নয়ন কাউন্সিলের নির্বাচন হয়েছে। এবার সেখানে বিধানসভা ভোট করতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। যাতে অচলাবস্থা কাটিয়ে আবার মূলস্রোতে ফেরে উপত্যকা। সেই লক্ষ্য নিয়েই গুপকর জোটকে বৈঠকে ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাতেই জোরালো হয়েছে ড্যামেজ কন্ট্রোলের জল্পনা।

এই গুপকর জোটকেই একসময় ‘গুপকর গ্যাং’ আখ্যা দিয়ে বিজেপি ও মোদি সরকার অভিযোগ তুলেছিল, এরা আদতে স্বাভাবিকতা ফেরাতে চায় না।’ জোটের প্রধান দু‌'নেতা ফারুক আবদুল্লাহ, মেহবুবা মুফতিকে দীর্ঘদিন বন্দী করে রাখা হয়েছিল। অবশেষে স্বাভাবিকতায় ফেরানোর পদক্ষেপ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যে বৈঠক ডেকেছেন সেখানে এই জোটের প্রতিটি দলই দু’টি দাবি তুলতে চলেছে।

প্রথমত, জম্মু-কাশ্মীরের পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেয়া হোক। আর দ্বিতীয়ত, যে স্বীকৃতি সংবিধান প্রণেতারা দিয়েছিলেন, সেই বিশেষ অধিকার ৩৭০ ও ৩৫ নম্বর ধারার রক্ষাকবচ আবার ফেরানো হোক। মঙ্গলবার এনসি সভাপতি ফারুক আবদুল্লাহ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘এ ব্যাপারে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট। আমরা স্থির করেছি প্রত্যেকেই বৈঠকে যোগ দেব এবং জম্মু ও কাশ্মির নিয়ে নিজেদের দাবি জানাব।’

এর মধ্যেই রাজনৈতিক মহলের আলোচনা- কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মিরকে আবার পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে পারে মোদি সরকার। বিষয়টি বাস্তবায়িত হলে সেটা হবে কঠোর রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের দু’বছরের মধ্যেই ভোলবদল। যদিও বিজেপি এবং মোদি সরকারের পক্ষ থেকে আগে আশ্বাস দেয়া হয়েছিল যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার জম্মু-কাশ্মিরকে দেয়া হবে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা।

মঙ্গলবার মেহবুবা মুফতি, ওমর আবদুল্লাহরা বলেছেন, বৈঠকে গিয়ে আমাদের প্রধান দাবি হবে পূর্ণ রাজ্য। সেটা যদি দেয়া হয়, তাহলেও কেন্দ্র কোনো দয়া করবে না। কারণ, সেটা আমাদের অধিকার। মোদি সরকার নিজেরাই এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। বিরোধী গুপকর জোটের আরো বক্তব্য, ৩৭০ নম্বর ধারা ফেরানোর দাবি থেকে তারা সরে আসবে না। যদিও তা বাস্তবায়িত হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। তবে, পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা দিয়েই নির্বাচন প্রস্তুতির পথে হাঁটতে পারে কেন্দ্র। তেমনটা হলেও লাদাখকে আর জম্মু-কাশ্মিরের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হবে না। লাদাখ থেকে যাবে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে‌ই।
সূত্র : বর্তমান


আরো সংবাদ



premium cement