জুম্মু-কাশ্মিরে যাচ্ছেন ভারতীয় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তার সাথে বিরোধী দলের আরো কয়েকজন নেতা যাবেন। অবশ্য ভারত সরকার তাদের সেখানে যেতে নিষেধ করেছেন। এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, শ্রীনগরে যাওয়ার সরকারি অনুমতি পাওয়ার ব্যপারে সন্দেহ থাকলেও রাহুল সেখানে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল।
উল্লেখ্য বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর এখন পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক নেতাকে কাশ্মিরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকার গত ৫ অগাস্ট জম্মু-কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে রাজ্যটিকে কেন্দ্রশাসিত দু’টি অঞ্চলে ভাগ করে। বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর থেকেই সেখানে বিশেষ করে রাজ্যের সবচেয়ে বড় নগরী শ্রীনগরে উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং নানা জায়গায় প্রতিবাদ-বিক্ষোভের খবর পাওয়া যাচ্ছে।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর শ্রীনগর উপকণ্ঠের সোউরায় শত শত বিক্ষোভকারী সড়কে নেমে বিক্ষোভ শুরু করে বলে জানায় বিবিসি। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের বাধা দিলে তারা পুলিশের দিকে পাথর নিক্ষেপ করে।
সংঘর্ষের এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করলে অন্তত দুই বিক্ষোভকারী আহত হন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত বিবিসির এক প্রতিনিধি বলেন, আহত একজনের চোখ থেকে রক্ত পড়ছিল। অন্যজন গলায় আঘাত পেয়েছেন। যদিও ঠিক কতজন আহত হয়েছেন তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কারণ আহত অনেকে গ্রেপ্তার হওয়ার ভয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাননি বলে জানায় বিবিসি।
এ পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক নেতাদের কাশ্মির সফর করা উচিত হবে না বলে এক টুইটে পরামর্শ দিয়েছেন জম্মু-কাশ্মিরে ইনফরমেশন অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন অধিদপ্তর।
রাহুলের সাথে অন্য যেসব দলের নেতাদের শ্রীনগর যাওয়ার কথা রয়েছে তারা হলো : সিপিআই(এম), সিপিআই, রাষ্ট্রীয় জনতা দল, ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি, তৃণমূল কংগ্রেস এবং ডিএমকে।
এছাড়া কংগ্রেস পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতা গুলাম নবী আজাদ এবং আনন্দ শর্মা জম্মু-কাশ্মির যাত্রায় রাহুলের সঙ্গী হবেন।
বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর গুলাম নবী এর আগে দুইবার কাশ্মির যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু দুইবারই তাকে জম্মু বিমানবন্দরে আটকে দিয়ে জোর করে দিল্লি পাঠিয়ে দেয়া হয়। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার তিনি এ চেষ্টা করেছিলেন বলে জানায় এনডিটিভি।
রাহুলকে অবশ্য জম্মু-কাশ্মিরের গভর্নর সত্য পাল মালিক গত ১১ অগাস্ট পরিস্থিতি নিজ চোখে দেখতে কাশ্মির সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তখন তিনি রাহুলের জন্য কেন্দ্র থেকে দেয়া উড়োজাহাজ পাঠাতেও চেয়েছিলেন।
তিনি বলেছিলেন, ‘আমি রাহুল গান্ধীকে এখানে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছি। আমি আপনাকে উড়োজাহাজ পাঠাবো, যাতে আপনি এখানে এসে পরিস্থিতি দেখে তারপর কথা বলেন। আপনি একজন দ্বায়িত্বশীল ব্যক্তি এবং আপনার এভাবে না দেখে কিছু বলা উচিত না।’
জম্মু-কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর রাহুল বলেছিলেন, তিনি সেখানে ‘সংঘর্ষ এবং বহু মানুষের মৃত্যুর’ খবর পাচ্ছেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে গভর্নর তাকে ওই আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।
গভর্নরের আমন্ত্রণ পাওয়ার দুই দিন পর রাহুল তা গ্রহণ করেন। কিন্তু ততক্ষণে গভর্নর তার মত বদলে আমন্ত্রণ প্রত্যাহার করেন এবং রাহুলের ভ্রমণের উপর কিছু শর্ত আরোপ করে বিবৃতি দেন।
গভর্নর মালিক বিবৃতিতে বলেন, ‘রাহুল গান্ধী তার সাথে বিরোধীদলের প্রতিনিধিদের আনতে চেয়ে বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করতে চাইছেন। যা আরো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে এবং এখানে সাধারণ মানুষ অসুবিধায় পড়তে পারেন।’
শুক্রবার জম্মু-কাশ্মির প্রশাসন থেকে বিরোধীদলের নেতাদের শ্রীনগর ভ্রমণে না যাওয়ার আহ্বানও জানানো হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা