৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


সুদূরে ভালো থাকুন রিয়াজ ভাই

-

রিয়াজ ভাই নেই, তিনি প্রেস ক্লাবে আর আসবেন না এ কথা ভাবতে খুব কষ্ট হচ্ছে। অথচ এটাই সত্য, তিনি আমাদের ছেড়ে চিরদিনের জন্য চলে গেছেন। গত রোববার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বেদনাবিধুর পরিবেশে আমরা সাংবাদিক সহকর্মীরা, বিভিন্ন পেশা ও স্তরের মানুষ তাকে জানিয়েছি শেষ শ্রদ্ধা। বনানী কবরস্থানে মায়ের কবরে এখন তিনি শায়িত।

রিয়াজ ভাইয়ের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে আমাদের দেশের সাংবাদিকতা জগতের আরেকটি স্তম্ভ যেন ধসে পড়ল। পঞ্চাশ-ষাটের দশকে যে সব কৃতী সাংবাদিকের উজ্জ্বল দ্যুতিতে এদেশের সাংবাদিকতার অঙ্গন আলোকিত হয়েছিল তাদের মধ্যে তিনি ছিলেন একজন। সাংবাদিকতার প্রতিষ্ঠান, আমাদের অভিভাবক এবং আশ্রয়স্থল হিসেবেই রিয়াজ ভাইকে আমরা দেখে এসেছি।

দেশবরেণ্য একজন সাংবাদিক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ। ৫৩ বছরেরও বেশি সময় সাংবাদিকতা পেশায় নিবিড়ভাবে যুক্ত ছিলেন। ১৯৬৮ সালে ইংরেজি ‘দৈনিক পাকিস্তান অবজারভারে’ যোগদানের মাধ্যমে সাংবাদিকতার শুরু। মৃত্যুর আগে ফিন্যান্সিয়াল হেরাল্ড পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনে বাংলাদেশ অবজারভারের চিফ রিপোর্টার, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ছিলেন দ্য ফিন্যান্সিয়াল এক্সেপ্রেসের প্রধান সম্পাদক, দ্য টেলিগ্রাফের সম্পাদক, দ্য ডেইলি স্টারের উপ-সম্পাদক এবং নিউজ টুডের সম্পাদক। লন্ডনের দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমস পত্রিকার বাংলাদেশ প্রতিনিধি হিসেবেও কাজ করেছেন। ১৯৬৩ সালে তিনি নরসিংদী কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি ছিলেন। একাত্তরের ২৫ মার্চের পর মুক্তিযুদ্ধের সাংগঠনিক কাজেও যুক্ত হন তিনি। নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অখণ্ড বিএফইউজের সভাপতি হিসেবে মূল নেতৃত্ব দিয়েছেন। সাংবাদিকতা পেশায় আসার আগে রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজ ও কাপাসিয়া কলেজে অর্থনীতি বিষয়ে শিক্ষকতা করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে মাস্টার্স ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময়ের সাংবাদিকতা জীবনে রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ অবিভক্ত বিএফইউজে ও জাতীয় প্রেস ক্লাব- সব মিলিয়ে ১৪ বছর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। পেশা এবং পেশাসংক্রান্ত বিভিন্ন সংগঠনের সফল নেতৃত্ব দিয়েছেন। টেলিগ্রাফ, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস ও নিউজ টুডের সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ২৪ বছর। তার রিপোর্ট ও নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে ইন্টারন্যাশনাল হেরাল্ড ট্রিবিউন, লন্ডনের ফিন্যান্সিয়াল টাইমস, এমিরেটস নিউজসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পত্রিকা ও জার্নালে। রিপোর্টার ও সম্পাদক হিসেবে বিশ্বের বহু গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক ঘটনাবলি কভার করেছেন। সার্ক দেশগুলোর সাংবাদিকদের সংগঠন সাউথ এশিয়ান ফ্রি মিডিয়া অ্যাসোসিয়েশন-সাফমার সভাপতিও ছিলেন তিনি। সাংবাদিকতা পেশায় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে রাষ্ট্রীয় একুশে পদকসহ বহু পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন।

প্রেস ক্লাব তার কাছে ‘গণতন্ত্রের দ্বীপ’
প্রেস ক্লাবে জানাজার আগে রিয়াজ ভাইয়ের ছেলে মাসরুর রিয়াজ বাবা সম্পর্কে অনুভূতি জানিয়ে বলেন, ‘বাবার কাছে দু’টি পরিবার ছিল। একটি ছিলাম আমরা রক্তের সম্পর্কের পরিবার। অন্যটি এর বাইরে তার বড় পরিবার ছিল সাংবাদিক সমাজ তথা প্রেস ক্লাব পরিবার। তিনি প্রেস ফ্রিডম এবং সাংবাদিকদের অধিকারের জন্য কাজ করেছেন নিরন্তর।’

জাতীয় প্রেস ক্লাব ছিল রিয়াজ ভাইয়ের প্রাণ। চার মেয়াদে সভাপতি হিসেবে আট বছর ক্লাবের নেতৃত্ব দিয়েছেন। প্রেস ক্লাব সাংবাদিকদের দ্বিতীয় গৃহ কথাটি তার মুখে বারবার উচ্চারিত হতো। প্রেস ক্লাব নিয়ে তার আলোচিত উক্তি- ‘প্রেস ক্লাব ইজ দ্য আইল্যান্ড অব ডেমোক্র্যাসি ইন দ্য ওশেন অব অটোক্র্যাসি’। অর্থাৎ ‘স্বৈরাচারের মহাসমুদ্রে প্রেস ক্লাব আমাদের গণতন্ত্রের একখণ্ড দ্বীপ।’ তিনি বলতেন, গত চার দশকেরও বেশি সময় ধরে আমি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সদস্য। এ ক্লাব আমাদের গর্ব, ঐতিহ্য এবং অহঙ্কার। সংগ্রামে, স্বাধীনতা আর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় প্রেস ক্লাবের অর্জন অনেক। আমরা এ ক্লাবের সদস্য হিসেবে গর্বিত। এই ক্লাব শুধু ইট-কাঠের একটি দালান মাত্র নয়, এটি একটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান। সবার কথা বলার, নিজেকে প্রকাশ করার শেষ জায়গা জাতীয় প্রেস ক্লাব। লন্ডনের হাইড পার্কের সাথে একে তুলনা করে তিনি বলতেন, হাইড পার্ক আর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে কথা বলতে অনুমতি লাগে না। অনেকটা গণতন্ত্র স্কয়ারের মতো। নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের সময় প্রেস ক্লাবের সত্যিই গণতন্ত্র স্কয়ারে পরিণত হয়েছিল। ক্লাব পরিবারের সদস্যদের আনন্দ, খেলাধুলা, খাওয়া-দাওয়া তো আছেই। তবে প্রেস ক্লাবের মূল বৈশিষ্ট্য এর গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য। তিনি আরো বলতেন, প্রেস ক্লাব শুধু খবর জানানোর জায়গাই নয়, এখানে প্রতিনিয়ত খবর তৈরিও হয়। খবরের অনেক উৎস প্রেস ক্লাব। দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য অনেক সংগঠন আসে প্রেস ক্লাবে অথবা এর সামনের চত্বরে। কেউ সভা করেন, কেউ মিছিল করেন, কেউ বা অনশন ধর্মঘট করেন প্রতিবাদ জানাতে। এমন ঘটনাও ঘটেছে আমরণ অনশন দীর্ঘ প্রায় এক বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছে। কিন্তু সবাই আবার সহিসালামতে ঘরে ফিরে গেছেন। এ দেশের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময়, সাম্প্রদায়িকতা-বিরোধী আন্দোলন, স্বাধিকার আন্দোলনসহ নানা লড়াই-সংগ্রামে মানুষ যখন কোথাও কথা বলতে পারত না, তারা জাতীয় প্রেস ক্লাবে এসে আশ্রয় নিত। প্রেস ক্লাবকেন্দ্রিক আন্দোলন গড়ে উঠত। যে প্রেস ক্লাবে সবাই আসতে পারত, কথা বলতে পারত, সব রকমের মত প্রকাশ করতে পারত, দুঃখজনক হলেও সত্য, সেই প্রেস ক্লাব হারিয়ে গেছে।

মুক্ত সাংবাদিকতা ও রিয়াজ ভাই
গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়ে সোচ্চার ছিলেন রিয়াজ ভাই। মুক্ত সাংবাদিকতা ছিল তার স্বপ্ন। এ জন্য পেশাগত জীবনের প্রায় পুরোটা সময় তিনি মুক্ত সাংবাদিকতার পক্ষে কথা বলেছেন। সাংবাদিক নেতা, সংবাদকর্মী এবং একজন সম্পাদক- প্রতিটি অবস্থানে থেকেই এ নিয়ে আওয়াজ তুলেছেন। গণমাধ্যমবিরোধী প্রতিটি কালাকানুনের বিরুদ্ধেই ছিল তার প্রতিবাদ।

সাংবাদিকতা জীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে ‘সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন’ শিরোনামে একটি বই লিখেছেন। বইটিও তিনি উৎসর্গ করেছেন ‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় যারা সংগ্রাম করেছেন তাদের। বইয়ের উপসংহারে তিনি লিখেছেন, ‘সাংবাদিকতা পেশাকে স্বাধীন বাংলাদেশে সংগঠিত করার ব্যাপারে চেষ্টা করেছি। আপ্রাণ চেয়েছি দেশে কালাকানুনমুক্ত একটি মিডিয়াবান্ধব পরিবেশ তৈরি হোক। আমার খুব আশা, দেশে একটি রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক সুষ্ঠু পরিবেশ বিরাজ করুক। যে পরিবেশে সবাই মুক্ত সাংবাদিকতা করতে পারবে, মানুষ মুক্তমনে কথা বলতে পারবে।’ কিন্তু দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে আশাহত হয়েছেন তিনি। মৃত্যুর আগে এক সাক্ষাৎকারে দুঃখ করে বলেছেন, ‘আমরা গণতন্ত্রকে হারিয়ে ফেলেছি। রাজনীতিবিদদের অপরিণামদর্শিতার কারণে রাজনীতির ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ নেই। ফলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি। স্বাধীনতার স্বপ্ন অপূর্ণ থেকে গেল। আর গণতন্ত্র না থাকায় স্বাধীন সাংবাদিকতার পথও এখন রুদ্ধ।

সরকারের সর্বশেষ জারি করা ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের কঠোর সমালোচনা করে গেছেন রিয়াজ ভাই। সাংবাদিকতার ওপর চাপ এবং সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন, মামলা-হামলার প্রতিবাদ করে বলেছেন, ‘সাংবাদিকতা নতুনভাবে চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়েছে। যদিও চাপের মধ্যেই সব সময়ই সাংবাদিকদের কাজ করতে হয়েছে, তবুও বর্তমান অবস্থা পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলেছে। সাংবাদিকতা কুসুমাস্তীর্ণ কোনো পেশা নয়, কণ্টকাকীর্ণ। আইয়ুব খানের প্রিন্টিং প্রেসেস এ’ পাবলিকেশন্স অর্ডিন্যান্স, বিশেষ ক্ষমতা আইন এবং এখনকার ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট সব ক’টিতেই একই ধারায় সাংবাদিকতার স্বাধীনতাবিরোধী বিধান প্রণয়ন করা হয়েছে। স্বাধীন সাংবাদিকতা স্তব্ধ করে দিতে এসব কালাকানুন করা হয়েছে। নতুন করে আমরা বাংলাদেশে দেখেছি, একজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ব্যবহার করা হয়েছে। এই আইনের প্রয়োগ বাংলাদেশে এই প্রথম। সাম্প্রতিককালে এ আইন মিয়ানমারে রয়টার্সের দু’জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে। আইনটি ব্রিটিশ ভারতে ১৯২৩ সালে প্রণীত হয়। সত্য গোপন করে দুর্নীতি করা ও স্বাধীনতার আন্দোলনকে দমিয়ে রাখতে ব্রিটিশরা এটি করেছিল। শত বছর পর সেই আইন বাংলাদেশে একজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হলো। আমি এতে মর্মাহত এবং যন্ত্রণায় দগ্ধ’। তিনি দুঃখ করে আরো বলেছেন, ‘আইয়ুব খানের প্রিন্টিং প্রেসেস অ্যাক্টে সাংবাদিকদের কলম এবং পত্রিকা বন্ধ করতে যেসব ধারা ছিল, পরে সেগুলো বিশেষ ক্ষমতা আইনের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়া হয়। আমাদের আন্দোলনের ফলে ১৯৯১ সালে এসব কালাকানুন বাতিল হয়েছিল। এখন আবার সেগুলো আরো ভয়াবহ আকারে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। তেমনি আইসিটি আইনের ৫৭ ধারা নিয়ে আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করে তা বাতিলে আন্দোলন করেছি। এটি বাতিল করা হলেও আবার তা কঠোরভাবে এলো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে। এ আইনের নানা অপপ্রয়োগ এখন চলছে। সাংবাদিকতার স্বাধীনতার সবচেয়ে বড় গ্যারান্টি শক্তিশালী সম্পাদকীয় প্রতিষ্ঠান। সেটিও এখন দুর্বল। তিনি সাংবাদিকদের দ্বিধা বিভক্তিকে বেদনাদায়ক উল্লেখ করে বলেছেন, ‘বৃহত্তর স্বার্থেই সাংবাদিকদের ঐক্য দরকার। আন্দোলন করেই সাংবাদিকদেরকে স্বাধীন সাংবাদিকতার পথ উন্মুক্ত করতে হবে।’

কিছু কথা কিছু স্মৃতি
রিয়াজ ভাই সম্পর্কে আজ অনেক কিছুই মনে পড়ছে। একজন মানুষ যাকে সবাই পছন্দ করতেন, ভালোবাসতেন। প্রেস ক্লাবে এলে পুরো ক্লাবটাই যেন আনন্দে ভরে উঠত। একজন উদারমনা মানুষ ছিলেন তিনি। লাউঞ্জে দেখা যেত তিনি আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই তাকে ঘিরে জমে উঠেছে জমজমাট আড্ডা।

রিয়াজ ভাই বছরে একবার তার গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর নারান্দীতে আমাদের নিয়ে যেতেন। সেখানে গ্রাম্য মেলা, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো। আয়োজন থাকত শীতের পিঠার। চাইশি নামে ঢাকায় চীনের একজন রাষ্ট্রদূত ছিলেন তার বন্ধু। তিনি তাকেও সেখানে নিয়ে গেছেন। চীনা দূতাবাসের উদ্যোগে গ্রামের মানুষদের সহযোগিতায় প্রশিক্ষণ ও বিনোদনের জন্য একটি মাল্টিপারপাস সেন্টার সেখানে করা হয়েছে।

রিয়াজ ভাইয়ের সাথে ভ্রমণও খুব আনন্দের ছিল। চীনে দু’বার তিনি প্রেস ক্লাবের সাংবাদিক প্রতিনিধিদল নিয়ে গেছেন। একটি দলে আমার যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। মনে হয়েছে, সেটাই ছিল আমার জীবনের সেরা ভ্রমণ, খুব উপভোগ করেছি। এক রেস্তোরাঁয় ‘বেইজিং ডাক’ ও চালের রুটি খেয়েছিলাম মজা করে। বাবুর্চিকে ডেকে চীনা অনুবাদকারীর সহযোগিতায় প্রস্তুত প্রণালী রিয়াজ ভাই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। খাবারটি সেভাবেই তৈরি হয়। সার্ক শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষে সাফমার অনুষ্ঠানে রিয়াজ ভাইয়ের সাথে দিল্লি গিয়েছিলাম। অশোকা হোটেলে ছিলাম। সেখানকার ‘গোলাপ জাম’ মিষ্টি স্পেশাল এক খাবার। রিয়াজ ভাই আমাদের বললেন, এ হোটেলের গোলাপ জাম খেতে যেন আমরা ভুলে না যাই। আসলেই অসাধারণ স্বাদের সেই মিষ্টি। রিয়াজ ভাইকে নিয়ে সেখানে ফিলিস্তিনের বেলে ড্যান্স আমরা উপভোগ করেছিলাম।

করোনার কারণে দেড় বছরেরও বেশি সময় পর রিয়াজ ভাইকে আমরা ক্লাবে দেখতে পাই। আগের মতোই আমরা আড্ডায় মেতে উঠি। গিয়াস কামাল চৌধুরী ভাইয়ের স্মরণসভায় তিনি ছিলেন প্রধান অতিথি। অনুষ্ঠানে গিয়াস ভাইয়ের সাথে তার সারা জীবনের বন্ধুত্বের মজাদার সব ঘটনা এক এক করে বললেন। অনুষ্ঠানটি খুবই উপভোগ্য ছিল। এর কিছু দিন পরই করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের আইসিইউতে চলে যান রিয়াজ ভাই। সেখানেই তিনি ইন্তেকাল করেন।
লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় প্রেস ক্লাব


আরো সংবাদ



premium cement