ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ রাশিয়ার সাথে আরো বড় সংঘাতের ঝুঁকির মুখে পড়লেও সামরিক জোট ন্যাটো এখনো নতুন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত নয়। সামরিক জোটের মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ বলেন, সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, এক চতুর্থাংশেরও কম সদস্য দেশ প্রতিরক্ষা ব্যয়ের ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পেরেছে। অর্থাৎ ৩০টি সদস্য দেশের মধ্যে মাত্র সাতটি দেশ জিডিপির কমপক্ষে দুই শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করছে।
২০২২ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্রিস, যুক্তরাষ্ট্র, লিথুয়ানিয়া, পোল্যান্ড, ব্রিটেন, এস্তোনিয়া ও লাটভিয়া সেই তালিকায় রয়েছে। স্টলটেনবার্গ বলেন, ক্রোয়েশিয়া ও ফ্রান্স সম্ভবত অদূর ভবিষ্যতে সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে চলেছে। তা সত্ত্বেও সার্বিক চিত্র মোটেই স্বস্তিকর নয়। যেমন বেলজিয়াম, স্পেন ও লুক্সেমবার্গ জিডিপির ১.২ শতাংশেরও কম প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র ন্যাটোর সার্বিক শক্তির নিরিখে জিডিপির ৫৪ শতাংশ ব্যয় করছে।
২০১৪ সালে রাশিয়া ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপ এবং পূবের দনবাস অঞ্চলের অংশবিশেষ দখল করার পর থেকে ন্যাটো সদস্য দেশগুলো প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বাড়িয়ে চলেছে। কিন্তু গত বছর রাশিয়া গোটা ইউক্রেনের ওপর হামলা শুরু করার ফলে পরিস্থিতি আরো গুরুতর হয়ে উঠেছে। ন্যাটো প্রধানের মতে, এই অবস্থায় আরো দ্রুত আরো বেশি পদক্ষেপ নেয়ার প্রয়োজন। পৃথিবীর বিপজ্জনক এই অবস্থায় এ ছাড়া কোনো উপায় নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
আগামী জুলাইয়ে লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিউসে ন্যাটোর শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সেই সম্মেলনে ২০১৪ সালের তুলনায় আরো বড় লক্ষ্যমাত্রা স্থির করার প্রত্যাশা করছেন স্টলটেনবার্গ। তবে ২০২২ সালে তার আগের বছরের তুলনায় সার্বিকভাবে ২.২ শতাংশ ব্যয় বাড়ায় কিছুটা আশার আলো দেখছেন তিনি। বিশেয করে কানাডা ও ইউরোপ গত আট বছর ধরে সেই ব্যয় ধারাবাহিকভাবে বাড়িয়ে চলেছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস সংসদে তার ভাষণে প্রতিরক্ষা কাঠামো মজবুত করতে ১০ হাজার কোটি ইউরো এককালীন ব্যয়ের পাশাপাশি জিডিপির দুই শতাংশ বাৎসরিক ব্যয়ের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও জার্মানির ব্যয় এখনো দেড় শতাংশের সামান্য কম। ধাপে ধাপে সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবে বলে জার্মান সরকার আশা করছে। লিখিতভাবে সেই অঙ্গীকার পাকাপাকি করার উদ্যোগও চলছে।
নিজস্ব প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয়ের মাত্রা লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে না পারলেও ন্যাটোর বেশির ভাগ সদস্য দেশ ইউক্রেনের জন্য অস্ত্র, গোলাবারুদ ও সামরিক সরঞ্জামের ব্যবস্থা করেছে। সে দেশের প্রতিরক্ষা আরো মজবুত করতে বিপুল আর্থিক সহায়তাও করা হচ্ছে। সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন যৌথ উদ্যোগে ইউক্রেনের জন্য গোলাবারুদ কেনার উদ্যোগ শুরু করেছে। ন্যাটোর বাজেটের হিসেবে অবশ্য সেই ব্যয় বিবেচনা করা হয় না। হাঙ্গেরির আপত্তি সত্ত্বেও ন্যাটো ইউক্রেনের সাথে আরো সহযোগিতার লক্ষ্যে সংলাপ চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা