২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ফোন ট্র্যাকিং থেকে বাঁচার উপায়

আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোনটি দিয়ে নানা উপায়ে আপনাকে ট্র্যাক করা সম্ভব। সারা দিনে কাজ, ব্যবসায়-সম্পর্কিত কিংবা ব্যক্তিগত নানা কারণে আমরা ফোনের ব্যবহার করে থাকি। আপনার ফোনটি ট্র্যাকিং করা হচ্ছে কিনা সেটি কিভাবে শনাক্ত করবেন বা কী কী উপায়ে আপনার ফোন ট্র্যাকি
-

ফোন ট্র্যাকিং অনেক অপ্রত্যাশিত উপায়ে হতে পারে। আপনার ব্যবহৃত ডিভাইসটিতে কারো প্রবেশের অধিকার থাকলে সহজেই সেই ব্যক্তি আপনার ফোনে লোকেশন-ট্র্যাকিং ফিচারটি সক্রিয় করতে পারবে। আর অন্য কোনো ব্যক্তি ট্র্যাকিং চালু করেছেন কিনা সেটি ডিভাইসের মালিক বুঝতেও পারবেন না। এ ছাড়া আপনার কর্মক্ষেত্র বা নিয়োগকর্তাও আপনার ফোনের ব্যবহার ট্র্যাকড করতে পারে। বিশেষ করে যেসব ক্ষেত্রে আপনার ডিভাইসটি কোম্পানি থেকে ইস্যু করা থাকে। এমনকি আপনার স্মার্টফোনটি যদি একটি করপোরেট নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত থাকে, সে ক্ষেত্রেও আপনাকে ট্র্যাকিং করা সম্ভব।
এর বাইরে অনেক অ্যাপ ও ফোন পরিষেবাতে রয়েছে বিল্ট-ইন ট্র্যাকিং ফিচার। এই ফিচারগুলো কখনো কখনো বেশ কাজের এবং প্রয়োজনীয়। যেমন- অ্যান্ড্রয়েড তার ব্যবহারকারীদের বর্তমান অবস্থানের ওপর ভিত্তি করে কাছাকাছি এলাকাগুলো সম্পর্কে তথ্য দেখায়। যেন তারা সেই এলাকা সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পারে।
২০১৯ সালে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের একটি তদন্তে ২৫০টি আইফোন অ্যাপ পরীক্ষা করা হয়। যেখানে দেখা হয় যে পণ্য বা পরিষেবাগুলো ব্যবহারকারীদের ট্র্যাক করেছে কিনা। ফলাফলে দেখা যায়, তাদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেছে।
মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোও ট্র্যাকিংয়ের সাথে জড়িত। কারণ প্রতিটি ফোনই কোম্পানির মালিকানাধীন সেল টাওয়ারে ব্যক্তিগতভাবে শনাক্তযোগ্য তথ্য পাঠায়। যদিও এটি সংযোগ স্থাপনের জন্য একটি প্রয়োজনীয় অংশ। কারণ ফোন কোম্পানিগুলোকে অবশ্যই আপনার অবস্থান যাচাই করতে হবে। এ ছাড়া আপনি যে তাদের একজন গ্রাহক তা নিশ্চিত করতে হবে।
কিভাবে বুঝবেন আপনার ফোন ট্র্যাক করা হচ্ছে?
অনেকে ফোন ট্র্যাকিংয়ের কিছু লক্ষণ শনাক্ত করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ তারা লক্ষ্য করতে পারেন, ডিভাইসটি ধীর হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন কর্মক্ষমতায় অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন দেখা যায়। তবে ট্র্যাকিং করা হলে তা সব সময় এত সুস্পষ্টভাবে বোঝা যায় না।
আপনি বিভিন্ন কোড ডায়াল করে দেখতে পারেন। যেগুলো ফোন ট্র্যাকিং করা হলে সম্ভাব্য কিছু প্রতিক্রিয়া দেখাবে। যেমন- *#৬১# লিখে ডায়াল করলে ইনকামিং কলগুলো অন্য কোনো নম্বরে ফরওয়ার্ড করা হয় কিনা তা জানাবে। একইভাবে *#৬২# ডায়াল করে আপনি দেখতে পারবেন, কোনো ডাইভারশন সফটওয়্যার বিভিন্ন কল এবং টেক্সটকে আপনার কাছে পৌঁছাতে বাধা দেয় কি না।
ফোনের অ্যারোপ্লেন মোড ফিচারটি চালু করলে তা সেলুলার এবং ওয়াইফাই নেটওয়ার্কগুলোর সেই সংযোগগুলোকে বাধা দেয়, যেগুলো ট্র্যাকিংয়ে সাহায্য করে। প্রথমে ফ্লাইট মোড নির্বাচন করুন। তারপর আপনার ফোনের জিপিএস বা লোকেশন ফিচারটির অবস্থা পরীক্ষা করুন। ফ্লাইট মোড চালু করার পর প্রায়ই লোকেশন সেটিংস স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু এই ফিচারগুলো বন্ধ করলে আপনি কল বা মোবাইল ডেটার জন্য আপনার ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না। তবে ট্র্যাকিং বন্ধ করার জন্য এটি একটি দ্রুত উপায়। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারের জন্য এটি আদর্শ নয়।
যারা অ্যাপভিত্তিক ট্র্যাকিং সম্পর্কে অনেক বেশি উদ্বিগ্ন। তারা অপারেটিং সিস্টেম বা ওএস-ভিত্তিক সেটিংস থেকে এটিকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেন। অ্যাপলের আইওএসের সাম্প্রতিক সংস্করণগুলো সব ধরনের অ্যাপের ক্ষেত্রে ট্র্যাকিং বন্ধ করার সুযোগ দিয়ে থাকে।
গুগলও সম্প্রতি অ্যান্ড্রয়েডের জন্য প্রাইভেসি স্যান্ডবক্স নামে অনুরূপ একটি ফিচারের ঘোষণা করেছে। এটি থার্ড পার্টির কাছে ব্যক্তিগত ডেটা স্থানান্তর সীমিত করে আনে। এ ছাড়া এটি সব অ্যাপে ট্র্যাকিং কার্যক্রম চলার অনুমতি দেয় না।
ওয়েব ব্রাউজার হিসেবে বেশির ভাগ মানুষ গুগল ক্রোমকে তাদের পছন্দের শীর্ষে রাখে। তবে অনেকে বুঝতে পারে না, এটি ব্যবহারকারীদের অনলাইন কার্যকলাপ ট্র্যাক করে থাকে। কিন্তু আপনি চাইলে বিভিন্ন পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে গুগলের ট্র্যাকিং ফিচারগুলো বন্ধ করতে পারবেন।


আরো সংবাদ



premium cement