০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


খালেদা জিয়া এখনো অসুস্থ্য

আ’লীগ সারাদেশে সহিংসতা চালাচ্ছে : রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী - ফাইল ছবি

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করার নির্ধারিত সময়ের এক সপ্তাহ পর গতকাল নিকটাত্মীয়রা দেখা করার অনুমতি পায়। তাদের বরাত দিয়ে তিনি জানান, এখনো বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ্য। সম্পূর্ণ চিকিৎসা শেষ না হতেই তাকে বিএসএমএমইউ থেকে কারাগারে নেয়া হয়েছে। তার প্রয়োজনীয় সুচিকিৎসা পাবার অধিকারটুকুও কেড়ে নিয়ে মানসিক নিপীড়ণের সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছেছে সরকার।

এছাড়া নির্বাচনের পর এখন সারাদেশে ব্যাপক নির্বাচনী সহিংসতা চালাচ্ছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। রাষ্ট্রের সব শক্তি প্রয়োগ করে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের দমন করে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের হত্যা, খুন, ধর্ষণ, হামলা থেকে শুরু করে এখন নেতা-কর্মীদের বাড়ি ঘরে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর করছে বলে অভিযোগ করেন রিজভী। আজ বুধবার সকালে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জামিন বারবার বাধাগ্রস্ত করছে সরকার। যে মিথ্যা মামলায় ইতোপূর্বে অনেকেই জামিন পেয়েছেন, অথচ সেই মামলাগুলোতেই আদালতকে ব্যবহার করে বেগম খালেদা জিয়ার জামিন বিলম্বিত করা হচ্ছে। কুমিল্লার মিথ্যা নাশকতার মামলায় বারবার তারিখ পিছিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। আদালতে ন্যায় বিচার পেলে কুমিল্লায় দায়ের করা মিথ্যা নাশকতা মামলায় বিচারিক আদালতেই বেগম জিয়া জামিন পেতেন। আদালত জামিনও দিচ্ছে না আবার জামিন নামঞ্জুরও করছে না। ফলে বেগম জিয়াকে উচ্চ আদালতে যাওয়ার পথও রুদ্ধ করে দেয়া হচ্ছে। সরকারের নির্দেশেই নিম্ন আদালত বেগম খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে টালবাহানা করা হচ্ছে বলে দেশবাসী মনে করে। শুধু বেগম খালেদা জিয়াকে হয়রানি করার জন্যই তা করা হচ্ছে। আওয়ামী সরকার জুলুমের যতো পথ-পদ্ধতি আছে সবই প্রয়োগ করছে বেগম জিয়ার ওপর।

তিনি বলেন, শাসকশক্তির পৃষ্ঠপোষকতার দ্বারা মহাভোট ডাকাতির নির্বাচনের পর এখন সারাদেশে ব্যাপক নির্বাচনী সহিংসতা চালাচ্ছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দেয়ার অপরাধে গ্রামের মানুষজনকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ত্ব নিশ্চিত করতে একতরফা নির্বাচনের জন্য প্রচার মাধ্যমগুলোকে সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে, যাতে সত্য ঘটনা প্রকাশ হতে না পারে। একদিকে হামলা-মামলা ও আটক করা অন্যদিকে নিজেদের প্রচারের আতিশয্য বজায় রেখে প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে বিষোদগার বেগবান করা হয়েছে।

রিজভী বলেন, দেশজুড়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের পুলিশি হয়রানি ও মামলা হামলার পর দুদককে দিয়ে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের বিরুদ্ধে আবারো মামলা দায়ের করেছে দুদক। গত দশ বছরে সরকারদলীয় নেতা-কর্মীরা লাখ লাখ কোটি টাকা লুট করে নিলেও, সমস্ত ব্যাংক লুট হয়ে গেলেও দুদক চোখ বন্ধ করে বসে আছে। আমি মির্জা আব্বাস ও আফরোজা আব্বাসের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।

রিজভী বলেন, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী রুহুল আমিন দুলালসহ ২২ জন নেতাকর্মী মিথ্যা মামলায় গতকাল পিরোজপুর কোর্টে হাজিরা দিতে গেলে তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া নির্বাচন পূর্বসময়ে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এলিজা জামান, পিরোজপুর জেলা বিএনপির দফতর সম্পাদক তোহিদুল করিম এবং নাজিরপুর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক লাহেল মাহমুদসহ শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণের ঘটনায় আমি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি এবং অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত বানোয়াট ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।


আরো সংবাদ



premium cement