০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ভারতে মুসলিম গণহত্যায় আন্তর্জাতিক সমাজের নীরবতায় পাকিস্তানের ক্ষোভ

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশি - সংগৃহীত

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশি ভারতের মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের প্রতিক্রিয়ায় এ ব্যাপারে দায়িত্বশীল পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ভারতে মুসলমান ও অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার প্রকাশ্যেই লঙ্ঘন করা হচ্ছে, কিন্তু তার পরও মানবাধিকারের দাবিদার পাশ্চাত্যের দেশগুলো এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এ ব্যাপারে নীরব রয়েছে। পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মুসলমানদের ব্যাপারে ভারতের বিজেপি সরকার যে নীতি নিয়েছে তা খুবই বিপজ্জনক দিকে মোড় নিচ্ছে- মুসলমানদের ওপর হামলা ও হত্যাকাণ্ডই যার একমাত্র উদ্দেশ্য।

সম্প্রতি ভারতের মুসলমানরা নাগরিক আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোয় উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা নৃশংসভাবে হামলা চালিয়ে ৫০ মুসলমানকে হত্যা করে এবং সহিংসতায় আহত হয় আরো শত শত মুসলমান। কিন্তু ভারতে মুসলিম গণহত্যা এবং ভয়াবহ জুলুম-নির্যাতনের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সমাজের নীরবতা সবাইকে বিস্মিত করেছে। ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে সম্প্রতি নাগরিক আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী মুসলমানদের ওপর উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা হামলা চালালে বহু মানুষ হতাহত হয়। কিন্তু এর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সমাজ টুঁশব্দটিও করেনি। বিস্ময়কর এ নীরবতা ভারতের উগ্র হিন্দুদের জন্য সবুজ সঙ্কেত এবং তারা সঙ্ঘবদ্ধভাবে মুসলমানদের বিরুদ্ধে আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

মার্কিন ফরেন পলিসি সাময়িকীতে প্রকাশিত এক নিবন্ধে আমেরিকার ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অশুতোষ ভারশেনি বলেছেন, ‘দিল্লিতে মুসলিম গণহত্যা সম্পূর্ণ পূর্বপরিকল্পিত। বলা যায়, এসব উগ্র হিন্দুদের সাথে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উগ্র নীতির সাথে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। ২০০২ সালে গুজরাটে সংঘটিত মুসলিম গণহত্যার সময়ও নরেন্দ্র মোদি সেখানকার মুখ্যমন্ত্রীর পদে ছিলেন। তার উপস্থিতিতে ভয়াবহ ওই গণহত্যায় সরকারি হিসাব মতে এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল, যাদের বেশির ভাগই ছিল মুসলমান।
সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে মুসলমানদের ওপর গণহত্যা চালানো ছাড়াও উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা অন্তত ১০টি মসজিদে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনী মুসলমানদের বিরুদ্ধে গণহত্যা রোধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি এবং চেয়ে চেয়ে দেখেছে। এমনি কোনো কোনো ক্ষেত্রে খোদ পুলিশও উগ্র হিন্দুদের সাথে তালি মিলিয়ে মুসলমানদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতন চালিয়েছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ভারতে মুসলিমবিরোধী সহিংসতার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সমাজের নীরবতা খুবই দুঃখজনক। এক দিকে পাশ্চাত্যের প্রভাবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর নীরবতা অন্য দিকে মুসলিম দেশগুলোর নিষ্ক্রিয় অবস্থানের কারণে ভারতে অবাধে মুসলিম নিধন চলছে। এ অবস্থায় ভারতের ইসলামী সংগঠনগুলো এবং বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোর উচিত মুসলমানদের ওপর হত্যা নির্যাতন অব্যাহত থাকার পরিণতির ব্যাপারে ভারত সরকারকে সতর্ক করে দেয়া। এরই মধ্যে ইরানের সর্বোচ্চ নেতাসহ অন্য কর্মকর্তারা ভারতে মুসলিম হত্যাকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সূত্র : পার্সটুডে


আরো সংবাদ



premium cement