২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দৃষ্টিপাত : সরকারি খরচে প্রবাসীদের লাশ দেশে পাঠানো

-

আপনি যখন কোনো এক প্রবাসীকে জিজ্ঞেস করবেন যে, সে কী চায়, তখন প্রবাসীদের উত্তর হবে ‘আমার কিচ্ছু চাওয়ার নেই, পরিবার সুখে থাকলেই আমি সুখী।’ সত্যিই, প্রবাসীদের আসলে চাওয়ার কিছু নেই, তারা কিছু চাইতেও জানে না, তারা জানে শুধু দিতে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় এক কোটি ২০ লাখ প্রবাসী দিন-রাত পরিশ্রম করে অর্থ উপার্জন করছেন, যা তাদের পরিবার পরিজনের চাহিদা মেটাতে, তাদের মুখে হাসি ফোটাতে সক্ষম বটে; কিন্তু কখনো কি কেউ ভেবেছে, এসব প্রবাসী আসলে কী চায়? এসব প্রবাসী চায় তার মৃত্যু যদি মরুর দেশে হয়ে যায়, তা হলে যেন লাশ হাসপাতালের মর্গে মাসের পর মাস পড়ে না থাকে, তার লাশ দেশে নেয়ার জন্য তার সহকর্মীদের অন্য মানুষের কাছে যেন ভিক্ষা করতে না হয়। লাশ দেশে পাঠাতে যেন পরিবারের ভিটেমাটি বিক্রি করে চার লাখ টাকা জোগাড় করতে না হয়।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, প্রতিদিন কোনো না কোনো দেশ থেকে প্রবাসীদের মৃত্যুর খবর আসে; সেই সাথে তাদের পরিবারের হাহাকারের আর্তচিৎকারে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। নিজ সন্তানকে শেষবার দেখতে কতটা ব্যাকুল হয়ে ওঠে মায়ের মন, তা আপনি একজন মা হয়ে অবশ্যই উপলব্ধি করতে পারেন।
যে প্রবাসীকে আপনি ‘রেমিট্যান্স যোদ্ধা’ বলেন, সেই যোদ্ধার মৃত্যুর পর তার লাশ পড়ে থাকে হাসপাতালের মর্গে। হিম শীতল ঠাণ্ডা ঘরে মাসের পর মাস পড়ে থাকতে হয়। এ দিকে পরিবারের কান্নার রেশ কেটে চোখের পানি যেন শুকিয়ে যায়। তার পরও প্রিয়জনের লাশ দেশে পৌঁছায় না, কারণ দেশে লাশ পাঠাতে হলে গুনতে হবে তিন লাখ থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা। একটি পরিবারের মূল উপার্জনক্ষম মানুষটিই যখন হাসপাতালের মর্গে পড়ে আছে, তার পরিবার কিভাবে এত টাকা একসাথে দেবে?
প্রধানমন্ত্রী, প্রবাসীরা দেশের জন্য বিদেশের মাটিতে দিন-রাত কাজ করে দেশকে রেমিট্যান্স দিচ্ছে। সমৃদ্ধ হচ্ছে দেশের অর্থনীতি। তবু রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের এ করুণ দশা কখনো সমীচীন নয়।
তাই আপনার কাছে একজন রেমিট্যান্স যোদ্ধা হিসেবে দাবি জানাচ্ছি, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেকোনো বাংলাদেশী রেমিট্যান্স যোদ্ধা হোক সে ‘বৈধ কিংবা অবৈধ’ সে যদি বাংলাদেশী হয়, তা হলে তার লাশ যেন সরকারি খরচে দ্রুত তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
সিফাত নুর, কুয়েত প্রবাসী
sksifathossain1@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement